রাইজিংবিডি ডটকমে সংবাদ: ঢাবির সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ
Published: 25th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার (২৫ মে) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়াকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরো পড়ুন:
নদীভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন
শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে তিতুমীর কলেজে গণস্বাক্ষর
এর আগে, শনিবার (২৪ মে) ‘ঢাবির সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীদের দেখার কেউ নেই’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি ডটকম।
প্রতিবেদনে হলের ক্যান্টিনে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন, অপরিচ্ছন্ন ওয়াশরুম, দুর্বল ওয়াইফাই সেবা এবং তাতে ছাত্র নেতাদের চাঁদাবাজি, হলের ওয়াশরুম সংস্কারে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজারুল কবির শয়নের ব্যবহারের জন্য অবৈধভাবে একটি টয়লেট বরাদ্দ, প্রকল্প থেকে প্রাধ্যক্ষের আর্থিক লুটপাটসহ বিভিন্ন অসংগতির চিত্র উঠে আসে।
আরো পড়ুন: ঢাবির সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীদের দেখার কেউ নেই
গত ৫ আগস্টের পরই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন প্রাধ্যক্ষ। কিন্তু হলের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারী গোমর ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে পদে থাকার জন্য অনুরোধ করেন। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে একটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা হলের ওয়াইফাই সেবা প্রদানকারী কোম্পানি থেকে চাঁদাবাজি, দোকান বরাদ্দ থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। হলে একটি নিয়োগে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবির অভিযোগও উঠেছে ওই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি হলে পাঁচজন নতুন আবাসিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরাও রয়েছেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
ধামাকা শপিংয়ের কাছে পাওনা ৪০০ কোটি টাকা ফেরতের দাবি ভুক্তভোগীদের
ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকমের কাছে পাওনা ৪০০ কোটি টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পণ্য সরবরাহকারী ভুক্তভোগী বিক্রেতা ও গ্রাহকেরা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে বর্তমান সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘ধামাকা শপিং ডটকমের ভুক্তভোগী, প্রতারিত ব্যবসায়ী ও ভোক্তাগণ’ ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে শতাধিক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জাহিদুল ইসলাম সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, ধামাকা শপিং ডটকম শুরুতে ২০০ কোটি টাকার মূলধন নিয়ে ব্যবসা করার ঘোষণা দেয়। তাদের মাইক্রো ট্রেডসহ অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে বলে জানায়। এ কারণে বিশ্বাস করে তাদের পণ্য সরবরাহ করতে ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হন। পণ্য নিয়ে তাঁরা চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতেন। ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত লেনদেন ঠিক ছিল। পরে আরও কয়েক মাস পণ্য সরবরাহ করলেও তারা আর কোনো টাকা দেয়নি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আনুমানিক ৫০ জন উদ্যোক্তা ও ৩ হাজার ভোক্তা প্রতিষ্ঠানটির কাছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাওনা আছে। টাকা পরিশোধে বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীদের শতাধিক চেক দিলেও তা ডিজঅনার হয়। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। প্রতারণার মামলা করেছি, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আমরা সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
পাওনা টাকা না পেয়ে দুর্বিষহ দিন কাটানোর কথা জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা না পেয়ে আমরা অসহায় অবস্থায় আছি। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই বড় ব্যবসা বন্ধ করে ছোট আকারে কোনো রকম টিকে আছে। প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে হাজার হাজার তরুণ নিঃস্ব হয়ে গেছে। তরুণ থেকে বৃদ্ধ হয়ে গেছি, কিন্তু টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সঙ্গে আমাদের পাওনা টাকা ফেরত পেতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করছি।’
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, টাকা না পেয়ে ধামাকা শপিং ডটকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কয়েক শ মামলা হয়েছে। চার বছর ধরে এ মামলা চলছে। মামলা চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ধামাকা শপিংয়ের মালিকদের বাংলাদেশে যে সম্পদ আছে, তা দিয়ে অনায়াসে তাঁরা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারেন, কিন্তু তাঁরা সেটি করছেন না। এ কারণে সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, টাকা ফেরত দিতে না পেরে চেয়ারম্যান মো. মুজতবা আলী দাবি করছেন, তিনি ধামাকা শপিং ডটকমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। অথচ তিনি বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান পরিচয়ে বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে প্রধান অতিথি করে ই-কমার্স নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকে তিনি ধামাকা শপিং ডটকমের চেয়ারম্যান পরিচয়ে সভাপতিত্ব করেন। অথচ এখন তিনি ওই পরিচয় অস্বীকার করছেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ আদালত আমাদের ন্যায্য পাওনা ফেরত পেতে ধামাকা শপিং ডটকমের চেয়ারম্যান মো. মুজতবা আলীর বিষয়ে উপযুক্ত রায় গ্রহণ করবেন, সেই আবেদন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের পাওনা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম ডি জসীম উদ্দিন চিশতীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
পাইকারি বিক্রেতা মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমাদের অনেকগুলো চেক দেওয়া হয়, কিন্তু চেকগুলো কাজ করেনি। পরে ধাপে ধাপে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও পাঁচ বছর ধরে তা পাইনি। আমরা অসহায় হয়ে গেছি।’
গ্রাহক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধামাকা ই–কমার্সে আমি একটা বাইক অর্ডার দিয়েছিলাম। বাইক সরবরাহ করতে পারেনি। বিনিময়ে তারা একটা চেক দেয়। ওই চেকে টাকা তুলতে পারিনি। তারপর অনেক ঘোরাঘুরি করেছি। টাকা ফেরত পাইনি। হঠাৎ একদিন দেখি, তাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে।’
আরও পড়ুনধামাকা শপিংয়ের চেয়ারম্যানকে ভাটারা থানায় সোপর্দ০৫ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনধামাকা শপিংয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি২৬ জুন ২০২৫