আদালত থেকে পালালেন হত্যা মামলার আসামি
Published: 18th, May 2025 GMT
যশোরে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে জুয়েল খান নামের হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়েছেন। রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাকে হ্যান্ডকাপ পরানো ছিল কি না জানা যায়নি। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বলেন, ‘জুয়েলকে খোঁজা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘটনার সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এদিকে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাতসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। একই সঙ্গে পুলিশের একাধিক টিম জুয়েলকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, পলাতক আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। জেলার সকল থানা ও পাশ্ববর্তী জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়টা জানানো হয়েছে। এছাড়া যশোর যেহেতু সীমান্তবর্তী জেলা, ফলে সীমান্ত ব্যবহার করে যাতে পালিয়ে না যেতে পারে; সে বিষয়েও পুলিশ সর্তক রয়েছে।
তিনি জানান, আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা, সেই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাসারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পলাতক জুয়েল খান মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি ২০২১ সাল থেকে কারাগারে বন্দী। বাঘারপাড়ার বিচারাধীন হত্যা মামলায় যুক্তিতর্কে উপস্থাপনের ধার্য দিনে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ জানায়, মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইকচালক আল-আমিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি জুয়েল। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে আল-আমিনের ইজিবাইক ভাড়া করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে এনে তাঁকে হত্যা করেন এবং ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেন জুয়েল ও তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা হয়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল টিম জুয়েলসহ মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে এবং তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন। পরে তাদের বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকেই জুয়েল কারাগারে বন্দী ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক