Samakal:
2025-05-22@15:31:13 GMT

প্রয়োজন বহুপক্ষীয় সক্রিয়তা

Published: 20th, April 2025 GMT

প্রয়োজন বহুপক্ষীয় সক্রিয়তা

চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও খুনের রাজনীতির যেই ভয়ংকর চিত্র রবিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে তুলিয়া ধরা হইয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ আগস্ট হইতে ২১ মার্চ পর্যন্ত ৭ মাসে ৭ জন খুন হইয়াছেন। সমকাল অনলাইনের সংবাদ অনুযায়ী, শনিবারও তথায় একজন খুন হইয়াছেন। উক্ত এলাকায় একদিকে জুলাই আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক খুনের শিকার হইতেছেন, অন্যদিকে বিএনপির দ্বিধাবিভক্ত রাজনীতির কারণে পুনরায় দাম্ভিক অবস্থান ঘোষণা করিতেছে রাজনৈতিক সন্ত্রাসীরা। গোষ্ঠীদ্বন্ধ, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করিয়া ঘটিতেছে ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা। এহেন পরিস্থিতি যদ্রূপ রাজনীতি, তদ্রূপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য আত্মঘাতী হইতে বাধ্য। 

আমরা জানি, কয়েক দশক ধরিয়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই অঞ্চল ‘সন্ত্রাসের জনপদ’রূপে পরিচিতি পাইয়াছে। মূলত এলাকায় প্রাধান্য বিস্তারের অপপ্রয়াস ঘিরিয়া দেশের তৎকালীন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার সাংঘর্ষিক রাজনীতি এবং দল দুইটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এহেন কুখ্যাতির কারণ। প্রত্যাশা ছিল, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর এলাকায় শান্তি আসিবে। বিশেষত বিগত ১০ বৎসরের এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী নেতার পরিণতি দেখিয়া বিএনপি নেতারা জনবাসনা উপলব্ধি করিতে পারিবেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপির অন্তর্কোন্দলের কারণে সেই আশার গুড়ে বালি পড়িয়াছে। রাজনীতির বিভেদ ৫ আগস্টের পরও রাউজানকে রক্তাক্ত করিয়া চলিতেছে।

আলোচ্য প্রতিবেদনমতে, ৫ আগস্টের পর বিএনপির দুই গ্রুপে শতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়াছে। এই সকল ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্তত তিন শতাধিক মানুষ আহত হইয়াছেন। স্বাভাবিকভাবেই এলাকার নিরীহ বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাইতেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জীবন-জীবিকাও স্বাভাবিক থাকিবার কথা নহে।

প্রতিবেদনে শুধু রাউজানের কথা বলা হইলেও দেশের অনেক স্থানে অভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করিবার আশঙ্কা উড়াইয়া দেওয়া যায় না। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সদস্য এবং উহার সমর্থকদের মধ্যে যাহারা বিবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল, তাহাদের আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি প্রদান জনআকাঙ্ক্ষা, সত্য। কিন্তু ইহার অর্থ কোনো প্রকারেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থকরণে আইন স্বীয় হস্তে তুলিয়া লওয়া নহে। আমরা জানি, বিগত কয়েক মাসে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়া ঢাকাসহ সমগ্র দেশে অনেককে হেনস্তা, এমনকি হত্যাও করা হইয়াছে। বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও দখল করা হইয়াছে। আমরা মনে করি, আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকারী এহেন হিংসা ও হানাহানি গণঅভ্যুত্থানে দলে দলে যে সাধারণ মানুষ যুক্ত হইয়াছিলেন, তাহাদেরই শুধু হতাশ করিতেছে না; রাষ্ট্র ও সমাজের সংহতিকেও দুর্বল করিয়া দিতেছে। উপরন্তু, আন্তর্জাতিক পরিসরেও দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়ার শঙ্কা উড়াইয়া দেওয়া যায় না।
স্বীকার্য, গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ অদ্যাবধি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসে নাই। উহাদের সহযোগিতার জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মাঠে থাকিলেও, বিশাল পুলিশ বাহিনীর ঘাটতি পূরণ তাহাদের পক্ষে এক প্রকার অসম্ভব। এই অবস্থায় স্বীয় নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখিবার দায় রাজনৈতিক দলগুলির উপরেই বর্তায়। আমরা জানি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ইতোমধ্যে বহু দলীয় নেতাকর্মীকে বিবিধ অপকর্মে সংশ্লিষ্ট হইবার দায়ে সংগঠন হইতে বহিষ্কারসহ নানা প্রকার শাস্তি দিয়াছে। কিন্তু এবম্বিধ পদক্ষেপ যে পরিস্থিতির উপর তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলিতে পারিতেছে না, রাউজান তাহার প্রমাণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ন ত কর ম ব এনপ র এল ক য় র জন ত হইয় ছ আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি

দেশে প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালু হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালের বেজমেন্ট-১ এ নির্মিত কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত থাকবেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বিএমইউর একাধিক কর্মকর্তা ও চীনা দূতাবাস জানায়, চীনের সহায়তায় স্থাপিত রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে মিলবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগের বিশ্বমানের সেবা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা প্রথমে বিনামূল্যে সেবা নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কারও সহযোগিতা ছাড়াই রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (এআই) ২২টি রোবট কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রটি চালুর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি দিয়েছে চীন সরকার। মোট রোবট রয়েছে ৬২, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন। কেন্দ্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ যারা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় ভুগছেন ও যাদের পুনবার্সন প্রয়োজন, তাদের সেবা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সাধারণ রোগীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে কত টাকায় কী সেবা, সে তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
কেন্দ্রের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস শাকুর বলেন, ‘এটি দেশের প্রথম রোবটিক ফিজিওথেরাপি কেন্দ্র। এআই রোবট নিজে রোগীর সমস্যা চিহ্নিত করে, সে অনুযায়ী সেবা দিতে পারবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকরাও কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এআই রোবট খুবই বুদ্ধিদীপ্ত, রোগীর নড়াচড়া দেখেই সে তার ফাংশন ঠিক করে।’
তিনি বলেন, ‘ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকরা রোবটগুলো ডিল করবেন। এ জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চীনের কারিগরি দল। আগামী ১০ দিন প্রশিক্ষণ চলবে। কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে গড়ে দিনে ৩০০ রোগী থেরাপি নিতে পারবেন।’

গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেলের তথ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১১ হাজার ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিতে আহত ৮০ শতাংশের অবস্থা খুবই জটিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ব্যয়বহুল রোবটিক ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম জানান, যেসব রোগীর ফিজিক্যাল ও নিউরোলজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে, কেন্দ্রে তাদের কার্যকরী চিকিৎসা মিলবে। মেরুদণ্ডের ইনজুরির কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্তরা নিতে পারবেন বিশেষভাবে কাস্টমাইজড রোবটিক সেবা। দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বা নার্ভ ইনজুরিতে যারা ভুগছেন, তাদের জন্য রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিক্যাল থেরাপির ব্যবস্থা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামীর বাংলাদেশ হবে তারুণ্যের প্রতিভা  ও কর্মে উদ্ভাসিত : ডিসি
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন না দিলে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে
  • উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত
  • আরব বসন্ত যে কারণে ব্যর্থ হয়েছিল...
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি