শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি, টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল, ট্রাক সেল বন্ধের সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করবে। তাই সরকারের এসব জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সিপিবির নেতারা এই দাবি জানিয়েছেন। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধ, ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড বাতিল ও শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির নামে জনগণের পকেট থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারীর পথে হাঁটছে, এটা দেশবাসী দেখতে চায় না। এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ জনগণের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। গ্যাসের দামসহ অনেক পণ্যের ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যাহত হবে, বিনিয়োগ কমবে, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বাড়বে।’

বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে মন্তব্য করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘জরুরিভাবে টাকার প্রয়োজন হলে বড়লোকদের ওপর কেন প্রত্যক্ষ কর বসানো হচ্ছে না? যাঁরা কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকে কর আদায়ে কেন বিশেষ ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না? কেন পাচারের টাকা ও খেলাপি ঋণ উদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা দেশবাসী দেখছে না?’

সিপিবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের অনেক উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব বলছেন, এই ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে জনগণের ওপরে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘এ কথা বলার মধ্য দিয়ে তাঁরা সাধারণ জনগণের সঙ্গে রসিকতা করছেন। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙার দিকে নজর দেয় নাই। সাধারণ মানুষ মনে করছে তাদের সঙ্গে আপস করেই সরকার তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের মেহনতি শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুরদের দিকে নজর দিন। তাদের স্বার্থে ভূমিকা নিন। অন্যথায় জনগণ আপনাদের বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’

সমাবেশ থেকে সিপিবির নেতারা অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছেন।

সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহিন রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক লুনা নূর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার প্রমুখ। নেতারা ২১ থেকে ২৭ জানুয়ারি সিপিবির আহ্বানে সারা দেশে গণতন্ত্র অভিযাত্রা কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি-এনসিপি নিয়ে একতরফা নির্বাচন হলে কেউ ভোট দিতে যাবে না: কাদ

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, বাংলাদেশের সব দল নির্বাচনে এলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও অংশ নেবে। কিন্তু, যদি বিএনপি ও এনসিপিকে নিয়ে একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে কেউ ভোট দিতে যাবে না। 

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা হানাদারমুক্ত দিবসে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল

‘নির্বাচন সহজ হবে না, পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে’

আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন বঙ্গবন্ধুকে লালন করব। যতদিন বেঁচে আছি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’র আদর্শই ধারণ করে চলব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। জিয়াউর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু, আমরা ভুল করে জামায়াত-শিবিরকে সুযোগ দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ক্ষমা না করলে তারা টিকতেই পারত না।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে নেই, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ নেই, বঙ্গবীরও নেই। শেখ হাসিনাকে আমি মায়ের মতো দেখি। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়। আর ড. ইউনূস মনে করেন, আওয়ামী লীগকে বিচার করবেন, এটা সম্ভব নয়। যদি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার হয়, তাহলে এখন কী হচ্ছে?

এই খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সরকার যদি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তখন জনগণ চাইলে দলের বাইরে থেকেও প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবব। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, এই নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার যে ভাটি খেয়েছে, আপনাদেরও সেই ধাক্কা খেতে হতে পারে। ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় অনেকেই দেয় । যারা জনগণের পথ দেখাবেন, তারা কোথায়? জনগণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭১ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আজ জুলাই যোদ্ধারা কথা বলতে পারেন। দ্বিমতের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, এমন পরিবেশ ফেরাতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন বাঙ্গাল, ফজলুল হক বীর প্রতীক, কুড়ি সিদ্দিকীসহ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম আলোর জরিপ: সংখ্যার ভেতর চমক ও শঙ্কা
  • জনগণ যখন সংকটে, তখন কোন জুজুতে প্রতিরক্ষায় ব্যয় বাড়াচ্ছে জাপান
  • নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রথম রাজনৈতিক সাক্ষাৎকার
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এটিএম কামালের দোয়া মাহফিলে মাসুদুজ্জামান   
  • ভোটের মাঠে জোটের ভিড়ে জনপ্রত্যাশা কোথায় গেল 
  • পার্বত্য ৩ আসনে প্রার্থী না দিতে জাতীয় দলগুলোর প্রতি আহ্বান ইউপিড
  • ‘আমরা ভোটের পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করছি’
  • শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান ইসলামী ফ্রন্টের
  • তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
  • বিএনপি-এনসিপি নিয়ে একতরফা নির্বাচন হলে কেউ ভোট দিতে যাবে না: কাদ