নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দী-শৈলেরকান্দা সড়ক পাকাকরণে এ অনিয়ম চলছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে নরুন্দী-শৈলেরকান্দা সড়কের ১ হাজার ৩০০ মিটার পাকা করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগেও এই সড়কের একাংশের কাজ হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে। ফলে দুই মাস না যেতেই সড়কটি ভেঙে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সে সময় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এলজিইডির কাছে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার মেলেনি।
জামালপুর এলজিইডি দপ্তরের তথ্যমতে, সদর উপজেলার নরুন্দী-শৈলেরকান্দা সড়কের মহিশুড়া শহীদের বাড়ি থেকে শৈলেরকান্দা বেপারির খামার পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ মিটার পাকা করার কাজ শুরু হয় গত জানুয়ারি মাসে। ৩৫ লাখ টাকার কাজটি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জে এস ট্রেডিংকে। অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদার নিজে কাজ না করে তা বিক্রি করে দেন আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছে। সরেজমিন দেখা যায়, এ কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাস্তার কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ইট ও খোয়ার মান যাচাই না করেই রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে অল্প দিনের মধ্যেই সড়কটি নষ্ট হয়ে যাবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই রাস্তার কাজ তদারকিতে জামালপুর সদর উপজেলার এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি রয়েছে।
নরুন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুন-অর-রশীদের ভাষ্য, গত বছর প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার পাকা করার দুই মাসের মধ্যেই ভেঙে যায়। এতে এই সড়কে যাতায়াতকারী মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। বর্তমানে যে কাজ হচ্ছে, তা আরও খারাপ। ফলে এই সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
কাজ তদারকি কর্মকর্তা এলজিইডি সদর উপজেলার নকশাকার উপসহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে, এই কর্মকর্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে কাজ করায় তাঁর তদারকিতে কোনো কাজই মানসম্মত হয় না। বিতর্কিত এই কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে একজন সৎ ও দক্ষ প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
এলজিইডির জামালপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী আক্রাম হোসেন তালুকদারের ভাষ্য, রাস্তায় আগে ব্যবহৃত ইট-খোয়া ব্যবহারের নিয়ম আছে। সেগুলো দিয়ে কাজ চলছে। এখনও নতুন ইট-খোয়ার কাজ শুরু হয়নি। তবে যেভাবে কাজ করলে রাস্তাটি টেকসই হবে, সেভাবেই করা হবে।  
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রোজদিদ আহম্মেদ সমকালকে বলেন, তিনি এই জেলায় নতুন এসেছেন। তাই এখনও সবকিছুর খোঁজখবর ঠিকমতো নিতে পারেননি। তাঁর ভাষ্য, তিনি এসেছেন কাজ করতে, কোনো দুর্নীতিবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে নয়। যে ক’দিন থাকবেন, শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে যাবেন। এই রাস্তার খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মূল ঠিকাদার ও সাবঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোনকল রিসিভ করেননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক সদর উপজ ল র কর মকর ত ব যবহ র ক জ কর সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরতলে সবচেয়ে দীর্ঘ ও গভীর রাস্তা বানাচ্ছে নরওয়ে

ইউরোপের দেশ নরওয়েতে নির্মাণ করা হচ্ছে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক। তবে এটি মাটির ওপরে নয়, সাগরতলে। এর সর্বোচ্চ গভীরতা হবে ১ হাজার ২৮৬ ফুট বা ৩৯২ মিটার। নির্মাণকাজ শেষ হলে এটিই হবে সাগরতলে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘ সড়কপথ।

সড়কটি নির্মাণ করা হবে একটি সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোগফাস্ট’। সড়কটির নির্মাণকাজ প্রথমে হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক বছর পরেই তা বাতিল করা হয়। ২০২১ সালে আবার সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। সব ঠিকঠাক থাকলে কাজ শেষ হবে ২০৩৩ সালে। এতে মোট খরচ পড়বে ২৪০ কোটি ডলার।

সড়কপথটির উত্তরের অংশ নির্মাণ করছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্কানস্কা। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক অ্যান ব্রিট মোয়েন বলেন, সড়কটি নির্মাণ শেষ হলে নরওয়ের পশ্চিম উপকূলের যোগাযোগব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। সেখানকার স্ট্যাভানগার ও বার্জেন শহরের মধ্যে যাতায়াতে আর ফেরির প্রয়োজন পড়বে না। ফলে আগের চেয়ে ৪০ মিনিট কম সময় লাগবে।

বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। একসঙ্গে সুড়ঙ্গের দুই দিক দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। রয়েছে নানা বাধা। যেমন প্রকৌশলীরা যখন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০ মিটার নিচে সুড়ঙ্গ নির্মাণে কাজ করছেন, তখন বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করছে। সর্বোচ্চ গভীরতায় (৩৯২ মিটার) গেলে সমস্যা আরও বাড়বে—এমন শঙ্কা রয়েছে।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো, এতটা গভীরে আর বদ্ধ জায়গায় শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এটি সমাধানে বিশেষ ধরনের বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক নির্মাণের ফলে বন্ধ হয়ে যাবে ফেরি চলাচল। অনেকেই কাজ হারাবেন। যদিও একই সঙ্গে সাগরতলের সড়ক তত্ত্বাবধানের জন্য নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি রয়েছে জাপানের উত্তরাঞ্চলে। সেইকান টানেল নামের ওই সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৪ কিলোমিটার। এর সাগরতলের অংশ ২৩ কিলোমিটারের বেশি। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে যুক্ত করা দ্য চ্যানেল টানেল। এই সুড়ঙ্গের ৩৮ কিলোমিটার সাগরতলে—দৈর্ঘ্যে যা রোগফাস্টের চেয়ে বেশি। এই দুই সুড়ঙ্গ দিয়ে শুধু ট্রেন চলাচল করে। তবে গভীরতার দিক দিয়ে দুই সুড়ঙ্গের কোনোটিই নরওয়ের রোগফাস্টের ধারেকাছে নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাধানগরে ৩৬ ঘণ্টার লড়াই, পিছু হটে পাকিস্তানি বাহিনী
  • সাগরতলে সবচেয়ে দীর্ঘ ও গভীর রাস্তা বানাচ্ছে নরওয়ে
  • ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বোন উজমা
  • ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়াল
  • বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ