কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোটে গৃহবধূকে শিকলে বেঁধে ধর্ষণ ও মাথার চুল কেটে নেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। রোববার এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু  এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা নারীর প্রতি সব ধরনের  সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দুর্বৃত্তরা দেশি অস্ত্র, লোহার শিকল ও তালাসহ ওই গৃহবধূর বসতঘরে প্রবেশ করে। তারা ওড়না দিয়ে ওই গৃহবধূর মুখ ও শিকলে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় মুখোশে মুখ ঢাকা ব্যক্তি ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। অপর একজন তার মাথার চুল কেটে দেয়। নির্যাতনের পর তারা ওই গৃহবধূর ঘর থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলপত্র লুট করে। ঘরে থাকা জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের নেতারা বলেন, সম্প্রতি দেশে নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও পূর্বশত্রুতার অজুহাতে সব বয়সের সব শ্রেণি-পেশার নারী ও কন্যারা ধর্ষণ, শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নিজ গৃহে অবস্থানরত নিরীহ নারীরাও এর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। গণপরিবহনে ও ভ্রমণ স্থানে নারীকে ধর্ষণ, হেনস্তা ও তাঁদের প্রতি বিদ্বেষমূলক সহিংসতা ঘটে চলেছে। এ ধরনের সহিংসতার ঘটনায় দেশে নারীদের অবস্থান এবং তাঁদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন।  

বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে কুমিল্লায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের বিচার দ্রুত কার্যকর করার জোর দাবি জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হওয়া বিপজ্জনক: বদিউল আলম মজুমদার

একই ব্যক্তির একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হওয়া বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, ‘দিস ইজ দ্য বিগেস্ট কালপ্রিট আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘প্রস্তাব থেকে বাস্তবতা: কমিশন প্রতিবেদন পুনর্মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকস (দায়রা) এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা অনেকটা সিভিল সোসাইটির মতো। তারা যখন নির্বাচন করে, তখন একটা ইশতেহার দেয় এবং তা বাস্তবায়নের জন্যই প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়। প্রার্থীরা ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্যই নির্বাচিত হয়ে আসেন। তাই যিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি যেন দলের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন, সেই বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোতে থাকতে হবে।

নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নিরপেক্ষ জনবল খুঁজতে দুটি প্রস্তাব করেছেন তাঁরা। প্রথমটি সর্বদলীয় সার্চ কমিটি। যেখানে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব এবং নাগরিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণ থাকবে। আর এর বিকল্প পদ্ধতি হলো এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল)। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এনসিসি একটা ইনোভেশন এবং ভেরি অ্যাট্র্যাকটিভ।’

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েক সাকি, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, আইনজীবী শিশির মনির, আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মির্জা এম এ হাসান, বিডি জবসের এমডি এ কে এম ফাহিম মাশরুর, রাজনৈতিক কর্মী সৈয়দ হাসিবুদ্দিন, এবি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব নাসরিন সুলতানা মিলি প্রমুখ।

গোলটেবিলে বৈঠকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দায়রার গবেষণা সহকারী ফারিহা আহমেদ। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ