চিকিৎসা বা ভ্রমণের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে ভারত ছিল বাংলাদেশিদের বড় গন্তব্য। বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে বড় ব্যবধানে শীর্ষে ছিল ভারত। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকটা পাল্টে গেছে সেই চিত্র। বিদেশে বাংলাদেশে ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে ভারত শুধু শীর্ষস্থানই হারায়নি, পাঁচ নম্বরে চলে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র উঠে এসেছে প্রথম স্থানে। নানা ইস্যুতে নানা টানাপোড়েনের মধ্যে ভারতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ব্যাপক কমায় এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সহজ গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতে যেতেন চিকিৎসা বা ভ্রমণের জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে ভিসা পাওয়া কঠিন হওয়ায় সামগ্রিকভাবেই ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে খরচ কমে গেছে। দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে আগে প্রতি মাসে বাংলাদেশিদের ৫০০ কোটি টাকা বা তার বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হতো। এখন তা কমে ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। আনুপাতিক হারে যুক্তরাষ্ট্রে খরচ প্রায় আগের মতোই আছে। ভারতে খরচ তলানিতে নামায় যুক্তরাষ্ট্রই এখন শীর্ষে রয়েছে। গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের বাইরে খরচে থাইল্যান্ড দ্বিতীয়, সিঙ্গাপুর তৃতীয় অবস্থানে ছিল। দেশ দুটি চিকিৎসার বিকল্প গন্তব্য হয়ে উঠেছে। মার্চে দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রেও বড় একটা পরিবর্তন এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে বাংলাদেশে ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিদেশে মোট ৩৬১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয় হয়েছে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। মোট খরচের যা ১৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত বছরের মার্চে দেশের বাইরে কার্ড থেকে মোট ৫০৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়েছিল। এর মধ্যে ৬৩ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ ব্যয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। গত মার্চে হঠাৎ করে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসা যুক্তরাজ্যে ব্যয় হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের মাসে দেশটির অবস্থান ছিল ৫ নম্বরে। গত বছরের মার্চে ক্রেডিট কার্ডে ব্যয়ে দেশটির অবস্থান ছিল সপ্তম। মার্চে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসা সৌদি আরবে ব্যয় হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের বছরের মার্চে দেশটির অবস্থান ছিল চতুর্থ। বর্তমানে চতুর্থ অবস্থানে থাকা সিঙ্গাপুরে ব্যয় হয়েছে ৩১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের বছরের একই মাসে দেশটির অবস্থান ছিল ষষ্ঠ।

ভারতে গত মার্চে ব্যয় হয়েছে ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের বছরের মার্চে দেশটিতে ১০৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। থাইল্যান্ডে এ বছরের মার্চে ২২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আগের বছরের একই মাসে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। 
দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটার বড় অংশই ব্যয় হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। মার্চের মোট লেনদেনের ২৭ শতাংশ হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। রিটেইল আউটলেট সেবায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। যাতায়াতে প্রায় ১১, ব্যবসায়িক সেবায় এবং ওষুধ ও ফার্মেসি পণ্যে ১০ শতাংশর মতো খরচ হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত য় অবস থ ন বছর র ম র চ খরচ হয় ছ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

এক লাখ ১০ হাজার টন সার আমদানিতে ব্যয় ৮৫০ কোটি টাকা

দেশের কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ১ লাখ ১০ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে সরকার। এ সংক্রান্ত তিনটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৫০ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। 

রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। 
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সভার অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪১ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মূল্য ৩৮৫.৫০ মার্কিন ডলার।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় চীন থেকে প্রথম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। 

বিএডিসি ও চীন এর মধ্যে ১০ জানুয়ারি সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম লটে ৪০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫৮ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে সপ্তম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক সৌদিআরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তারিখে চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদিআরব থেকে ৭ম লটে ৪০ হাজার (+১০%) মে. টন ডিএপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫১ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৭১৫ মার্কিন ডলার।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক লাখ ১০ হাজার টন সার আমদানিতে ব্যয় ৮৫০ কোটি টাকা