গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো সংস্কার নয়: খসরু
Published: 13th, May 2025 GMT
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আমরা কাউকে মালিকানা দেইনি, যারা আগামীর বাংলাদেশের সংস্কার করবে।সংস্কার হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনের মাধ্যমে। এর বাইরে সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই।”
মঙ্গলবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দাকোপ ও চালনা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত
টাঙ্গাইলে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ, উত্তেজনা
আমীর খসরু বলেন, “ফ্যাসিস্টের পলায়নের পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন আসছে, সেটা কী আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব? ধারণ করতে পারব? এই বিষয়টা আজকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের যদি বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হয়, তার বাহক হচ্ছে-একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। এটার কোনো দ্বিতীয় অল্টারনেটিভ নেই।”
তিনি বলেন, “এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে কাজগুলো শুরু করা দরকার, সে কাজগুলো শুরু হতেই দেখতে পারছি না। আমরা সেই কাজের আশেপাশে নাই কিন্তু। বিগত দিনে আমরা যেগুলো দেখে আসছি, মনে হচ্ছে সেগুলো একটা ভিন্ন রূপে আমাদের কাছে চালু হয়ে গেছে। এখানে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা ৩১ দফা সংস্কার দিয়েছি। এর আগে, বিএনপি ২৭ দফা সংস্কার দিয়েছে। তার সাত বছর আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ এর মাধ্যমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এখন যারা সংস্কারের কথা বলছে, এদের কারো চেহারা আমরা দেখি নাই। আর এদের অনেকে রাস্তায়ও ছিল না। এখন যারা বড় বড় কথা বলছে, এর বেশিরভাগ লোকের চেহারা আমরা দেখি নাই আন্দোলনের সময়। এদের মধ্যে কারো কারো চেহারা উঁকিঝুকি মেরেছে। যখন শেখ হাসিনার ক্ষমতার চাপ তাদের ওপর গেছে, তারা গর্তে ঢুকে গেছে আর বের হয় নাই। এখন তারা গর্তে থেকে বের হয়ে আমাদের সংস্কারের তালিম দিচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পরিস্কারভাবে বলেছি, যে সমস্ত সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য হবে, সেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুত। দেরি কেন? আমরা কেন জানতে পারছি না, কোথায় ঐকমত্য হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল প্রস্তাব দিয়ে বসে আছে। আমরা তো অপেক্ষা করছি, ঐকমত্য কোথায় হবে। তারাও বলছে, ঐকমত্য করতে হবে আমরাও বলছি ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে হবে। তাহলে কোথায় ঐকমত্যটা, কোথায় আমরা জানতে পারছি না কেন?”
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “কেউ যদি মনে করেন, ওই শেখ হাসিনার মালিকানা এখন অন্য কারো হাতে গেছে, তারা দেশের সিদ্ধান্ত নেবে, জনগণ কী চায়, না চায় তার কোনো তোয়াক্কা করবে না; সেই মালিকানা কাউকে দেয়া হয় নাই। বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। তারা সিদ্ধান্ত নিবে, আগামী দিনে কী সংস্কার হবে। সংসদে আলোচনা হবে, বাইরেও আলোচনা হবে।”
মানবিক করিডর নিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন,“এই যে একটা আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি, বাংলাদেশকে নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে-এটা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন না? মাননিক করিডোরের অর্থটা কি? এটা কার সাথে আলাপ হয়েছে? একটা অনির্বাচিত সরকার কথা বলে যাচ্ছে,তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদ তো জানেন না, সিভিল সোসাইটির কেউ জানে না। এটা কার অ্যাজেন্ডা? এর পেছনে কী? বাংলাদেশকে কি আমরা আবার একটা গাধায় পরিণত করতে চাই? আবার একটি যুদ্ধক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ঠেলে নিয়ে যেতে চাচ্ছি? কী স্বার্থে, কার স্বার্থে এই প্রশ্নগুলো তো সামনে চলে আসবে।”
আমীর খসরু বলেন, “শেখ হাসিনা বলত, আমি তো বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছি, আপাতত নির্বাচন না হলেও চলবে। মানবাধিকার কিছু না। তো এরকম কিছু কিছু কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি ইদানিং। এখানে অনেক কিছু হচ্ছে। আমি বলছি, কারো চেহারা দেখে এখানে কেউ বিনিয়োগ করবে না।বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরাও করবে না, বিদেশিরাও করবে না। নির্বাচিত সরকার ব্যতীত অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের যে আগামীদিনের অর্থনৈতিক ঘুরে দাঁড়ানোর যে বড় বিষয়টা আছে, সেটা সম্ভব হবে না।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার সংসদ ব্যতিত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হবে না। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয় নাই। আমরা অপেক্ষা করছি, নির্বাচনের পরে শুরু হবে।”
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মো.
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র ঐকমত য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কোনো শক্তি বা হুংকার দিয়ে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জনগণ যদি গণতন্ত্রের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, রাজনৈতিক সংস্কার কার্যকর হবে এবং লুণ্ঠিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরত আসবে।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন
বাগেরহাটে হরতাল প্রত্যাহার, নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে জেগে উঠলে কোনো শক্তিই নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠেকাতে পারবে না। গণতন্ত্র থাকলে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রাষ্ট্রের সম্পদ সুরক্ষিত থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন, হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান, সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এসএম রেজা বিপুল প্রমুখ।
নেতাকর্মীরা এ সময় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সংগঠনকে সক্রিয় করে জনগণের মাঝে বিএনপিকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানান।
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী