মিয়ানমারে স্কুলে জান্তা বাহিনীর হামলা, ২০ শিশুসহ নিহত ২২
Published: 13th, May 2025 GMT
মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় একটি স্কুলে ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জনই শিশু। বাকি দুজন শিক্ষক। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ঘোষিত মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই। সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে (স্থানীয় সময়) সাগাইং অঞ্চলের ওয়ে থেইন কুইন গ্রামে এই হামলা চালানো হয়। গ্রামটি ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।
স্কুলের ৩৪ বছর বয়সী এক শিক্ষক বলেন, এখন পর্যন্ত ২২ জন নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও দুইজন শিক্ষক। আমরা শিশুদের ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু যুদ্ধবিমানটি অনেক দ্রুতগতিতে ছিল এবং দ্রুতই বোমা ফেলে দেয়।
স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তাও একই সংখ্যক প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য এ ঘটনার বিষয়ে জান্তার কোনো মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চলতি মে মাসজুড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল গত ২৮ মার্চের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৩ হাজার ৮০০ জন নিহত হয়েছিলেন। তবে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে লড়াই অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে সাগাইং, কারেন ও চিন প্রদেশে।
২০২১ সালে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। জান্তা বাহিনী একদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা চালাচ্ছে, অন্যদিকে বহু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গণতান্ত্রিক বাহিনী একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে জান্তার উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ন ত সরক র ভ ম কম প
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা, মা-ছেলে গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁওয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের পর চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত কিশোরীকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ গতকাল সোমবার রাতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার পোড়ামানিক পীর গ্রামের বাসিন্দা অনজুল হকের ছেলে মো. জুয়েল ও তার মা গোলাপি বেগম।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা ১১ মে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামিরা ভুক্তভোগীর আত্মীয়।
এজাহার থেকে জানা যায়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। পরিবার থেকে রাজি না হওয়ায় অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার পথ বেছে নেন তারা। গত ৮ মে সকাল ৯টার দিকে ওই শিক্ষার্থী ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায়। পরীক্ষা শেষে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে কেন্দ্র থেকে বের হলে চারজন তার পথরোধ করেন। তারা আগে থেকেই শিক্ষার্থীকে অপহরণের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা নিয়ে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলেন। ১ নম্বর আসামি জুয়েল তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাকি তিনজন সুলতানা বেগম, অনজুল হক ও গোলাপি বেগম তাকে আশ্বস্ত করেন, তারা অটোরিকশায় পেছনে পেছনে আসছেন। বাধ্য হয়ে তখন কিশোরী মোটরসাইকেলে ওঠে। জুয়েল তাকে বাড়ির পথে না নিয়ে দ্রুতবেগে পঞ্চগড়ের দিকে রওনা হন। ওই শিক্ষার্থী বারবার অনুরোধ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে ভূল্লী থানার ১১ মাইল এলাকায় পৌঁছে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীকে রাস্তায় ফেলে দেন জুয়েল। তখন চলন্ত ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শিক্ষার্থী মাথা, মুখ, হাত-পা ও কোমরে গুরুতর আঘাত পায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। যেখানে সে ৮ থেকে ১০ মে পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিল।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি সরোয়ার আলম খান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।