পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের বেসিক ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা জরুরি: উপদেষ্টা
Published: 7th, February 2025 GMT
পার্বত্য বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, “আমি চাই পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কোয়ালিটি এডুকেশন ও লাইভলিহুড ডেভলপমেন্ট। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের বেসিক ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা জরুরি”।
শুক্রবার রাঙামাটি সদরের বালুখালি ইউনিয়নের জারুলছড়ি পাড়ার রাঙ্গা বেইজ ক্যাম্পে ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিল এলামনাই এসোসিয়েশন ২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, “আগে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক, চ্যারিটির বিষয়গুলো বাড়ি থেকেই শিখতে হয়। এর ফল আমরা দেখতে পাই ৩৬ জুলাই আন্দোলনে। সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই হলো আমাদের চিন্তা, চেতনা ও স্বপ্ন। আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। আমাদের পাইওনিয়ার হতে হবে।”
এলামনাই প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫ বছর আগে পড়াশুনা করেছি এই পরিচয়েই রাঙামাটির এলামনাই অনুষ্ঠানে এসেছি। ঢাবির অনেকেই এখানে এসেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন।”
উপদেষ্টা বলেন, “৩৬ জুলাই আন্দোলনে ঢাকা ইউনিভার্সিটির অনেক ছাত্র-ছাত্রী নিহত ও আহত হয়েছে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিল এলামনাই এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার জন্য অর্থ যোগানোয় উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ”।
এ সময় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা কালজয়ী নামে বিশেষ স্মরণিকার ফলক উন্মোচন করেন। পরে উপদেষ্টা ও অতিথিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার), রাজা দেবাশীষ রায়, চাকমা চিফ, উপদেষ্টামণ্ডলী কমিটির সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, রাজা সাচিং প্রু চৌধুরী, মং রাজা, মং সার্কেল, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা, কঙ্কন চাকমা, যুগ্ম সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, খন্দকার রিজাউল করিম, রাঙামাটি জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, শুভাশিস চাকমা, সিনিয়র সহকারী সচিব (পার্বত্য উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব), কীর্তি নিশান চাকমা, সদস্য সচিব, ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিল এলামনাই এসোসিয়েশন আয়োজক কমিটি, অছ্য কুমার তঞ্চঙ্গা, যুগ্ম সদস্য সচিব, ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিল এলামনাই এসোসিয়েশন আয়োজক কমিটি প্রমুখ।
ঢাকা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন ভ র স ট উপদ ষ ট মন ত র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সমাধান বের করতে হবে
ঢাকার সাত কলেজকে একীভূত করে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করা হলেও প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। কলেজগুলোতেও ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ত্রিমুখী আন্দোলনে সংকট নতুন মাত্রা পেয়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের যৌক্তিক ও বিচক্ষণ পদক্ষেপ জরুরি বলে আমরা মনে করি।
ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার সাত কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এই অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্তেই সংকটের সৃষ্টি। পরীক্ষা, ক্লাসসহ নানা বিষয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের গত আট বছরে অসংখ্য আন্দোলন করতে হয়েছে। ফলে কয়েকটি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন দীর্ঘায়িত হয়েছে। আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়েছেন অনেকে। এসব আন্দোলনে সড়ক বন্ধ থাকায় দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত জানুয়ারি মাসে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করা হয়। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামো কেমন হবে, তার রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, সাত কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাবিত কাঠামোর পক্ষে-বিপক্ষে অন্তত পাঁচটি পক্ষ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল দ্বিতীয়বারের মতো শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করেন।
অন্যদিকে রোববার কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবিতে ঢাকা কলেজসহ একাধিক কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। স্কুলিং মডেল বাতিল ও একাদশের স্বতন্ত্র কাঠামো বহাল রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের একাংশ আন্দোলন করছেন। এ ছাড়া ইডেন মহিলা কলেজকে কেবল নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা ও প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির স্কুলিং মডেল বাতিল এবং স্বাতন্ত্র্য কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে একাডেমিক-প্রশাসনিক পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষকেরা মানববন্ধন, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন।
সব মিলিয়ে ঢাকার সাত কলেজকেন্দ্রিক সংকট জটিল আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিষ্কার করে বলতে পারছে না নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ তারা কবে ঘোষণা করতে পারবে। আমরা মনে করি, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নতুন করে সংকট ডেকে এনেছে।
সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী, সাত হাজার শিক্ষক ও কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বার্থেই এই সংকটের সমাধান জরুরি। এটা সত্যি যে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যার সমাধান এক দিনেই হবে না। কিন্তু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা পক্ষ যদি নিজ নিজ দাবিতে অনড় থাকে, তাহলে কোনো যৌক্তিক সমাধান আসবে না। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে, সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই শিক্ষাবিদ, সাত কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধানের পথ বের করতে হবে।