রং আর তুলি নিয়ে ব্যস্ত শিশুরা। প্রতিযোগিতায় আঁকছে তারা। শিশুদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাদের মায়ের মুখ। ভালোবাসার রঙে মাকে রাঙিয়ে তোলে তারা।

মা দিবস উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর উত্তরায় সেন্টারপয়েন্ট শপিং মলে বৈচিত্র্যপূর্ণ এক আয়োজনে আঁকছিল শিশুরা। ‘আমার মা আমার রঙে’ শীর্ষক ওই বর্ণিল আয়োজন করে ইউনাইটেড গ্রুপের সেন্টারপয়েন্ট ও প্রথমা প্রকাশন।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ছাড়াও এই আয়োজনে পাপেট শো, প্যারেন্টিং কর্মশালা, কার্টুন আঁকার কর্মশালা, সিসিমপুরের পরিবেশনা, নাটিকা, নাচ, গান, আবৃত্তিসহ নানা বর্ণিল আয়োজন। আয়োজনে শিশুদের সংগঠন শিল্প বাংলার পরিবেশনাও ছিল। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে আয়োজন চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত।

‘আমাদের ভালোবাসার রঙে রাঙা হয়ে ওঠে আমাদের মায়ের মুখ। আমাদের সারা জীবনের প্রচেষ্টা হোক মায়ের মুখে হাসি ফোটানো’—প্রথমা প্রকাশনের শিশুসাহিত্য সহযোগী সাইদুজ্জামান রওশনের এই আহ্বানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। উত্তরাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার স্কুলের শিশুদের পাশাপাশি আজিমপুরের বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়।

শিশুদের আঁকায় ফুটে ওঠে তাদের মায়ের মুখ। ভালোবাসার রঙে মাকে রাঙিয়ে তোলে তারা। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় তিন বিভাগে ৩ জন করে মোট ৯ শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন চিত্রশিল্পী মাসুক হেলাল, সামায়েল শহীদ, রজত আল জাবির ও মারুফ মিয়া।

আয়োজনে কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার উপস্থাপন করে অপু–দিপুর গল্প। কুঁজো বুড়ির গল্প বায়োস্কোপ শো আকারে উপস্থাপন করে তারা। এ ছাড়া কার্টুন আঁকা কর্মশালা পরিচালনা করেন কার্টুনিস্ট মেহেদী হক।

অনুষ্ঠানে বাবা-মায়েদের নিয়ে প্যারেন্টিং কর্মশালায় কথা বলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ফারজানা রহমান। তিনি বলেন, ‘এখনকার শিশুরা বেশ স্পর্শকাতর। মা–বাবারাও অনেক সচেতন। তারপরও শিশুদের অজান্তে আমরা তাদের মনে কষ্ট দিয়ে ফেলি। এতে দেখা যায়, অনেক সন্তান আমাদের থেকে অনেক দূরে চলে যায়। আমাদের উচিত সন্তানদের কাছাকাছি থাকা।’

জনপ্রিয় শিশুতোষ সিরিজ সিসিমপুর নিয়ে শিশুদের মধ্যে সব সময় ব্যাপক আগ্রহ থাকে। এই আয়োজনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। খাবার, শরীরচর্চা ও সর্বোপরি শরীরের যত্ন নিয়ে নাচে–গানে সিসিমপুরের টুকটুকি, শিকু, ইকরি এবং হালুম উপস্থিত শিশুদের সঙ্গে কথা বলে।

রাজধানীর ভাটারা থেকে অনুষ্ঠানে আসা মানহা বিনতে মুরশেদ জানায়, ‘সকালবেলা মায়ের সঙ্গে এসেছি। মাকে নিয়ে ছবি এঁকেছি। অনেক কিছু দেখে খুব ভালো লেগেছে।’
পুরস্কার বিতরণী পর্বে উপস্থিত ছিলেন ইউনিমার্টের সিইও গাজী মাহফুজুর রহমান, ইউনাইটেড রিয়েল এস্টেটের সিইও শেখ মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন।

‘আমার মা আমার রঙে’ শীর্ষক বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজনে বিশেষ পরিবেশনা। ঢাকা, ১১ মে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ল ব স র রঙ আম দ র উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ