‘শাপলা গণহত্যা তদন্ত কমিশন’ গঠনসহ ৭ দাবি শাপলা স্মৃতি সংসদের
Published: 24th, May 2025 GMT
রাজধানীর শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে সংঘটিত ঘটনায় ‘শাপলা গণহত্যা তদন্ত কমিশন’ গঠনসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে শাপলা স্মৃতি সংসদ।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে শাপলা স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক এসব দাবি উত্থাপন করেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘শাপলা চত্বর: শাহাদাতের রক্তে রাঙা অবিনাশী চেতনা’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে শাপলা স্মৃতি সংসদ।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো শাপলা চত্বরের ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া, সরকারের পক্ষ থেকে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়া, শহীদ পরিবার ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের নিয়মিত ভাতা প্রদান; শাপলা গণহত্যার সত্য ইতিহাস জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা; জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলার গণহত্যাকে জাতীয় ট্র্যাজেডি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া; রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে যাচাইকৃত শহীদ তালিকা প্রস্তুত করে তা জাতীয় নথিতে অন্তর্ভুক্ত করা; মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনকারী এই গণহত্যায় দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা; হেফাজতে ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব হয়রানিমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা এবং আইনজ্ঞ ও নিরপেক্ষ নাগরিকদের সমন্বয়ে ‘শাপলা গণহত্যা তদন্ত কমিশন’ গঠন করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও সুপারিশমালা প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘শাপলাকেন্দ্রিক বিভিন্ন কাজে অংশীজনের সম্মাননা ও সম্মিলনী ২০২৫’–এর ঘোষণা দেন মামুনুল হক। আগামী ৩০ আগস্ট শাপলা গণহত্যা নিয়ে যাঁরা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন, তাঁদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে এই সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের সঙ্গে গণহত্যা, শেখ হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান
বিএনপির উদ্দেশ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়ার পাশাপাশি গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ চান, দেশের মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চান, জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা খুনি হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান।’
আজ শুক্রবার বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আজ বিএনপির সালাহউদ্দিন ভাই বলেছেন, ‘চলমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচনী রোডম্যাপ দেওয়া। এই মুহূর্তে বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। সেই হিসেবে তাদের কাছে আমাদের এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তাদের দায়বদ্ধতাও সবচেয়ে বেশি।’
তিনি বলেন, ‘সমাধানের একমাত্র পথ হিসেবে যখন নির্বাচনী রোডম্যাপের কথা বলা হয়; তখন জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করা সাধারণ জনগণ, শহিদ পরিবারের সদস্যরা, আহত যোদ্ধারা আশাহত হয়। কোটি মানুষ যে আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে ৫ আগস্টে জীবনের মায়া না করে রাজপথে নেমে এসেছিল; তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।’
সরজিস বলেন, ‘তাই, সালাহউদ্দিন ভাইসহ বিএনপির কাছে আহ্বান থাকবে, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়ার পাশাপাশি গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ চান, দেশের মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চান, জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা খুনি হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপির মত বড় দল সবকিছু বাদ দিয়ে খালি নির্বাচন নিয়ে কথা বললে; আমরা আশাহত হই, বাংলাদেশ আশাহত হয়।’
এদিকে আজ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ড. ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইলে সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে। আমরা (বিএনপি) কখনও তার পদত্যাগ দাবি করিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা না করে যদি তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান, সেটিও তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে একান্তই যদি তিনি দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তাহলে রাষ্ট্র তো বসে থাকবে না। রাষ্ট্র নিজ দায়িত্বে বিকল্প ব্যবস্থা নেবে। জনগণ বিকল্প বেছে নেবে।’
তিনি আরও বলেন, এই পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়। তবে আমরা আশা করি, তিনি একজন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝবেন। আমরা চাই, জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন। এ সময় নির্বাচন, করিডোর ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে স্বাগত জানান সালাহউদ্দিন।