এক সপ্তাহ ব্যবধানে চট্টগ্রামের বাজারে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত এক সপ্তাহ আগে বাজারে ১৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এক সপ্তাহে দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। আবার কয়েকটি বাজারে দাম যাওয়া হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। ক্রেতাদের ভাষ্য, শবে কদর ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আজ বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শবে কদর ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। আবার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই বাজারে। ফলে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। অধিকাংশ দোকানে দাম ২০০ থেকে ২১০ টাকার মধ্যে। তবে গুটিকয় দোকানি দাম বেশি নিচ্ছেন।

নগরের আসকারদীঘি, বহদ্দারহাট ও চকবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও বলছে, সদর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির গড় দাম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। তবে নগরের কয়েকটি বাজারে দাম ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গতকাল বুধবার রাতে নগরের চৌমুহনী কর্ণফুলী মার্কেট থেকে ব্রয়লার কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাহমুদুল হক শাহ ও ইমরান হোসেন। তাঁরা জানান, গত সপ্তাহে ১৮৫ টাকা দরে কিনলেও এখন দাম চাওয়া হচ্ছে ২৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে বেশি দামের অজুহাতে দাম বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতা।

কর্ণফুলী মার্কেটের মুরগি বিক্রেতা আবু সৈয়দ বলেন, ‘আমরা ২১০ টাকা দরে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করে ২৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বড় পোলট্রি খামারগুলো বাজারে মুরগি সরবরাহ দিচ্ছে না। তাই দাম বেড়েছে।’

তবে নগরে রিয়াজউদ্দিন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি দোকানগুলোতে ১৯০ টাকা দরে মাঝারি আকারের ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে। ছোট আকারে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা দরে। চকবাজারেও একই দামে বিক্রি হয়েছে।

চকবাজারের সেলিম পোলট্রি শপের ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, সরবরাহ কম, সেটি সত্য। তবে দাম ৫-১০ টাকার বেশি বাড়েনি। বাজারে ২০০ থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চট্টগ্রাম) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, বর্তমানে ঈদ ঘিরে বাস কাউন্টারগুলোতে অভিযান চলছে। ফলে বাজারে আপাতত নিয়মতি অভিযান নেই। তবে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২১০ ট ক ২০০ ট ক ম রগ র

এছাড়াও পড়ুন:

৪০ শতাংশ কাজ করে অর্ধেক বিল তুলে ঠিকাদার লাপাত্তা

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি উপজেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। সে লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমিউনিটিভিত্তিক পানি সরবরাহ নামে পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু কাজ মাঝপথে ফেলে রেখে লাপাত্তা হয়ে গেছেন ঠিকাদার। এতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে প্রায় ৫ হাজার পরিবার বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পাবে কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় লোকজন চেয়ারম্যানদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। এতে বিপদে পড়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও। এলাকার পানিতে প্রচুর আয়রন আছে জানিয়ে দুপচাঁচিয়ার আলতাফনগর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, এ পানি পান করে অনেকে নানান রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকারের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানির সুবিধা পাবেন বলে আশা ছিল তাদের। কিন্তু ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছেন। এতে তারা হতাশ। কাজটি হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।
প্রকল্পটির আওতায় দুপচাঁচিয়ার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে দুপচাঁচিয়া সদর, গুনাহার ও গোবিন্দপুরকে বেছে নেওয়া হয়। এ তিন ইউনিয়নে পরীক্ষামূলকভাবে ১৮টি ট্যাঙ্ক স্থাপন করে দুই হাজার পরিবারকে পানি সরবরাহ করা হবে। সে জন্য ৬২ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। আদমদীঘির ছয়টি ইউনিয়নের তিন হাজার পরিবার এ সুবিধা পাবেন। সে জন্য ব্যয় ধরা হয় ৭৭ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পানি সরবরাহ ইউনিট স্থাপন কাজের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দুই উপজেলার জন্য ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার মেসার্স আমান অ্যান্ড কেয়া ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়। ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ১৮ মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর শুরুর সময় ঠিক হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করে। 
জানা গেছে, দুপচাঁচিয়ার ১৬টি ইউনিটের মধ্যে দেবড়াশন, আলতাফনগর, চৌমুহনী বাজার, আমষট্ট, শেরপুর, কেউৎ ও বাজারদীঘির আটটি ইউনিটে বোরিংসহ কয়েকটির অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আর কাজ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪০ শতাংশ কাজ করে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা (বিল) তুলে নিয়েছে তারা। এর পর দেড় বছর ধরে লাপাত্তা ঠিকাদার।
প্রকল্পের কাজ শুরু হলে এলাকার মানুষ খুশি হয়েছিলেন বলে জানান দুপচাঁচিয়ার গুনাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ আবু তাহের। তাঁর ভাষ্য, মাঝপথে কাজ বন্ধ করায় এলাকার মানুষ বলছে, প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যানরা মেরে খেয়েছে। এ কারণে কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে। অন্যথায় কর্তৃপক্ষকে এলাকায় গিয়ে মানুষকে ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন কাজ হচ্ছে না।
দুপচাঁচিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য কয়েকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাড়া 
দিচ্ছেন না। উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় চেয়ারম্যানরা কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সভার সিদ্ধান্তে ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। এ সিদ্ধান্তও ঠিকাদারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
একই অবস্থা আদমদীঘিতেও। এ উপজেলায় একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ কাজ করে অর্ধেক টাকা তুলে নিয়েছে। এখানে ২৬টি ইউনিটের মাধ্যমে তিন হাজার মানুষকে সুবিধা দেওয়ার কথা। কিন্তু ছয়টি ইউনিয়নে ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে ১২টি। আদমদীঘি সদর, নসরৎপুর, চাপাপুর, দুর্গাপুর, কুন্দ্রগ্রাম ও ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নে এসব স্থাপন করা হয়েছে।
প্রকল্পের কাজ মাঝপথে আটকে থাকায় এলাকার মানুষ চেয়ারম্যানদের চোর অপবাদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নসরৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা। তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকায় যেতে পারছি না। দোষ করছে একজন, নাম হচ্ছে আরেকজনের।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহামুদ বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা আমাদের কটু কথা শোনান এ প্রকল্প নিয়ে। আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।’ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমান অ্যান্ড কেয়া ট্রেডার্সের কর্ণধার আমান উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন বন্ধ রেখেছেন।
বগুড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঠিকাদারকে বারবার প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়নের জন্য চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি যোগাযোগ করছেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ না করলে কার্যাদেশ বাতিল করে বিকল্প উপায়ে প্রকল্পটি সম্পন্ন করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বে ডেভেলপমেন্টস ও আনোয়ার গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর
  • অ্যাপল পিছিয়ে পড়ল
  • ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিলের দায় শোধ করতে পারবে ব্যাংক
  • ৪০ শতাংশ কাজ করে অর্ধেক বিল তুলে ঠিকাদার লাপাত্তা
  • ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত গেল বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ
  • কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন সরবরাহ, আহ্বায়ককে অব্যাহতি 
  • ভোক্তাস্বার্থ সুরক্ষা জরুরি
  • বাঘাইছড়িতে অক্সিজেন না পেয়ে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
  • দিনাজপুরে চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬ মিলের নিবন্ধন বাতিল
  • বাঘাইছড়িতে অক্সিজেন না পেয়ে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পরিবারের