গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে একটি ঝুট গোডাউনে শনিবার দুপুরের দিকে আগুন লাগে। বয়জার লিমিটেড নামক সুতা তৈরির কারখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে তা আশপাশের ১২টি ঝুটের গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার কোনাবাড়ীর মেট্রো থানার দেহলাবাড়ি বেলতলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটে ঘটনাস্থলে যায়। পরে গাজীপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের।

এলাকা ঘনবসতি হওয়ায় সুতা তৈরির কারখানা ও জুটের গোডাউনের আশপাশে শত শত বাসাবাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক বাসার মালামাল সরিয়ে নিয়ে যায় বাসিন্দারা। আগুনের কালো ধোয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়।

তবে একটার দিকে দমকা হওয়া বয়ে যাওয়ায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায়। দেড়টার দিকে বৃষ্টি হওয়ার পর আগুনের তীব্রতা কমতে থাকে। এসময় আগুন নেভানোর জন্য স্থানীয়রাও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দেন।

এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানায়, বয়জার লিমিটেড নামক একটি সুতা তৈরির কারখানাসহ ঝুটের গোডাউনের মালিক আসাদুল ইসলাম, রুস্তম আলী, তানভীর হাসান, ইসমাইল হোসেনেরসহ ১২টি গোডাউনে রাখা ঝুট, সুতা ও মালামাল পুড়ে যায়।

স্থানীয় আসাদুজ্জামান ও রুস্তম হোসেন বলেন, প্রত্যেক ঝুটের গোডাউনে কয়েক কোটি টাকার মালামাল ছিল। আগুনে সব পুড়ে গেছে। এখন আমাদের আর কিছুই নেই। ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে ব্যবসা শুরু করেছিলাম।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১১টার দিকে বয়জার লিমিটেড নামক একটি সুতা তৈরির কারখানা থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ শুরু করেন। পরে গাজীপুর থেকে আরো তিন ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। দুপুর দুইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন আগ ন ন ভ ন র আগ ন র ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিপ্লব বদলালেন উত্তরবঙ্গের হালকা প্রকৌশলশিল্প

বগুড়ার প্রকৌশলী মো. মাহমুদুন্নবী বিপ্লব করোনা মহামারির সময় তৈরি করেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। বগুড়া থেকে বিধিনিষেধের সময়ে রাত জেগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেন তিনি। দেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নিজের মেধা দিয়ে এক মাসেই বহনযোগ্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেন মো. মাহমুদুন্নবী। এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মাধ্যমে ঘরের বাতাস থেকেই প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন তৈরি করা যায়। এটি ব্যবহারও বেশ সহজ। একটি রেগুলেটরের মাধ্যমে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে যন্ত্রটি। ৩০ কেজি ওজনের কম এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যেকোনো হাসপাতালে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। খরচ পড়েছে ৭০ হাজার টাকা।

১৯৯৬ সালে বগুড়া পলিটেকনিকে শিক্ষকতার পাশাপাশি মো. মাহমুদুন্নবী রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ওয়ার্কশপ গড়ে তোলেন। তার ওয়ার্কশপেই তিনি বন্যা-পূর্ব সতর্কতার একটি বিশেষ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। মাত্র পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই যন্ত্র ব্যাটারি ও সৌর প্যানেলে চলে। মাহমুদুন্নবীর বন্যা-পূর্ব সতর্কীকরণ যন্ত্র ২০১৮ সালে বগুড়ায় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কার পায়। মাহমুদুন্নবীর অন্যান্য উদ্ভাবনের মধ্যে বেবি ইউরিন অ্যালার্ম বেড, রোগীর শরীরে পুশ করার স্যালাইন অ্যালার্ম সিস্টেম, জলজ প্রাণীর জন্য পানিতে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ওয়াটার অ্যারোয়েটর, করোনা প্রতিরোধে অটোমেটিক স্যানিটাইজিং মেশিন, প্যারালাইজড রোগীর ব্যবহারের জন্য অটোমেটিক হ্যান্ড এক্সারসাইজ, ডিজিটাল ডোর লক, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের জন্য লক রিং টুলস অন্যতম। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা ওয়ার্ডে (আইসিইউ) ব্যবহারের জন্য ভেন্টিলেটর মেশিন প্রস্তুত করছেন তিনি।

ধীরে ধীরে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় ওয়ার্কশপ হিসেবে গড়ে তুলেছেন কাঁকন রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ওয়ার্কশপকে। মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘এখন উত্তরবঙ্গে অনেক বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সমস্যা ও ত্রুটি মেরামতের জন্য বিদেশ থেকেও প্রকৌশলী আনা হতো। সেই সমস্যা সমাধানে আমরা স্থানীয় প্রকৌশলীরা কাজ করছি।’ আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২৩–এ মো. মাহমুদুন্নবী সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ