রাবিতে শতভাগ আবাসনসহ রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল দাবি
Published: 18th, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত, রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
রবিবার (১৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর কেটে গেলেও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যাবস্থা। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
সাম্য হত্যা: শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ৯ দফার অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি হলো ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন। তার সঙ্গে আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিল, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির মূল উৎপাটন করা। আমরা মনে করি, কার্যকর রাকসু গঠনের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো সম্ভব। কিন্তু যারা এ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চান, তারাই এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এখনো তা বাস্তবায়ন হতে দেখিনি। তিনি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন, আমরা মনে করছি সেটা একটা হাটুভাঙ্গা নির্বাচন কমিশন। কারণ তারা কোনো খসড়া ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। অনতিবিলম্বে খসড়া ভোটার তালিকা দিতে হবে। যতদিন না দেওয়া হবে, ততদিন এ আন্দোলন চলবে।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, “রাকসু আমাদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ৯ দফার অন্যতম একটি দাবি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের যে তৎপরতা প্রথমদিকে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিটি গঠন করার পর থেকে তা ততটাই কমে গেছে। গত মাসে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করা কথা থাকলেও তারা একটি সভাও করতে পারেনি। এর চেয়ে অথর্ব কমিটি আর কী হতে পারে বলে মনে হয়?”
তিনি আরো বলেন, “কতদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন দিতে পারবে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি রোডম্যাপ দিতে হবে। যতদিন শতভাগ আবাসন শিক্ষার্থীদের না দিতে পারবে, ততদিন প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলনের শাস্তি ও অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
রবিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিদ্যালয় চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টার দিকে আন্দোনকারীরা কুমারখালী-পান্টি সড়ক অবরোধ করে চৌরঙ্গী বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এসময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে সরে যান।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে আসেননি প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা। মানববন্ধনে ক্লাস বাদ দিয়ে যোগ দেন বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরা। এরপর বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে চৌরঙ্গী বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। সপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন:
ইউআইইউ অধ্যাপকের টেলিকম ও আইসিটি অ্যাওয়ার্ড অর্জন
জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার বিচার দাবি
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানান, বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক মিলন। এর আগেও অনেকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন তিনি। কেউ সাহস করে মুখ খোলেনি। আমরা প্রধান শিক্ষকের শাস্তি চাই।
চৌরঙ্গী এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব আলী বলেন, “প্রধান শিক্ষক মিলনের বিরুদ্ধে আগেও অনেক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ আছে। কেউ প্রকাশ করার সাহস পায়নি। এবার যেহেতু প্রকাশ হয়েছে, সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।"
এলাকাবাসী জানান, গত ১২ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক উম্মত আলী উপবৃত্তি দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে রেখে আসেন। সেখানে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ১৫ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর মা।
ছাত্রীর চাচা বলেন, প্রধান শিক্ষক মিলন আমার ভাতিজির সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। বিচারের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের পর থেকেই ওই শিক্ষক হুমকি দিচ্ছেন। আমরা সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “উপবৃত্তির কথা বলে উম্মত স্যার ডেকে নিয়ে যায়। মিলন স্যার খারাপ কিছু করেন। ভয়ে স্কুলে যাচ্ছি না। আমি বিচার চাই।”
এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলনের মোবাইলে একাধিকবার কলা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়াছেল আলী বলেন, “শুনেছি প্রধান শিক্ষক এক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ কিছু করেছেন। যদি এমনটি হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে বিচার হওয়া উচিৎ।”
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) কমিটি তদন্তে যাবে।”
কুমারখালী থানার (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, “লিখিত অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ