কুমিল্লায় গৃহবধূ নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি মহিলা পরিষদের
Published: 21st, April 2025 GMT
কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোটে গৃহবধূকে শিকলে বেঁধে ধর্ষণ ও মাথার চুল কেটে নেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। রোববার এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দুর্বৃত্তরা দেশি অস্ত্র, লোহার শিকল ও তালাসহ ওই গৃহবধূর বসতঘরে প্রবেশ করে। তারা ওড়না দিয়ে ওই গৃহবধূর মুখ ও শিকলে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় মুখোশে মুখ ঢাকা ব্যক্তি ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। অপর একজন তার মাথার চুল কেটে দেয়। নির্যাতনের পর তারা ওই গৃহবধূর ঘর থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলপত্র লুট করে। ঘরে থাকা জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের নেতারা বলেন, সম্প্রতি দেশে নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও পূর্বশত্রুতার অজুহাতে সব বয়সের সব শ্রেণি-পেশার নারী ও কন্যারা ধর্ষণ, শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নিজ গৃহে অবস্থানরত নিরীহ নারীরাও এর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। গণপরিবহনে ও ভ্রমণ স্থানে নারীকে ধর্ষণ, হেনস্তা ও তাঁদের প্রতি বিদ্বেষমূলক সহিংসতা ঘটে চলেছে। এ ধরনের সহিংসতার ঘটনায় দেশে নারীদের অবস্থান এবং তাঁদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে কুমিল্লায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের বিচার দ্রুত কার্যকর করার জোর দাবি জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।