ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট সূচিতেও। মে মাসে দুইটি আলাদা টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান যাওয়ার কথা ছিল লিটন দাসদের। তবে আপাতত নিশ্চিত হয়েছে কেবল আমিরাত সফর। পাকিস্তান সফর নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

সূচি অনুযায়ী, শারজাহতে ১৭ ও ১৯ মে আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই সিরিজটি রেখেছিল বিসিবি।

তবে পাকিস্তানে ২৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ফয়সালাবাদ ও লাহোরে নির্ধারিত পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ, সাম্প্রতিক নিরাপত্তা শঙ্কায় পিএসএলই স্থগিত হয়েছে। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ও পেসার নাহিদ রানাকে দ্রুত দেশে ফেরত আনতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পুরো দল পাঠানো হবে কিনা, তা নিয়ে বিসিবি সতর্ক অবস্থানে।

শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ জাতীয় দলের আসন্ন পাকিস্তান সফর নিয়ে পিসিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে। খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বর্তমান পরিস্থিতি সতর্কভাবে বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

তবে আমিরাত সিরিজ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিসিবি জানায়, 'নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ জাতীয় দল সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। সিরিজটি শুরু হবে আগামী সপ্তাহে।'

এদিকে আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যদি উত্তেজনা প্রশমিত হয়, তাহলে পাকিস্তান সফরও নির্ধারিত সময়েই হতে পারে। তবে নিরাপত্তা নিয়ে আগের চেয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে বিসিবি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ক স ত ন সফর আম র ত

এছাড়াও পড়ুন:

১৫ বছর বেতন তার ১৫০০ টাকা!

‘‘১৫ বছর আগে চাকরি শুরু করেছি। মাসিক বেতন ছিল ১৫০০ টাকা। এখনও সেই ১৫০০ টাকাই আছে। এই টাকায় সংসার চলে না। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে। টাকার অভাবে অসুস্থ ছেলের চিকিৎসা করাতে পারি না। নাতিপুতিরা স্কুলে পড়ে, তাদের অনেক কষ্ট, খাতা-কলম কিনে দিতে পারি না।’’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন সুফিয়া খাতুন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের ঝাড়ুদার পদে কাজ করছেন। 

সুফিয়া খাতুন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামের মৃত সুলতান আলী শেখের স্ত্রী। ৭ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। 

সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘‘২৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। আমার এক ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেটা অসুস্থ। কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। যা ছিল সব বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে ওষুধ কিনতেও পারি না। ডাক্তার বলেছে ১০ লাখ টাকা লাগবে।’’

সরকারের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে সুফিয়া খাতুন আরো বলেন, ‘‘১৫ বছর বেতন বাড়ছে না। বেতনটাও যদি বাড়ত ছেলে-নাতিপুতিদের নিয়ে খেয়েপরে বাঁচতে পারতাম। শুনি অনেকে ভাতা পায়, আমি তাও পাই না।’’

‘‘কত স্যারের কাছে কাগজপত্র নিয়ে গেলাম বেতনটা বাড়ানোর জন্য, কিন্তু স্যাররা তাকিয়েও দেখলো না, কিছু বলেও না। কত লোককে বললাম, আমার ছেলের কার্ড করে দাও। কেউ তাকিয়েও দেখে না,’’ বলেন এই অসহায় বৃদ্ধা।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃদ্ধা সুফিয়া খাতুন খুব কষ্ট করে জীবন কাটাচ্ছেন। অর্থের অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। 

প্রতিবেশী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুনের ছেলে সোহেল অনেক অসুস্থ। কাজ করতে পারে না। টাকার অভাবে তাদের অর্ধাহারে দিন কাটে। সরকার বা বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে তারা উপকৃত হবে। সাহায্য ছাড়া চিকিৎসা করানোর সমর্থা তাদের নেই।’’

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের কেয়ার টেকার সৈয়দা আশেকুন নাহার বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুন ১৫ বছর ধরে ঝাড়ুদার পদে চাকরি করছেন। বেতন পান ১৫০০ টাকা। এটা কীভাবে হয়? এই টাকায় আজকাল দুদিন চলাও সম্ভব নয়!’’
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুনের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখব। আগামী মাস থেকে তার বেতন বৃদ্ধি করা হবে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ