খুন-রহস্যে ঘেরা বাঁধন-পূজার ‘এশা মার্ডার’ আসছে ঈদে
Published: 15th, May 2025 GMT
২০০৯ সালে ঢাকার আজীমপুরে ঘটে যাওয়া একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা নিয়েই নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পোস্টার প্রকাশ করে জানানো হয়, আগামী ঈদ-উল-আজহায় মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
খুন রহস্যে ঘেরা একটি বিরল সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত সিনেমায় একজন পুলিশের তদন্ত অফিসার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।
সিনেমার অন্যতম প্রযোজক ও লিডস এন্টারটেইনমেন্টের কর্ণধার ফারুক রায়হান বলেন, “এবার ঈদের অসংখ্য সিনেমার ভিড়ে ভিন্ন ধাচের বিরল ঘটনাপূঞ্জী এবং চিত্রনাট্যের মজবুতির জন্য ‘এশা মার্ডার’ অনবদ্য একটি বাণিজ্যিক সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। গল্পের বুনন এবং নির্মাণ শৈলীর জন্য দর্শক সিনেমার শেষ দৃশ্য পর্যন্ত সাগ্রহে আটকে ধাকবে এটা আমার শুধু বিশ্বাসই নয়, প্রতিশ্রুতিও বটে।”
সিনেমাটির কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, ‘দেশের দর্শকরে মাঝে ক্রমাগতভাবে খুন রহস্য ও সাসপেন্স থ্রিলারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ সংখ্যাটি অন্য যেকোন ক্যাটাগরির সিনেমা থেকে কোন অংশে কম নয়। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা সিনেমাটি নির্মাণের প্রয়াস পেয়েছি। আমার বিশ্বাস ‘এশা মার্ডার’ সফল হলে দেশে এই ধাঁচের অগণিত সিনেমা নির্মিত হবে।’
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে নারী চরিত্রের এরকম অনবদ্য উপস্থাপনের পরিকল্পনায় মুগ্ধ হয়ে আমি সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হই। আমার ধারণা এবার ঈদে অসংখ্য সিনেমার ভিড়ে ‘এশা মার্ডার’ ভিন্নতা পাবে সানী ভাইয়ের গল্প বলার ধরণ এবং উপস্থাপন কৌশলের জন্য।’
সিনেমার নাম (এশা) ভূমিকায় অভিনয় করা পূজা এগনেস ক্রুজ বলেন, “এ রকম বাণিজ্যিক সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে (এশা ) অডিশনে টিকার পরপরই আমি পরিপূর্ণ ‘এশা’ হয়ে উঠার জন্য পরিচালক সানী সানোয়ার ভাইয়ে পরামর্শে প্রায় ৬মাস ব্যাপী নানা ধরণের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। আমি ছাড়াও এই সিনেমার অনেক শিল্পীকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এরকম সুসংগঠিত আয়োজন এবং কাহিনীর শৈল্পিক জার্নি সিনেমাটিকে বিশেষ উচ্চাতায় নিয়ে গেছে বলে আমার বিশ্বাস।”
আরও অভিনয় করেছেন, ফারুক আহমেদ, শরীফ সিরাজ, শতাব্দী ওয়াদুদ, সুষমা সরকার, নিবির আদনান, হাসনাত রিপন, সরকার রওনক রিপন, শিল্পী সরকার অপু, এ কে আজাদ সেতু, ইশিকা সাকিন, সৈয়দ এজাজ আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া বিশেষ একটি চরিত্রে দেখা যাবে মিশা শওদাগর ও সুমিত সেন গুপ্তকে।
কপ ক্রিয়েশনের প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে সহযোগী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত আছে বিঞ্জ এবং লিডস এন্টারটেইনমেন্ট।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নলছিটিতে এখনো টিকে আছে ‘এক রাতে তৈরি পরীর মসজিদ’
সময়ের কঠিন কষাঘাত সয়ে এখনো টিকে রয়েছে ঝালকাঠির নলছিটিতে ‘এক রাতে তৈরি পরীর মসজিদ’ খ্যাত একটি প্রাচীন মসজিদ।
তবে এর নির্মাণ শৈলি দেখে ধারণা করা হয় এটি আসলে মুঘল আমলে নির্মিত। নলছিটির মোল্লারহাট ইউনিয়নের হদুয়া সড়কের পাশে দক্ষিণ কামদেবপুর গ্রামে অবস্থিত মসজিদের বর্তমানে নাম দেওয়া হয়েছে ‘দক্ষিণ কামদেবপুর ব্যাপারী বাড়ী বায়তুল আমান জামে মসজিদ’।
এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের চারপাশে রয়েছে চারটি মিনার। ১২ ফুট লম্বা ও ১২ ফুট প্রশস্ত মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে চুন ও সুরকি। দেয়ালগুলো নির্মাণ করা হয়েছে খুবই মজবুত করে। প্রতিটি দেয়াল ২ থেকে ৩ ফুট প্রশস্ত।
এক সময় মসজিদের ভেতরের দেয়ালে ছিল বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য। তবে অপরিচর্যায় কারুকার্যগুলো এখন আর স্পষ্ট দেখা যায় না। গম্বুজসহ এর উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। উপরের পলেস্তারা খসে পড়লেও মসজিদের মূল দেয়ালগুলো এখনো অক্ষত আছে। ভিতরে একটি মিম্বর রয়েছে, আর দুই পাশে দুটি জানালা। আয়তন অনুযায়ী এখানে ৮ থেকে ১০ জন মুসল্লী একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রশিদ ব্যাপারী (৭০) ও লতিফ ব্যাপারী (৬০) বলেন, “বাড়ির সামনে অবস্থিত মসজিদটি আমরা ছোটবেলা থেকে ‘পরীর মসজিদ’ নামে চিনতাম। আমাদের বাবা-চাচাদের মতে একটি এক রাতে পরীরা নির্মাণ করেছেন। এরকম শুনে আসছি। তারাও এরকম শুনেই আমাদের বলেছেন। পরে মসজিদ বড় করার জন্য এর দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু এর পুরুত্ব আর মুসল্লীদের বাধার কারণে ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। তাই এর সাথেই নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।”
তারা আরো বলেন, “বর্তমানে নতুন স্থাপিত মসজিদেই নামাজ আদায় করা হয়। পুরনো ‘পরীর মসজিদ’টি যেভাবে ছিল সেভাবেই রাখা হয়েছে। তবে এখন ভিতরে ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। পলেস্তারাও খসে পড়েছে, উপরের দিকে অনেক পরগাছা জন্মেছে। আমাদের দাবি মসজিদটি যেনো সরকারীভাবে সংরক্ষণ করা হয়।”
মোল্লারহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান সেন্টু জানান, এই মসজিদটি অনেক পুরনো। কেউ এর নির্মাণ সাল জানে না। তবে ধারণা হয় মুঘল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল। আমরা একবার চেষ্টা করেছিলাম প্রত্নতত্ববিভাগের সাথে যোগাযোগ করে এটাকে সরকারীভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার কিন্তু আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। এই মসজিদটি শত শত বছরের পুরনো ইতিহাসের অংশ, আমাদের দাবি এটাকে যেনো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়।”
মসজিদের ইমাম কবির আহমেদ জানান, মসজিদটি বেশ কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সংস্কার করা হয়েছে। তবে আয়তন কম হওয়ায় সাথেই নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে বর্ধিত অংশে নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়। মসজিদের পুরনো অংশের ভবনটি স্মৃতি হিসেবে রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে স্থানীয়দের অনেক রকমের ধারণা প্রচলিত আছে। এখনো অনেক মানুষ এই মসজিদে বিভিন্ন ধরনের মানত করে থাকেন। এর নির্মাণ কারুকার্য দেখে ধারণা করা হয় এটি মুঘল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, পুরনো স্থাপনাগুলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। তাই এগুলো সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/অলোক/এস