আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতার পুনর্বাসন চায় না দেশের মানুষ: তারেক রহমান
Published: 10th, May 2025 GMT
গোপন বন্দিশালা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতার পুনর্বাসন দেশের মানুষ চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, যারা দেশে অবৈধ সংসদ ও সরকার গঠন করেছিল, যারা সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, কোনোভাবেই গুম, খুন, অপহরণ, দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচারকারী ও বর্বর বন্দিশালা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতা পতিত পলাতক পরাজিত অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না এই বাংলাদেশের মানুষ।
ফ্যাসিবাদী শাসনের দীর্ঘ দেড় দশকে বিভিন্ন সময়ে দেশে জঙ্গি নাটক কিংবা ধর্মীয়ভাবে যাদের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বলা হয়, তাদের ওপর সুপরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হতো বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচার হীন দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। গুম, খুন, অপহরণের ভয়ে অনেকে এ বিষয়ে মুখ খোলার সাহস পাননি।
বিএনপি রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যাসিবাদের দেড় দশকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে অপ্রীতিকর যেসব ঘটনা ঘটেছে, এর নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করতে সর্বদলীয় ও সর্বধর্মীয় নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পলাতক স্বৈরাচার কী কারণে বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে ঘিরে দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করত, তা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আগামী দিনে রাজনীতি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের গত দেড় দশকে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, রংপুর, গাইবান্ধা কিংবা সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর কিংবা ধর্মীয় উপাসনালয় ঘিরে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার নেপথ্যে কারা ছিল, তাদের কী উদ্দেশ্য ছিল, তা নিয়ে গণমাধ্যমে যদি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তাহলে আগামী দিনে আর কেউ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার সাহস করবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চলমান যাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফ্যাসিবাদী শাসনের দুষ্কর্মগুলো প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রচার করার পাশাপাশি এ নিয়ে জনপরিসরে আলোচনা রাখা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫ বছরে যা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে (২০২৪ সালের) যা হয়েছে, এসব ঘটনা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণের সামনে প্রতিনিয়ত আলোচনায় রাখা দরকার। ফ্যাসিবাদী শাসনের বর্বরতার চিত্র প্রতিনিয়ত স্মরণে রাখা গেলে তা একদিকে যেমন গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ সুগম করবে, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ বিরোধ বা বিভেদ উসকে দিতে সক্ষম হবে না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীলিপ কুমার বড়ুয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সমীরন দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব অন ষ ঠ ন র জন ত ক ব এনপ র ন বল ন কর ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে, তারা কারা
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আজ সোমবার গাজায় দুই বছর ধরে জিম্মি কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দী ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এ বন্দিবিনিময় হবে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে গাজায় থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ২০ জন বেঁচে আছেন। জেনে নেওয়া যাক, তাঁরা কারা।
নোভা সংগীত উৎসবের জিম্মিইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সেখানকার দক্ষিণাঞ্চলের কিবুৎজ রেইমের কাছে অনুষ্ঠিত নোভা সংগীত উৎসব থেকে অপহৃত হয়েছিলেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জন জিম্মিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন সেনাসদস্যও আছেন। অন্যরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় সময় বন্দী হয়েছিলেন।অপহৃত ব্যক্তিদের একজন ২৪ বছর বয়সী এভিয়াটার ডেভিড। গত আগস্টে প্রকাশিত হামাসের এক ভিডিওতে সবশেষ তাঁকে মাটি খুঁড়তে দেখা গিয়েছিল। ভিডিওতে তিনি বলেন, তিনি নিজের কবর খুঁড়ছেন। অপহৃত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও আছেন ২৪ বছর বয়সী পিয়ানোবাদক অ্যালন ওহেল এবং ৩২ বছর বয়সী অ্যাভিনাটান অর।
আভিন্যাটান অর ও তাঁর প্রেমিকা নোয়া আর্গামানির অপহরণের একটি ভিডিও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিওতে দেখা যায়, আর্গামানি কাঁদতে কাঁদতে অরের দিকে হাত বাড়িয়ে জীবন ভিক্ষা চাচ্ছেন। হামাস যোদ্ধারা দুজনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর্গামানিকে ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলি বাহিনী উদ্ধার করে।
কিবুত্জের জিম্মিগাজা সীমান্তের কাছে কিবুৎজিম থেকে সাত ইসরায়েলিকে তাঁদের বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। তাঁদের মধ্যে আছেন ২৮ বছর বয়সী যমজ গালি ও জিভ বারম্যান এবং এরিয়েল কুনিও (২৮) ও তাঁর ভাই ডেভিড কুনিও (৩৫)। ডেভিডের স্ত্রী শ্যারন ওি তাঁদের দুই মেয়েকেও অপহরণ করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময়ে শ্যারন ও দুই মেয়েকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সেনাজিম্মিদের মধ্যে দুজন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্য। তাঁরা হলেন ম্যাটান আংগ্রেস্ট (২২) ও নিমরড কোহেন (২০)। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর প্রাথমিক সংঘর্ষের সময় হামাস যোদ্ধাদের হাতে তাঁরা ধরা পড়েন।
আরও পড়ুনজিম্মিরা মুক্ত হওয়ামাত্রই গাজার সুড়ঙ্গগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগেবিদেশি জিম্মি৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ৪ জন বিদেশি। তাঁদের মধ্যে তানজানিয়ার এক ছাত্র এবং থাইল্যান্ডের দুই শ্রমিককে নিখোঁজ অবস্থায় মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আর নেপালের ছাত্র বিপিন যোশী এখনো নিখোঁজ।
মৃত জিম্মিরাইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জন জিম্মিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন সেনাসদস্যও আছেন। অন্যরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় সময় বন্দী হয়েছিলেন। সেদিন হামাস ২৫১ ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছিল।
আরও পড়ুনগাজা থেকে জিম্মিমুক্তি শুরু কখন, কীভাবে২২ ঘণ্টা আগেঅপহরণের সময়ই কিছু জিম্মি নিহত হয়েছিলেন। কয়েকজনকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে। কয়েকজন নিহত হন গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায়।
হামাস জানিয়েছে, লাশগুলো উদ্ধার করতে সময় লাগতে পারে। এ জন্য বিশেষ আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যারা মরদেহগুলো শনাক্ত ও উদ্ধারকাজে সহায়তা করবে।