তখন আমি খুব ছোট। বয়স কত আর হবে, বড়জোর তিন। কখনো কখনো এমন হতো—খোলা জানালা দিয়ে চুপিচুপি হামাগুড়ি দিয়ে ছাদে চলে যেতাম। শুধু তারা দেখব বলে। দেখা যেত, প্রতিবেশীরা কেউ না কেউ মা-বাবাকে ফোন করে বলত, ‘তোমাদের ছাদে একটা বাচ্চাকে দেখলাম মনে হলো!’

অনেক সময় গাছ বেয়ে উঠে যেতাম। সবই আমার কাছে রোমাঞ্চকর ছিল। জীবনকে, মানুষকে বুঝতে চাইতাম।

অভিনেতা হওয়ার সিদ্ধান্ত যখন নিই, তখন আমার বয়স চার বছর। ইচ্ছা ছিল সারা পৃথিবী ঘুরব। দুনিয়ার আনাচকানাচের মানুষ আর সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হব। জেট বিমানে চড়ব, প্যারাস্যুট নিয়ে বিমান থেকে লাফ দেব। আমার ধারণা, চার বছর বয়সে এ ধরনের স্বপ্ন সবাই–ই দেখে। কিন্তু আমি এসব সত্যিই মন থেকে চেয়েছিলাম। তাই নিজের লক্ষ্যগুলো লিখে রাখতাম। এমনকি মানুষকে বলতাম।

শুনে সবাই বলত, ‘বাচ্চা ছেলে, এসব কি কখনো হয়!’ তাই একসময় মানুষকে বলা বন্ধ করে দিলাম। কিন্তু মনে মনে ওই সব স্বপ্নই আমার নানা সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হতো।

শুরুর দিকে চলচ্চিত্রে একটা-দুটো সংলাপ পেতাম। একসময় দেখলাম, ‘তৃতীয়-মূল চরিত্রের’ (থার্ড লিড) প্রস্তাবও পাচ্ছি। সে সময় বিছানায় শুয়ে ভাবতাম, আমি তো কখনো ফিল্ম স্কুলে যাইনি। অভিনয়ের ক্লাস করিনি। যা কিছু শিখেছি, সবই সিনেমা দেখে, সিনেমার পর্যালোচনা করে।

আরও পড়ুন‘চেয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে দেখলাম এক বিস্ময়কর দৃশ্য’৩০ এপ্রিল ২০২৩

মনে আছে, সেটে গেলে মনে হতো এই সুযোগ তো জীবনে আর না-ও আসতে পারে। তাই একে একে ফিল্ম ক্রুদের প্রত্যেকের কাছে যেতাম, হাজারটা প্রশ্ন করে জ্বালিয়ে মারতাম। সিনেমাটোগ্রাফার ওয়েন রোয়েজম্যান, প্রযোজক স্ট্যানলি জেফ, পরিচালক হ্যারল্ড বেকার, কাউকে ছাড়িনি। এভাবে ঘুরঘুর করতে করতেই এক রোববার সকালে আবিষ্কার করলাম, (অভিনেতা) জর্জ সি স্কটের সঙ্গে বসে দাবা খেলছি।

এমন নয় যে স্রেফ তাঁদের আশপাশে থাকতে চেয়েছি। বরং সত্যিই আমার খুব শেখার আগ্রহ ছিল। ক্রমাগত প্রশ্ন করতাম। সিনেমা নিয়ে পড়তাম। অভিনেতা, সিনেমাটোগ্রাফার, পরিচালক, সবাইকে নিয়ে পড়তাম। আর যখন তাঁদের কারও সঙ্গে দেখা হতো, সিনেমা ধরে ধরে নানা কিছু জানতে চাইতাম।

চার বছর বয়সেই তিনি ঠিক করে ফেলেছিলেন, অভিনেতা হবেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাঁজা সেবনকালে বন্ধুদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা-মারধর, পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শুভকে হত্যা: পুলিশ 

নরসিংদীতে গাঁজা সেবনের সময় বন্ধুদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা, মারধরের একপর্যায়ে শুভ মিয়া নামে এক তরুণকে হত্যা করে তার বন্ধুরা। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার এস এম মোস্তাইন হোসেন। 

নিহত শুভ সদর উপজেলার শেখেরচর মোল্লাপাড়া এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শেখেরচর মোল্লাপাড়া এলাকার জাকির হেসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান, একই উপজেলার কুড়েরপাড় এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কবির হোসেন এবং পলাশ উপজেলার কুমারটেক এলাকার জালাল মিয়ার ছেলে আহম্মাদ নাঈম। তারা বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে মাদক সেবন করতো।

পুলিশ সুপার জানান, ৬ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার খিদিরপুর টেকপাড়া এলাকায় ব্রিজের পাশে নিহত শুভ, হাবিবুর, কবির, নাঈম ও তাদের অন্য এক বন্ধু গাঁজা সেবন করছিলেন। সেবনের একপর্যায়ে শুভর সঙ্গে হাবিবের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শুভকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন হাবিবুর। এ সময় কবির, নাঈম ও অন্য আরেক বন্ধুও শুভকে মারতে শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে পাশে পড়ে থাকা রশি দিয়ে শুভর গলায় পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ পাশের একটি ডোবায় ফেলে যায় চার বন্ধু। 

এ বিষয়ে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা হলে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকা থেকে হাবিবুর রহমান ও কবির হোসেনকে এবং বুধবার চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার নায়েরগাঁও এলাকা থেকে নাঈমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আসামিরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ