শিক্ষক সমিতির আন্দোলন: কুয়েটের অচলাবস্থা নিরসন নিয়ে অনিশ্চয়তা
Published: 4th, May 2025 GMT
এবার শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অচলাবস্থা নিরসন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ রবিবার (৪ মে) থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও তা হয়নি।
ছাত্র আন্দোলনে কতিপয় শিক্ষককে লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে শিক্ষক সমিতি। এ অবস্থায় কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, দীর্ঘ ৭৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় পিছিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সেশনজটেরও আশংকা করা হচ্ছে।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.
কুয়েট শিক্ষকরা জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সংঘর্ষে কুয়েটের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়। ওই দিন বিকেল থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অবরুদ্ধ করে রাখে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী। তারা বিদায়ী উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে মারধর, লাঞ্ছিত ও গালাগাল করে। পরবর্তীতে গত ২ মাসে আন্দোলন চলাকালে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের নিয়ে কটূক্তি করে। এ নিয়ে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন জানান, গত ১৮ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় অধ্যাপক ড. আবদুল্লা আল ফারুককে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিকে শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও তাদেরকে নিয়ে সাইবার বুলিংয়ের প্রতিটি ঘটনার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দোষীদের বিচারের জন্য তা প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তর ও ১৬টি বিভাগের প্রধানের দপ্তরে লিখিত চিঠি দিয়েছি। আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক কোনো আচরণে যেতে চাই না। আবারও শিক্ষকদের কাছে গিয়ে আমরা ক্ষমা চাইব।”
তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন ছিল কুয়েটের উপাচার্যের বিরুদ্ধে, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো আন্দোলন করিনি। ইতোমধ্যে দুই মাসেরও বেশি সময় ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। আমরা চাই দ্রুত ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।”
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে কুয়েটে অচলাবস্থা চলছে। এরপর শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের প্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। পরবর্তীতে গত ১ মে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই অচলাবস্থা নিরসনে নবনিযুক্ত উপাচার্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাট, থানায় অভিযোগ
সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক সেবনে ও মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় এক বসত বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ীরা।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার সময় নাসিক ১নং ওয়ার্ডের পাইনাদী পূর্ব পাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কামরুন নাহার শারমিন বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০/৩০ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, নাসিক ১নং ওয়ার্ডের সিআই খোলা এলাকার কালামের ছেলে মো. সাগর (২৩), মো. জাকির হোসেনের ছেলে কিশোর গ্যং লিডার মো. জিহাদ (২৪) ও বিশেষ পেশার পরিচয়দানকারী মো. শরীফ (২৩)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা গত শুক্রবার সকালে উক্ত বসত বাড়ির পিছনে মাদক সেবন ও ক্রয় বিক্রয় করতে ছিলো। উক্ত ঘটনা দেখে ভুক্তভোগীর স্বামী তাদের মাদক সেবন ও ক্রয় বিক্রয়ে বাধা প্রধান করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে ৩নং অভিযুক্ত বিশেষ পেশার পরিচয় দিলে ভুক্তভোগী বাসার মেইন গেট খুলে দেয়।
পরবর্তীতে অভিুক্তরাসহ অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জন কিশোর গ্যাং সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাসায় ঢুকে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে ঘরে থাকা নগদ ১ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এবং যাওয়ার সময় ভুক্তভোগীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্তরা।
পাশাপাশি এ ঘটনায় কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রধান করে চলে যায় তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাইনাদী পূর্বপাড়া, সি আই খোলা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সেল্ডার দাতা ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতো চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রতন।
মাদক মামলায় রতন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে আছে। পরবর্তীতে মাদক ব্যবসায়ী রতনের পাইনাদী পূর্বপাড়া, সি আই খোলা এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাবেক কাউন্সিলর ওমর ফারুকের এর ঘনিষ্ট সহচর আতাহার আলী এর নাতি সাগর, জিহাদ, শরিফসহ অজ্ঞাতরা মাদক ব্যবসা বীরদর্পে পরিচালনা করে আসছে।
এলাকাবাসী বলছে এক মাদক ব্যবসায়ী জেল হাজতে গেলেও, এখন দেখি নতুন করে সাগর সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা এবং কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে এলাকায়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। অভিযুক্তরা ঘটনার সাথে জড়িত তারা ওই বাসায় গিয়েছিলো। কিন্তু টাকা নেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তার প্রমান এখনো পাইনি। তদন্ত চলমান বলেও জানান তিনি।