অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রবিবার (২৫ মে) ১০টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ বার্তা দেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান বৈঠকে উপস্থিত থাকা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা কোনোভাবেই তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চান না এবং তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আর বাড়াতে চান না। এপ্রিলের পর নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন।”

আরো পড়ুন:

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি এতদিন যা করেছি তা সবই ব্যর্থ হয়ে যাবে; যদি না সবাই আমার সঙ্গে একমত হন-এরকম ধারণা প্রধান উপদেষ্টার ছিল। তখন আমরা তাকে বুঝিয়েছি যে, আপনার বেশি করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করতে হবে, কথা বলতে হবে, মতবিনিময় করতে হবে। আপনি কেমন করে নির্বাচন করতে চান তা সবার সঙ্গে শেয়ার করবেন।”

তিনি বলেন, “আপনার সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে কোনটা সংস্কার করলেই না হয়, সে ক্ষেত্রে যদি সময়ক্ষেপণ হয় নির্বাচন বিলম্ব হবে।”

তবে নির্বাচন এপ্রিলের পর কোনোভাবেই আর গড়াবে না বলে উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন বলেও জানান মাহমুদুর রহমান মান্না।

সংস্কার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে মান্না বলেন, “আমরা সংস্কারের বিষয়ে কিছু বলছি না, আমরা শুধু চাই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।”

মান্না বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের ধ্বংস করে দিতে চায়। এজন্য পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু এই ঐক্য দিন দিন দুর্বল হচ্ছে, এ জন্য তিনি কিছুটা হতাশ। এই অবস্থায় আমরা সবাই এক থাকব বলে জানিয়েছি। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে, কিন্তু প্রধান জাতীয় ইস্যুতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। তিনি মোটামুটিভাবে আশ্বস্ত হয়েছেন।”

মান্না আরো বলেন, “তার পদত্যাগ নিয়ে কী হয়েছিল, তা আমাদের জানান। আমরা বলেছি, পুরো জাতি আপনার পদত্যাগ চায় না।”

মান্না বলেন, “নির্বাচনটা কবে হবে এবং কীভাবে হবে তা আমরা জানতে চেয়েছি। উনি স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি কম সংস্কার হয় তবে ডিসেম্বর, আর যদি বেশি সংস্কার হয়, তবে জুনে নির্বাচন। জুনের পর কোনোভাবে এটা গড়াবে না। আমি তাদের লিখে দিতে চাই, আমি কোনোভাবেই ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চাই না। অন্তর্বর্তী সরকার এর বেশি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায় না।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র জন ত ক আম দ র রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কাল নাগিনীর হাড়ে ফাঁটল, অবশেষে এক্সরে!

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আঘাতপ্রাপ্ত একটি মৃদু বিষধর কাল নাগিনী সাপ উদ্ধারের পর তার এক্সরে করেছে এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর সদস্যরা। 

বুধবার (৯ জুলাই) রাত নয়টায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সাপটিকে নেওয়া হয়। পরে এক্সরে করে জানা যায় সাপটির মাঝ বরাবরের হাড়ে ফাঁটল ধরেছে। 

এর আগে সকালে পার্শ্ববর্তী আমতলী উপজেলার পূজাখোলা দফাদার বাড়ি সংলগ্ন থেকে সাপটিকে লাঠি দিয়ে পেটানো অবস্থায় গ্রামবাসীদের হাত থেকে রক্ষা করে এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর সদস্য মো. বায়জিদ দফাদার। পরে তিনি সাপটিকে চিকিৎসার জন্য এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়ার শাখার টিম লিডার বায়জিদ আহসানের কাছে তুলে দেন। সবুজ এবং লাল ও কালো রঙের ডোরাকাটা প্রাপ্ত বয়স্ক এ সাপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ ফুট।

সাপ উদ্ধারকারী মো. বায়জিদ মিয়া বলেন, “দফাদার বাড়ি এলাকার একটি আম গাছ থেকে সাপটি নিচে নামার পর স্থানীয় গ্রামাবাসীরা পিটিয়ে মারার চেষ্টা করে। সাপটিকে লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করা হয়। এসময় আহত অবস্থায় সাপটিকে উদ্ধার করে আমাদের টিম লিডার বায়জিদ আহসানের কাছে হস্তান্তর করি। আমাদের এলাকার মানুষের সাপ সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। যার কারনে সাপ দেখলেই তারা মেরে ফেলে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী সাপ সম্পর্কে এ এলাকার মানুষের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো দরকার।”

এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার বায়জিদ আহসান বলেন, “কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদিক মহোদয়ের সহায়তায় আহত সাপটিকে ভেটেরিনারিসার্জনের পরামর্শ অনুযায়ী এক্সরে করা হয়েছে। এটির মাঝ বরাবর হাড়ে ফাঁটল ধরা পড়েছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাপটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ভেটেরিনারি সার্জনের কাছে পাঠাবো।

কলাপাড়া ল্যাব এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক্সরে টেকনিশিয়ান মো. সাঈদ হোসেন বলেন, “মূলত আমরা মানুষের এক্সরে করে থাকি। এই প্রথম বিরল একটি এক্সরে করলাম। এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর সদস্যরা বন্যপ্রাণি নিয়ে কাজ করে। এটা আমি আগে থেকেই জানি। তাদের এ কাজকে সাধুবাদ জানাই। আশা করছি সাপটি সুস্থ হয়ে উঠবে।”

কলাপাড়া উপজেলা সহাকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসীন সাদিক বলেন, “আহত সাপটির খবর পেয়ে সেটিকে চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে। এটিকে পরিপূর্ণ সুস্থ করে তুলতে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ