যশোর শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষা, ফরম পূরণের সময় বৃদ্ধি
Published: 10th, May 2025 GMT
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোরের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষার ২০২৫ সালের পরীক্ষার্থীদের বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের সময় পুনর্বর্ধিত করে সময় বাড়ানো করা হয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যানের আদেশে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কার্যক্রমের সময় বাড়ানোর আদেশ জারি করেছেন।
দরকারি তথ্য—
১. বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের পুনর্বর্ধিত সময়: ১২ মে থেকে ১৮ মে ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত।
২.
৩. জেনে রাখুন: উল্লেখিত তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানগণকে পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ এবং ফি পরিশোধ সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ফরম পূরণের আর কোনো সময় বৃদ্ধি বা অনুমিত প্রদান করা হবে না।
* বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইটআরও পড়ুনকম খরচ এবং সহজে ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় বেছে নিতে পারেন এই ৫ দেশ০৮ মে ২০২৫আরও পড়ুনজাপানের স্টাডি সাপোর্ট স্কলারশিপ, ইংরেজি ও জাপানিজ দুই ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন০৮ মে ২০২৫
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্ব স্বাস্থ্যে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় আইসিডিডিআরবির ডা. তাহমিদ আহমেদ
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক খ্যাতনামা সাময়িকী ‘টাইম’ তাদের ২০২৫ সালের ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য খাতে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তি’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদকে।
মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং সীমিত সম্পদের অঞ্চলে স্বাস্থ্য সমস্যার দৃষ্টান্তনির্ভর সমাধানে তাঁর অগ্রণী অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে এই সম্মান দিয়েছে সাময়িকীটি। তাহমিদ আহমেদের নেতৃত্বে আইসিডিডিআরবি অত্যাধুনিক গবেষণা ও জীবন রক্ষাকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের লাখো মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিয়েছে এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা সম্পর্ক সুদৃঢ় করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার আইসিডিডিআরবির পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডা. তাহমিদ আহমেদের এই অর্জনের বিষয়টি জানানো হয়।
১৩ মে (মঙ্গলবার) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘টাইম ১০০ ইমপ্যাক্ট ডিনার: লিডারস শেপিং দ্য ফিউচার অব হেলথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মনোনীত অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগ দেবেন তাহমিদ আহমেদ। টাইমের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী, সেখানে তিনি একটি অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেবেন। এই বক্তব্য টাইমের সম্পাদকীয় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মেও প্রচারিত হবে।
এই অসামান্য স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘টাইমের ২০২৫ সালের স্বাস্থ্যে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় থাকা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এই অর্জন আমার একার নয়, এটি আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী, কর্মী, বৈশ্বিক অংশীদার ও আমাদের সেবা গ্রহণকারীদের সবার। টাইম আমাকে যে স্বীকৃতি ও গুরুত্ব দিয়েছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আশা করি, এ ধরনের স্বীকৃতি অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই এবং স্বাস্থ্য গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে সাহায্য করবে, যা যুদ্ধ-সংঘাত নয়, বরং ন্যায়, স্বাস্থ্য ও মানুষের মর্যাদার পক্ষে কাজ করবে।’
আইসিডিডিআরবির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাহমিদ আহমেদের এই স্বীকৃতি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্যও পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাংলাদেশে কাজ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার অনুপ্রেরণা।
এটি টাইমের ২৬ মে ২০২৫ সংখ্যাতেও প্রকাশিত হবে।
টাইমের প্রতিবেদনে ডা. তাহমিদ আহমেদের অবদান সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো:
ডা. তাহমিদ আহমেদ যখন তাঁর নিজ দেশ বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে রোগী দেখা শুরু করেন, তখন তিনি এক সমস্যার মুখোমুখি হতে থাকেন বারবার। সেই সমস্যার সমাধান তাঁর চিকিৎসা জ্ঞানে পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব ছিল না। ডা. তাহমিদ বলেন, ‘আমি ডায়রিয়া ও অপুষ্টিতে ভোগা রোগীদের চিকিৎসা করতাম। বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসা করা ছিল খুবই হতাশাজনক। শিশুদের মধ্যে কিছু মারা যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সর্বোত্তম প্রচেষ্টা ও সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খুব বেশি কিছু করার সুযোগ ছিল না।’
তাহমিদ আহমেদ এখন আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি যখন এখানে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন, তখন তিনি এই সমস্যার একটি সমাধান খুঁজতে মনস্থ করেন। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডা. জেফরি গর্ডনের সঙ্গে একটি সকালের নাশতার টেবিলে তাঁর দেখা হলে সেখানেই একটি সম্ভাব্য সমাধানের পথ উন্মোচিত হয়। গর্ডন তখন গবেষণা করছিলেন কীভাবে মানুষের অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়া স্থূলতা ও অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের ভিন্নতা তৈরি করে। তাঁরা ভাবতে শুরু করেন—এই অণুজীবগুলো কি অপুষ্টির নতুন চিকিৎসার চাবিকাঠি হতে পারে?
ঢাকার বস্তিতে গবেষণা করতে গিয়ে তাহমিদ ও তাঁর সহকর্মীরা একটি বিস্ময়কর বিভাজন খুঁজে পান: কিছু শিশু ছিল সুস্থ, আর কিছু শিশু অপুষ্টি, অস্বাভাবিক স্থূলতায় ভুগছিল। তাহমিদ দেখতে পান যে সুস্থ শিশুদের মধ্যে পার্থক্য গঠিত হয় তাদের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বা জীবাণু গঠনে। আর এসব জীবাণুকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে তাদের খাদ্যাভ্যাস। গর্ডনের সঙ্গে কাজ করে যেসব উপকারী জীবাণু যেগুলো সুস্থ শিশুদের সাহায্য করছিল, তাহমিদ সেগুলো চিহ্নিত করেন। তাহমিদ অনুসন্ধান করে দেখেন—এই জীবাণুগুলোর উৎস ছিল তাদের খাওয়া খাবার। এর মধ্যে আছে তেলাপিয়া মাছ, ছোলা, কাঁচকলা ও চিনাবাদাম।
তবে এই আবিষ্কার বাস্তব সমাধানে রূপ নেয় তখনই, যখন ডা. তাহমিদ একটি স্থানীয় খাদ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় একটি সহজে বিতরণযোগ্য খাদ্যপণ্য তৈরি করলেন। তাঁরা এই খাবারগুলোকে গুঁড়া করে প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্র পুষ্টি উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করেন, যাতে ব্যবহার করা হয় উদ্ভিজ্জ তেল। তাহমিদ এই খাবারের পরীক্ষা চালাচ্ছেন ছয়টি দেশে—বাংলাদেশ, ভারত, তানজানিয়া, মালি, পাকিস্তান ও নাইজারে। প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের যেসব শিশু এই খাবার খাচ্ছে, তারা ওজন ও উচ্চতায় উন্নতি করছে, যাদের সাধারণ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাদের তুলনায়।
বিস্তৃত গবেষণার ফলাফল ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতীয় সরকারগুলোকে এই খাদ্যপণ্য অনুমোদন ও ব্যাপকভাবে বিতরণে সহায়তা করবে। তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বিপুল। বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় তিন লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। এসব শিশু সুস্থ শিশুদের তুলনায় ৯ গুণ বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে আছে। আমাদের এদের জন্য কিছু করা জরুরি।’