ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৭৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই ৭৬ জনের মধ্যে ৫০ জনই গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা ছিলেন। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮৫ জন।

শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও আনাদোলু এজেন্সি।

শুক্রবারের অভিযানের পর গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৮২২ জন এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। অন্যদিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।

কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত আড়াই মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদে আসছে নতুন টাকা, থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর

ঈদুল আজহাতে বাজারে আসছে নতুন টাকা। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নতুন টাকা ছাপানোও শুরু হয়েছে। নতুন টাকায় থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি। এমনটিই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

শনিবার সকালে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে দেশের প্রথম ক্রেডিট এনহ্যান্সমেন্ট স্কিম উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, ‘নতুন নোটে থাকবে দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা। ঈদে বাজারে প্রথমে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট আসবে।’

টাঁকশাল থেকে জানা গেছে, ২০ টাকার নোট ছাপা প্রায় সম্পন্ন। আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর পরে ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝিয়ে দেবে টাঁকশাল। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে এই টাকা কবে বাজারে আসবে।

টাঁকশাল জানিয়েছে, নতুন নকশার নোট ছাপাতে ১ থেকে দেড় বছর সময় লাগে। আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে নতুন নকশার নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয় এই সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় টাঁকশাল চলতি মাসে নতুন নকশার নোট ছাপানো শুরু করে।

টাঁকশাল আরও জানায়, একসঙ্গে ৩টি নোটের বেশি ছাপানোর সক্ষমতা নেই টাঁকশালের। তাই প্রথম ধাপে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে।

এদিকে গভর্নর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ায় তা ফেরত পাঠাতে চাপ তৈরি হয়েছে। পাচারকৃত অর্থ ফ্রিজ করায় অর্থ ফেরত আনার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে।’

গভর্নর বলেন, ‘স্কিমের আওতায় পিকেএসএফ অংশীদার এমএফআই গুলোকে ২৪০ কোটি টাকার রিজার্ভ তহবিল ভিত্তিতে ব্যাংক ঋণ গ্যারান্টি দেবে। ঋণের গ্যারান্টি অনুযায়ী এককালীন ০.৫ শতাংশ কমিশন আদায় করা হবে। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া সহজ হবে।’

সরকার ও এডিবির সহায়তায় এই পাইলট প্রোগ্রামে এদিন চুক্তিবদ্ধ হয়েছে পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক ও নন ব্যাংকিং ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিশন বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ