টাঙ্গাইলে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে জুলাই শহীদদের শ্রদ্ধা
Published: 1st, July 2025 GMT
টাঙ্গাইলে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সকল শহিদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সংগঠক তুষার আহমেদ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে, সেটি সম্ভব হয়েছে আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগের কারণে। এখন আমাদের কর্তব্য হলো- আকাঙ্ক্ষা থেকে এই আন্দোলন ও আত্মদান, অর্থাৎ একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন- তা বাস্তবায়ন করা। সেটিই হবে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা ও মর্যাদা।”
জেলা ছাত্র ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক প্রেমা সরকার বলেন, “জুলাই আমাদের মুক্তির দ্বার উন্মোচন করেছে ঠিকই, কিন্তু সেই সাথে আমাদের কাঁধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দায়িত্বও অর্পণ করেছে। আর তা হলো-জুলাইয়ের সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন। আমরা একটি সমতাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পাশাপাশি জুলাই গণহত্যার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই আমরা সমাজে প্রকৃত বিচার নিশ্চিত করতে চাই। যতদিন না পর্যন্ত জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হচ্ছে, ততদিন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন তার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।’’
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্র ফেডারেশনের পৌর কমিটির আহ্বায়ক আদিবা হুমায়রা, সদস্য সচিব মুনঈম ইসলাম, জেলা সদস্য শিশির প্রমুখ।
ঢাকা/কাওছার/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)