মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় একটি স্কুলে ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জনই শিশু। বাকি দুজন শিক্ষক। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ঘোষিত মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই। সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে (স্থানীয় সময়) সাগাইং অঞ্চলের ওয়ে থেইন কুইন গ্রামে এই হামলা চালানো হয়। গ্রামটি ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।

স্কুলের ৩৪ বছর বয়সী এক শিক্ষক বলেন, এখন পর্যন্ত ২২ জন নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও দুইজন শিক্ষক। আমরা শিশুদের ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু যুদ্ধবিমানটি অনেক দ্রুতগতিতে ছিল এবং দ্রুতই বোমা ফেলে দেয়।

স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তাও একই সংখ্যক প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য এ ঘটনার বিষয়ে জান্তার কোনো মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চলতি মে মাসজুড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল গত ২৮ মার্চের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৩ হাজার ৮০০ জন নিহত হয়েছিলেন। তবে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে লড়াই অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে সাগাইং, কারেন ও চিন প্রদেশে।

২০২১ সালে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। জান্তা বাহিনী একদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা চালাচ্ছে, অন্যদিকে বহু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গণতান্ত্রিক বাহিনী একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে জান্তার উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ন ত সরক র ভ ম কম প

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন আয়োজনে বাজেট কত, খরচ যেসব খাতে

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আয়োজন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে ভোট দেবেন প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যে ১ হাজার ১৬২ শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ফলে এত দিনের প্রত্যাশিত আয়োজন ও বিপুলসংখ্যক ভোটার সামনে রেখে নির্বাচনী বাজেট কত দাঁড়াবে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণা—সব ধাপেই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা রাখা হবে। এ জন্য ক্যাম্পাসজুড়ে বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা, যাতে ভোট গ্রহণ ও গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো অভিযোগ উঠলে প্রমাণ রাখা যায়। ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের দেখাতে স্থাপন করা হবে ১৪টি এলইডি স্ক্রিন (পর্দা)। দরপত্রের মাধ্যমে এসব পর্দা বসানো হবে। খরচ হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এ ছাড়া ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স তৈরি, ওএমআর মেশিনে ফলাফল গণনা, বুথ স্থাপন, পরিবহন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের সম্মানী—সব মিলিয়েই বাজেট ধরা হয়েছে।

বাজেটের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চাহিদা অনুযায়ী খরচ করবেন। আপাতত ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার একটা প্রাথমিক হিসাব রাখা হয়েছে। এটি আরও বাড়তে পারে। কেননা শেষ পর্যন্ত কতজন প্রার্থী হবেন, কয়টি ব্যালট পেপার ছাপাতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে।

আগামী ১২ অক্টোবর ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটারের নিরাপত্তা, অংশগ্রহণ ও আস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। এ জন্যই খরচের প্রতিটি খাত খুঁটিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, নির্বাচন আয়োজনে কত টাকা খরচ হবে, তা ভোট গ্রহণের পর প্রকাশ করা উচিত। এতে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হলো শাটল ট্রেন। প্রতিদিন ১ জোড়া শাটল ৯ বার যাওয়া-আসা করে। তবে ভোটের দিন প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন থাকবে। এটির জন্য আলাদা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

রং করা হচ্ছে চাকসু ভবন। গতকাল দুপুরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ