অধ্যাপক ইউনূসের ৫ মামলা বাতিলের রায়ে আইনি দুর্বলতা পাননি আপিল বিভাগ
Published: 11th, January 2025 GMT
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নামে শ্রম আইনে করা পাঁচ মামলার কার্যক্রম বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ আদেশ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
মামলার ঘটনা ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, হাইকোর্টের রায় ও আদেশে কোনো আইনি দুর্বলতা এবং আইনিভাবে হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে অনুসারে মেরিট (যোগ্যতা) বর্জিত হিসেবে লিভ টু আপিলগুলো খারিজ করা হলো।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলগুলো খারিজ করে আপিল বিভাগ গত ৮ ডিসেম্বর আদেশ দেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর ভাষ্যমতে, অধ্যাপক ইউনূসের নামে যখন শ্রম আদালতে পৃথক পাঁচটি মামলা হয়, তখন তিনি গ্রামীণ টেলিকমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়ন ঘিরে কর্মীর চাকরিচ্যুতির অভিযোগ তুলে ২০১৯ সালে মামলাগুলো করা হয়। মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন অধ্যাপক ইউনূস।
মামলার কার্যক্রম বাতিলের পক্ষে আবেদনকারীপক্ষের যুক্তি ছিল, প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়নের আবেদনপত্র ইতিমধ্যে শ্রম অধিদপ্তর থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। সুতরাং এ কথা বলার কোনো অবকাশ নেই যে প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার কারণে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়। তাঁদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ছিল, চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে শ্রম অধিদপ্তরকে মামলা করতে হয়। তাঁরা শ্রম অধিদপ্তরের কাছে নালিশ করেছিলেন বটে। কিন্তু শ্রম অধিদপ্তর এ ধরনের কোনো মামলা করেনি।
মামলা বাতিল চেয়ে করা পৃথক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিভিন্ন সময়ে রুলসহ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন। ফলে মামলাগুলোর কার্যক্রম বাতিল ঘোষিত হয়। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক পাঁচটি লিভ টু আপিল করে। শুনানি নিয়ে লিভ টু আপিলগুলো খারিজ করে গত ৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং অধ্যাপক ইউনূসের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান শুনানিতে ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান আজ প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশিত হয়েছে। ফলে অধ্যাপক ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমিউনিকেশনের তৎকালীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো থাকল না।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদেশ ১৪ ডিসেম্বর
গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও ১২ জন সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বর আদেশ দেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বাদী-বিবাদী, উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ওই দিন ধার্য করেছে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ওই মামলায় শেখ হাসিনা এবং সাবেক-বর্তমান মিলিয়ে ১২ জন সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে ৫টি বিষয়ে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে, অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতি চেয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। খবর বিবিসির।
মামলার ১৩ আসামির মধ্যে তিন সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে গ্রেপ্তার রয়েছেন। তারা হলেন-ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো. সারওয়ার হোসেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী।
ঢাকা/এসবি