সোমার দেয়ালে ধাক্কা খেয়েই ডুবল বার্সার তরী
Published: 7th, May 2025 GMT
দুই দল মিলিয়ে ম্যাচে গোল করল ৭টি, এরপরও ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতল কিনা গোলরক্ষক! এতেই বুঝা যায় চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে কি দারুণ মহারণ উপহার দিয়েছে ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা। কাতালান জায়ান্টদের একের পর এক প্রচেষ্টা প্রতিহিত করে ২০২৩ সালের পর আবারও নেরাজ্জুরিদের ফাইনালে তুললেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমার।
সান সিরোতে রোমাঞ্চকর দুই লেগ শেষে ইন্টার ৭-৬ অ্যাগ্রিগেটে জয়ী হয়। এই ম্যাচে সোমার সাতটি দুর্দান্ত সেভ করেন। তার অতিমানবীয় পারফরম্যান্সেই ঘরের মাঠ সান সিরোতে আশি হাজার দর্শকের গর্জন পূর্ণতা লাভ করে।
রোলার কোস্টারের মতো চলা ম্যাচের ১১৪তম মিনিটে ইন্টার এগিয়ে ছিল ৪-৩ ব্যবধানে। এই সময় বার্সার তরুণ উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালের একটি দুর্দান্ত এক বাঁকানো শট সোমার পোস্টের বাইরে ঠেলে দেন। মাঠের প্রতিটি মানুষের তখন চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো অবস্থা। মূলই এই সেভটাই স্বাগতিকদের ফাইনালে তুলেছে।
আরো পড়ুন:
ইন্টার পরীক্ষায় ফেল বার্সা
ইন্টার-বার্সা সেমিফাইনালে ফিরে আসছে ২০১০ সালের স্মৃতি
ম্যাচ শেষে সোমার বলেন, “আমি খুব খুশি, অবিশ্বাস্য ম্যাচ এক ছিল। দল আজ রাতে অসাধারণ কিছু করেছে। লামিনের শেষ শটটি যেভাবে ঠেকাতে পেরেছি, সেটি অবশ্যই বিশেষ। ও (ইয়ামাল) একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়, সবসময় ড্রিবল করে ভেতরের দিকে এসে শট নেয়। আমি খুশি সেটা গোল হয়নি। এই ম্যাচ প্রমাণ করে আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্বাস রেখেছিলাম। আচেরবি যা করলো.
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ ইন ট র ম ল ন ইন ট র ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে ঢাকা
পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ভারতে গোলাবর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা। দুই দেশের উত্তেজনাকর অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি যাতে খারাপের দিকে না যায়, সে জন্য দু’পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের এই অবস্থান জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার চেতনায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। আর তা হবে এ অঞ্চলের জনগণের শান্তি ও কল্যাণের জন্য।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান বৈঠকে বসেন। সে বৈঠক ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে পারেনি সমকাল। তবে সভা শেষে ড. খলিলুর রহমান ভারত-পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পড়ে শোনান।
এদিকে, দুই দেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে সামরিক হামলার নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তারেক রহমান লেখেন, ‘প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সামরিক হামলার নিন্দা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। অভিন্ন স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্মিত একটি স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ অঞ্চল সবার সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার মতো ঘটনা কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এ ঘটনার গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত। উভয় পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। দিনশেষে যুদ্ধ কারও জন্যই কল্যাণকর নয়। বিবৃতিতে কাশ্মীরবাসীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান আন্তরিকভাবে কামনা করেছে দলটি।
এদিকে, পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, এ হামলা দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সরাসরি আঘাত। উভয় পক্ষকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতির স্বার্থে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
দলটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থান করা পলাতক ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মী বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এই দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিতে চক্রান্তে লিপ্ত। তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও নাশকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জানমালের ক্ষতিসাধনে সক্রিয় রয়েছে। সরকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি এনসিপি সীমান্তে নজরদারি ও সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গতকাল রাতে ভারত থেকে পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত করা এবং যুদ্ধ-উন্মাদনা পরিস্থিতিতে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ-উন্মাদনা দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। উল্টো এই যুদ্ধের বলি হবে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ।
ভারত থেকে পুশইন করা ঠিক নয়
গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, ভারত সীমান্ত দিয়ে পুশইনের খবর আমরাও পাচ্ছি। প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে নিরক্ষণ করছি। আমরা শুধু বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রমাণসাপেক্ষে গ্রহণ করব। আর এ প্রক্রিয়া হতে হবে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে। এভাবে পুশইন করাটা ঠিক নয়।