তিন দিন আন্দোলনের অচলাবস্থা শেষে দাবি আদায়ে আশ্বাস পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে এসেছে। আজ রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চলমান ক্লাস, সেমিস্টার ফাইনাল, মিডটার্মসহ প্রশাসনিক কাজ পূর্ণোদ্যমে পুনরায় চালু হয়েছে। বেশ কিছু বিভাগের পরীক্ষার তারিখ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পেছানো হলেও, তবে ক্লাস চালু ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর, প্রকৌশল দপ্তর এবং পরিবহন পুলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতিদিনের মতো কাজ করতে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় আইন অনুষদ, কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বাণিজ্য অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অফিসগুলোতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তিপ্রক্রিয়া ও একাডেমিক কাগজপত্র জমা দিতে দেখা যায়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের অফিসগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, শহীদ মিনার, অবকাশ ভবন, শান্ত চত্বর ও ক্যাফেটেরিয়ায় শিক্ষার্থীদের সমাগম ছিল। শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে ইনডোর গেমসে শিক্ষার্থীদের খেলতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দ্বিতীয় গেট, চারুকলা অনুষদের গেট ও পোগোজ স্কুলের মাঠে শিক্ষার্থীদের সমাগম ছিল।

আরও পড়ুনএবার ‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ কর্মসূচি ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের১৩ ঘণ্টা আগে

প্রতিদিনের মতো একই চিত্র দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্রাকার বাসে। বিকেলের পালায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্য ছেড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বাসে ভিড় দেখা যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাসগুলো নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে যায়।

গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ তিন দিনের তীব্র আন্দোলন শেষে ক্লাসে এসেছি। আমাদের আন্দোলন প্রায় সফল। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ক্লাসে ফিরে এসেছি, এটাই আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। আগের মতো নিয়মিত ক্লাস চলছে, বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাও নেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুনসাত কলেজের জন্য প্রশাসক, প্রধান দপ্তর হবে ঢাকা কলেজে১৩ ঘণ্টা আগে

প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২২ জুন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ভর্তির প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস আগামী ২২ জুন থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে ফিরে এসেছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পুনরায় পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, এটি আমাদের বড় অর্জন। শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে।’

উপাচার্য বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস আগামী ২২ জুন ২০২৫ তারিখ থেকে শুরু হবে।

আরও পড়ুনবিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ফেরত চাইলেন টিউশন ফি১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২২ জ ন আম দ র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে শিশু রিয়া গোপ হত্যা, এক বছর পর মামলা

গণঅভ্যুত্থানের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটি এলাকায় নিজ বসতবাড়ির ছাদে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় শিশু রিয়া গোপ। মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হলেও নাম উল্লেখ করে কাউকে আসামি করা হয়নি। নিহতের পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করেছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি নাসির আহমেদ।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই শহরের মন্ডলপাড়া থেকে ২ নং রেল গেট পর্যন্ত সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা মিছিল করছিল। বিকেল চারটায় আওয়ামী লীগের লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় মিছিলকারীদের ওপর গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে।। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।  সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে গুলশান হলের পেছনে ২৭, নয়ামাটি হোল্ডিংয়ের দীপক কুমারের পাঁচতলা বাড়ির ছাদে খেলাধুলা করার সময় রিয়া গোপ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তাকে প্রথমে শহরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে, ২৪ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

রিয়া গোপের পরিবার মামলা করবেন বলে জানালেও পরে আর মামলা দায়ের করেনি। নারায়ণগঞ্জ সদর থানার কর্মকর্তা ওসি নাসির আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারকে মামলা করতে বললে তারা জানান আত্মীয়স্বজনের সাথে আলাপ করে তারা মামলা করবেন। কিন্তু এরপরে তারা আর মামলা করেননি। তাই পুলিশ বাদী হয়ে এ ব্যাপারে মামলা করেছে। মামলার বাদী এসআই আবু রায়হান।

এদিকে মামলা দায়ের না করা প্রসঙ্গে রিয়ার মা বিউটি ঘোষ বলেন, মামলা করে কী হবে? কাদের নামে মামলা করবো? হত্যাকারী কে, আমরা জানি না। আমরা বিচার ছেড়ে দিয়েছি সৃষ্টিকর্তার উপর।

দীপক কুমার গোপ ও বিউটি ঘোষ দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল রিয়া গোপ। দীপক স্থানীয় একটি হোসিয়ারিতে কাজ করেন। ২০১৯ সালে এই দম্পতির সংসারে আলো হয়ে আসে রিয়া। ২০২৪ সালে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যালারি কায়ার আলোকপথ
  • ইসরায়েলি সেনারা তাঁর বাবা-ভাইকে মারল, পরিবারের জীবিত সদস্যদের উপহাস করল
  • গত অর্থবছরে রপ্তানি ৯% বেড়েছে
  • সোনারগাঁয়ে কৃষকদের ফলজ চারা ও সার বীজ বিতরণ
  • সাধারণ ছুটিসহ ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা
  • উচ্চ ঝুঁকিতে দেশের ১৫ জীবন বীমা কোম্পানি
  • গণঅভ্যুত্থানে শিশু রিয়া গোপ হত্যা, এক বছর পর মামলা
  • শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ইসলামিক ফাইন্যান্স
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আরো ১০ জনের নামে গেজেট
  • নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত কুবি