ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলছে সাইবার যুদ্ধ
Published: 10th, May 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনার আবহে সাইবার জগতে দুই দেশের হ্যাকারদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনার কথা জানা গেছে। সরকারিভাবে কোনো আক্রমণের তথ্য প্রকাশ না করা হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সাইবার যুদ্ধের তথ্য জানা যাচ্ছে। উভয় দেশের হ্যাকাররা এরই মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাইবার আক্রমণ করেছে বলে জানা গেছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সাইবার দুনিয়াতেও যুদ্ধের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। দুই দেশের হ্যাকার গোষ্ঠী একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল অবকাঠামোকে আক্রমণ করছে। পাকিস্তানি হ্যাকার গোষ্ঠী ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে অনুপ্রবেশের দাবি করেছে। হ্যাকাররা অপারেশন সালার নামের একটি সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে। তারা ভারতীয় ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালায় বলে জানিয়েছে। চারটি ভারতীয় বড় ওয়েবসাইট হ্যাক করার তথ্য জানিয়েছে তারা।
এক হ্যাকার জানিয়েছে, ‘পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় দেশ। আমাদের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবোধকে কেউ আক্রমণ করলে আমরা চুপ থাকব না।’ হ্যাশট্যাগ অপারেশন সালার দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই হ্যাকার গ্রুপ একদল স্বেচ্ছাসেবক মিলে তৈরি করেছে। হ্যাকিংয়ের পরে বিভিন্ন সাইটে পাকিস্তানের পতাকা প্রকাশ করছে তারা। যদিও এর মধ্যে কিছু ভুয়া তথ্য অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ভারতের ৭০ শতাংশ বৈদ্যুতিক গ্রিড অকেজো হয়ে গেছে।
ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বিষয়টিকে গুজব বলে বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, পাকিস্তান–সমর্থিত হ্যাকাররা আর্মি পাবলিক স্কুল নাগ্রোটা, সানজুয়ান, আর্মি ইনস্টিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্টসহ বেশ কিছু ওয়েবসাইট দখল করে নিয়েছে। পাকিস্তানের সাইবার গ্রুপ এইচওএএক্স১৩৩৭ এবং ন্যাশনাল সাইবার ক্রু নামের দুটি দল ভারতীয় ওয়েবসাইটের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। ট্রান্সপারেন্ট ট্রাইব নামে পাকিস্তানের হ্যাকার গ্রুপ ক্রিমসনর্যাপ ও মেশএজেন্ট নামে ম্যালওয়্যার দিয়ে ফিশিং আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতীয় হ্যাকাররা পাকিস্তান সরকারের ফেডারেল বোর্ড অব রেভিনিউ (এফবিআর) নিয়ন্ত্রিত আইরিশ পোর্টালে হানা দিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় হ্যাকাররা প্রায় ১৫০ গিগাবাইট ডেটা সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। এই ডেটাতে পাকিস্তানের কর–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, ইন্ডিয়া সাইবার ফোর্স নামে ভারতীয় হ্যাকারদের দল পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সাইটে আক্রমণ করছে। ইউরো ওয়েল, এজেকে সুপ্রিম কোর্ট, বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়, সিন্ধ পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাকিং করেছে।
দুই দেশের সাইবার আক্রমণে হ্যাকাররা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডিওএস) অ্যাটাকের মাধ্যমে হ্যাকাররা বিভিন্ন সার্ভার অকেজো করে দিচ্ছে। হ্যাকাররা বিভিন্ন সিস্টেম থেকে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সূত্র: সাম্য ডটটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ: জেলায় জেলায় আনন্দ, মিষ্টি বিতরণ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার তা ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সারা দেশে আনন্দ-উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।
খুলনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিধিরা আনন্দ-উল্লাসের তথ্য পাঠাচ্ছেন।
খুলনা: বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় উল্লাস করছেন খুলনার ছাত্র-জনতা। শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে এ বিষয়ে ঘোষণার পর মহানগরের শিববাড়ি মোড়ে বিজয় মিছিল এবং সমাবেশ করেন তারা।
আরো পড়ুন:
আ.লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে উল্লাস
নিষিদ্ধ ঘোষণায় আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী শাসনতন্ত্র যুব আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। মিছিলটি সার্বিকভাবে সমন্বয় করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনার সংগঠক আহাম্মদ হামিম রাহাত।
কুষ্টিয়া: আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় কুষ্টিয়ায় আনন্দ-উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করেছে ৎছাত্র-জনতা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে দলটিকে ‘গণহত্যাকারী’ অ্যাখ্যা দিয়ে মিছিল করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য দেন- কুষ্টিয়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক রিন্টু।
কুমিল্লা: কুমিল্লা শহরে রাত ১১টার পর থেকেই ছাত্র-জনতা আনন্দে মেতে ওঠেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলে মিছিল, স্লোগান ও ঢাক-ঢোলের উৎসব।
কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ, কান্দিরপাড়, রাণীর দিঘীর পাড়, ঝাউতলা ও শাসনগাছা এলাকায় মিছিল বের হয়। ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও মিছিলে অংশ নেন। ‘স্বাধীন বিচার চাই’, ‘দুর্নীতিবাজের বিচার চাই’, ‘গণতন্ত্রের বিজয় হোক’-এমন নানা স্লোগান মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা।
বগুড়া: আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের খবরে বগুড়ায় আনন্দ মিছিল হয়েছে। রাত সাড়ে ১১টায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে শহরের সাতমাথা থেকে মিছিল বের হয়। সেটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ‘শেষ মুহূর্তে খবর এলো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলো’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’সহ নানা স্লোগান দিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
ঢাকা/নূরুজ্জামান, কাঞ্চন, রুবেল, এনাম/মাসুদ