গোপন বন্দিশালা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতার পুনর্বাসন দেশের মানুষ চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, যারা দেশে অবৈধ সংসদ ও সরকার গঠন করেছিল, যারা সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, কোনোভাবেই গুম, খুন, অপহরণ, দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচারকারী ও বর্বর বন্দিশালা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতা পতিত পলাতক পরাজিত অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না এই বাংলাদেশের মানুষ।

ফ্যাসিবাদী শাসনের দীর্ঘ দেড় দশকে বিভিন্ন সময়ে দেশে জঙ্গি নাটক কিংবা ধর্মীয়ভাবে যাদের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বলা হয়, তাদের ওপর সুপরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হতো বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচার হীন দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। গুম, খুন, অপহরণের ভয়ে অনেকে এ বিষয়ে মুখ খোলার সাহস পাননি।

বিএনপি রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যাসিবাদের দেড় দশকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে অপ্রীতিকর যেসব ঘটনা ঘটেছে, এর নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করতে সর্বদলীয় ও সর্বধর্মীয় নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পলাতক স্বৈরাচার কী কারণে বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে ঘিরে দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করত, তা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আগামী দিনে রাজনীতি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের গত দেড় দশকে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, রংপুর, গাইবান্ধা কিংবা সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর কিংবা ধর্মীয় উপাসনালয় ঘিরে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার নেপথ্যে কারা ছিল, তাদের কী উদ্দেশ্য ছিল, তা নিয়ে গণমাধ্যমে যদি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তাহলে আগামী দিনে আর কেউ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার সাহস করবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চলমান যাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফ্যাসিবাদী শাসনের দুষ্কর্মগুলো প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রচার করার পাশাপাশি এ নিয়ে জনপরিসরে আলোচনা রাখা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫ বছরে যা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে (২০২৪ সালের) যা হয়েছে, এসব ঘটনা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণের সামনে প্রতিনিয়ত আলোচনায় রাখা দরকার। ফ্যাসিবাদী শাসনের বর্বরতার চিত্র প্রতিনিয়ত স্মরণে রাখা গেলে তা একদিকে যেমন গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ সুগম করবে, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ বিরোধ বা বিভেদ উসকে দিতে সক্ষম হবে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীলিপ কুমার বড়ুয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সমীরন দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব অন ষ ঠ ন র জন ত ক ব এনপ র ন বল ন কর ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ধামরাইয়ে প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলে অপহরণ, আটক ৪

ঢাকার ধামরাইয়ে দুই ব্যক্তিকে প্রাইভেকারে যাত্রী হিসেবে তোলার পর অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয়। পরে ভুক্তভোগীদের চিৎকার শুনে চার অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন পথচারীরা।  

শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে ধামরাই উপজেলার চাওনা এলাকায় ওই চার অপহরণকারীকে আটক করা হয়। তারা হলেন—জয়নাল (৩৮), মোশারফ হোসেন (৪২), মেহেদী হাসান (২৭) এবং আব্দুল আজিজ (৩২)। 

অপরণের শিকার হয়েছিলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার কাশিয়াহাটা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৮) এবং একই এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে টুটুল মিয়া (৩০)।

পুলিশ জানিয়েছে, বগুড়ায় যাওয়ার জন্য শুক্রবার সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে আসেন রফিকুল ও টুটুল। তারা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করার সময় সেখানে একটি প্রাইভেটকার আসে। প্রাইভেটকারের চালক রফিকুল ও টুটুলকে জিজ্ঞাসা করেন, তারা কোথায় যাবেন? রফিকুল ও টুটুল গন্তব্য জানিয়ে ভাড়া ঠিক করে প্রাইভেটকারে ওঠেন। প্রাইভেটকারে চালকসহ চার জন ছিলেন। প্রাইভেটকারটি বগুড়ার উদ্দেশে রওনা হয়। জিরানী এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীবেশে থাকা তিন জন  রফিকুল ও টুটুলের হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলেন। পরে তাদের কাছে থাকা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন এবং স্বজনদের কাছে ফোন করে আরো মুক্তিপণ দাবি করেন। অপহরণকারীরা রফিকুল ও টুটুলকে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাতে থাকেন এবং একপর্যায়ে তাদের ধামরাইয়ের চাওনা এলাকায় নামিয়ে দেন। তখন রফিকুল ও টুটুলের চিৎকার শুনে পথচারীরা এসে প্রাইভেটকারসহ চার জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, চাওনায় চার অপহরণকারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন পথচারীরা। একটি প্রাইভেটাকারে যাত্রীবেশে থাকা তিন জন ও চালক দুই ব্যক্তিকে প্রাইভেকারে করে বগুড়ায় নেওয়ার কথা বলে অপহরণ করেছিল। অপহৃত দুই ব্যক্তিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার সময় চিৎকার করলে স্থানীয়রা অপহরণকারীদেরকে আটক করেন। তাদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ঢাকা/সাব্বির/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধামরাইয়ে প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলে অপহরণ, আটক ৪
  • ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি, ‘বিএনপির তিন কর্মী’ গ্রেপ্তার