ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সময়টা কেমন এলোমেলো যাচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটির। ঠিক যেন এক পা এগিয়ে দুই পা পিছু হটা। এক ম্যাচ জিতলে পরের কয়েক ম্যাচে পয়েন্ট হারানো।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি, ২০২৫) দিবাগত রাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-২ ব্যবধানে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে ম্যানসিটি। এই ড্রয়ে ২১ ম্যাচ থেকে তাদের পয়েন্ট হয়েছে ৩৫। টেবিলে তারা আছে ষষ্ঠ স্থানে। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ১২! অন্যদিকে ব্রেন্টফোর্ড এই ড্রয়ে ২১ ম্যাচ থেকে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের দশম স্থানে।
এদিন প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কেউ। বিরতির পর ১২ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোলে এগিয়ে যায় সিটি। ৬৬ মিনিটের মাথায় কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো ক্রসে বল পেয়ে বাম পায়ের শটে জালে জড়ান ফিল ফোডেন। ৭৮ মিনিটের মাথায় জোড়া গোল পূর্ণ করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার ফোডেন।
আরো পড়ুন:
এভারটনের বিপক্ষেও জয় পেলো না ম্যানসিটি
৭ বছর ১৩ হারানো এভারটনকেও এখন ভয় পায় ম্যানসিটি!
তবে শেষ দশ মিনিটে দুই গোল হজম করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ৮২ মিনিটে ব্রেন্টফোর্ডের মাডস রোয়ের্সলেভের বাড়ানো বল পেয়ে বাম পায়ের শটে খুব কাছ থেকে গোল করেন ইয়োনি উইসা। আর যোগ করা সময়ে (৯০+২) লিউইস-পটারের বাড়ানো ক্রসে হেড দিয়ে বল জালে জড়িয়ে ম্যানসিটির সমর্থকদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে ফেলেন ক্রিস্টিয়ান নরগার্ড।
ম্যাচ শেষ হতেই পেপ গার্দিওলাকে বেশ বিরক্ত হতে দেখা গিয়েছিল। তিনি গোলরক্ষকের সঙ্গে কোলাকুলি করার সময় কিছুটা বকেও দিয়েছিলেন।
ম্যাচ শেষে ফোডেন বলেছেন, ‘‘শেষের ২০ মিনিট আমাদের খুব ক্লান্ত মনে হয়েছিল। আমাদের বেশ ধীরগতির মনে হচ্ছিল। বক্সের মধ্যে তারা লম্বা পাসে খেলছিল। শেষ দিকে তাদের সঙ্গে শারীরিকভাবেও আমরা পেরে উঠছিলাম না।’’
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ব যবধ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের মুখে জামাতার ভাষা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বপ্ন গাজা উপত্যকা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়া এবং সেটাকে সমুদ্রতীরের আন্তর্জাতিক রিসোর্টে রূপান্তর করা। এর নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা তাঁরই জামাতা জেরেড কুশনারের একটি মন্তব্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এক বছর আগে কুশনার বলেছিলেন, গাজার সমুদ্রমুখী এলাকা অত্যন্ত মূল্যবান। সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে সুদৃশ্য স্থাপনা নির্মাণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন এ রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। সেই সঙ্গে তিনি গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ পরিকল্পনার সমালোচনায় নামে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোই। ফিলিস্তিনের মানুষ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা গাজায়ই বাঁচতে ও মরতে চান। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটা জাতিগত নিধনের শামিল ও আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
এর আগেও ট্রাম্প গাজা নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যথাযথভাবে গড়ে তুললে গাজা ধনকুবেরদের শহর মোনাকোর চেয়েও ভালো কিছু হতে পারে। ২০২৩ সালে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে একে একে এসব পরিকল্পনা সামনে আসতে থাকে। শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা কুশনারকে এসব বলতে শোনা যায়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি মার্কিন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত ছিলেন। তারই দূতিয়ালিতে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে আব্রাহাম চুক্তি সই হয়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হার্বার্ডের একটি অনুষ্ঠানে কুশনার বলেছিলেন, গাজার উপকূলীয় সম্পত্তি অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যদি সেখানে জীবিকা নির্মাণের দিকে মনোনিবেশ করা হয়। আরব-ইসরায়েল সংঘাত প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের দ্বন্দ্ব রিয়েল এস্টেট বিরোধ ছাড়া আর কিছু নয়। সেখানের পরিস্থিতি কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক। ইসরায়েলের দৃষ্টিকোণ থেকে বলব, আমি হলে লোকজনকে সেখান (গাজা) থেকে বের করে দিতাম এবং তার পর জায়গাটি পরিষ্কার করতাম।’
সম্প্রতি ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দিতে চাচ্ছেন এবং সেখানের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানাতে চাচ্ছেন। ট্রাম্পের মতো কুশনারও একজন প্রপার্টি ডেভেলপার। বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা তাদের দৃষ্টিতে গাজার পরিস্থিতি দেখছেন। তারা সম্পত্তি দেখছেন, সেখানকার ২২ লাখ মানুষ দেখছেন না।
গাজার বাসিন্দারা ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর চীন বলেছে, গাজার মালিক গাজার মানুষ। এটা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিবিসির বিশ্লেষণ
গাজা থেকে বাসিন্দাদের অন্য দেশে পাঠিয়ে এর দখল ও মালিকানা নেওয়ার ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন হওয়ার নয়। এটা করতে হলে আরব দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন, যা মিলবে না। এরই মধ্যে জর্ডান, মিসর, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলোও। তবে এর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব থাকবে। কট্টরপন্থি ইহুদিদের পরিকল্পনায় ট্রাম্পের এ প্রস্তাব হাওয়া দেবে।
ইউএনএইচআরসি ছাড়ল ইসরায়েল
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ছেড়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ করেছে মানবাধিকার কাউন্সিল, যা ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আনা মোট অভিযোগের চেয়েও বেশি। এ ধরনের বৈষম্য ইসরায়েল মেনে নেবে না।