ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনার আবহে সাইবার জগতে দুই দেশের হ্যাকারদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনার কথা জানা গেছে। সরকারিভাবে কোনো আক্রমণের তথ্য প্রকাশ না করা হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সাইবার যুদ্ধের তথ্য জানা যাচ্ছে। উভয় দেশের হ্যাকাররা এরই মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাইবার আক্রমণ করেছে বলে জানা গেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সাইবার দুনিয়াতেও যুদ্ধের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। দুই দেশের হ্যাকার গোষ্ঠী একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল অবকাঠামোকে আক্রমণ করছে। পাকিস্তানি হ্যাকার গোষ্ঠী ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে অনুপ্রবেশের দাবি করেছে। হ্যাকাররা অপারেশন সালার নামের একটি সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে। তারা ভারতীয় ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালায় বলে জানিয়েছে। চারটি ভারতীয় বড় ওয়েবসাইট হ্যাক করার তথ্য জানিয়েছে তারা।

এক হ্যাকার জানিয়েছে, ‘পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় দেশ। আমাদের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবোধকে কেউ আক্রমণ করলে আমরা চুপ থাকব না।’ হ্যাশট্যাগ অপারেশন সালার দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই হ্যাকার গ্রুপ একদল স্বেচ্ছাসেবক মিলে তৈরি করেছে। হ্যাকিংয়ের পরে বিভিন্ন সাইটে পাকিস্তানের পতাকা প্রকাশ করছে তারা। যদিও এর মধ্যে কিছু ভুয়া তথ্য অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ভারতের ৭০ শতাংশ বৈদ্যুতিক গ্রিড অকেজো হয়ে গেছে।

ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বিষয়টিকে গুজব বলে বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, পাকিস্তান–সমর্থিত হ্যাকাররা আর্মি পাবলিক স্কুল নাগ্রোটা, সানজুয়ান, আর্মি ইনস্টিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্টসহ বেশ কিছু ওয়েবসাইট দখল করে নিয়েছে। পাকিস্তানের সাইবার গ্রুপ এইচওএএক্স১৩৩৭ এবং ন্যাশনাল সাইবার ক্রু নামের দুটি দল ভারতীয় ওয়েবসাইটের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। ট্রান্সপারেন্ট ট্রাইব নামে পাকিস্তানের হ্যাকার গ্রুপ ক্রিমসনর‍্যাপ ও মেশএজেন্ট নামে ম্যালওয়্যার দিয়ে ফিশিং আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে ভারতীয় হ্যাকাররা পাকিস্তান সরকারের ফেডারেল বোর্ড অব রেভিনিউ (এফবিআর) নিয়ন্ত্রিত আইরিশ পোর্টালে হানা দিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় হ্যাকাররা প্রায় ১৫০ গিগাবাইট ডেটা সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। এই ডেটাতে পাকিস্তানের কর–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, ইন্ডিয়া সাইবার ফোর্স নামে ভারতীয় হ্যাকারদের দল পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সাইটে আক্রমণ করছে। ইউরো ওয়েল, এজেকে সুপ্রিম কোর্ট, বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়, সিন্ধ পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাকিং করেছে।

দুই দেশের সাইবার আক্রমণে হ্যাকাররা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডিওএস) অ্যাটাকের মাধ্যমে হ্যাকাররা বিভিন্ন সার্ভার অকেজো করে দিচ্ছে। হ্যাকাররা বিভিন্ন সিস্টেম থেকে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সূত্র: সাম্য ডটটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’

মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ