ব্র্যাক ব্যাংক আস্থা: ৯ লাখ গ্রাহকের স্মার্ট ব্যাংকিং অভিজ্ঞতায় অনন্য প্ল্যাটফর্ম
Published: 13th, May 2025 GMT
ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ এখন ৯ লাখের বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। ডিজিটাল জ্ঞানসম্পন্ন এত বড় গ্রাহকবেসকে সেবা দেওয়া ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকদের অবিচল আস্থার প্রতিফলন। এটি ব্র্যাক ব্যাংকের জন্য এক অনন্য মাইলফলকও বটে।
২০২১ সালে যাত্রা শুরু করা আস্থা অ্যাপ ডিজাইন করা হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের বৈচিত্র্যময় লাইফস্টাইল ও আর্থিক প্রয়োজন পূরণ করার লক্ষ্য নিয়ে। বর্তমানে এই অ্যাপ বাংলাদেশের ব্যাংকিং জগতে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ও পছন্দের ডিজিটাল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গ্রাহকেরা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদে উপভোগ করতে পারছেন নানাবিধ ব্যাংকিং সেবা।
শুধু ২০২৫ সালের মার্চ মাসেই আস্থা অ্যাপে প্রায় ১৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং জগতে মাসিক অ্যাপভিত্তিক লেনদেনে এক নতুন বেঞ্চমার্ক।
আস্থা অ্যাপটি বিশেষত বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ অ্যাপ ব্যবহারকারী ৫৩ শতাংশ গ্রাহকেরই বয়স ২১ থেকে ৩৫-এর মধ্যে, যাঁরা ব্যাংকিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্য, সুবিধা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আবার আস্থা অ্যাপের লাইফস্টাইল ফিচার ব্যবহারকারীর ৬১ শতাংশই এই বয়সী তরুণ প্রজন্ম, যাঁদের কাছে এ অ্যাপ দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আস্থা অ্যাপের গ্রাহকেরা নিজেদের ব্যাংকিং লেনদেনের ৭১ শতাংশই সম্পন্ন করেন এ অ্যাপের মাধ্যমে। গ্রাহকেরা যে ‘মোবাইল ফার্স্ট’ ব্যাংকিং সলিউশনের দিকে ঝুঁকছেন, এটি তারই উদাহরণ।
আস্থা অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকেরা যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে নিজেদের দৈনন্দিন ব্যাংকিং প্রয়োজন পূরণ করতে পারছেন। এখানে প্রতিটি সেবা নেওয়ার প্রক্রিয়া গ্রাহকদের জন্য অত্যন্ত সহজ। এনপিএসবি ও আরটিজিএসের মাধ্যমে অন্য ব্যাংকে রিয়েল টাইম ফান্ড ট্রান্সফার থেকে শুরু করে গ্রাহকেরা এ অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল টপআপসহ বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধও করতে পারছেন ঝামেলাহীনভাবে। এ ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থার ফলে গ্রাহকদের এখন আর ব্রাঞ্চে যেতে হচ্ছে না কিংবা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এখানে নেই কোনো ট্রানজেকশন ফি। গ্রাহকেরা হাতের নাগালেই পাচ্ছেন নিরাপদ ও সুরক্ষিত ব্যাংকিং সেবা।
গ্রাহকদের দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় পরিকল্পনাও সহজ করেছে আস্থা অ্যাপ। গ্রাহকেরা খুব সহজেই আস্থা অ্যাপের মাধ্যমে এফডিআর ও ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার পাশাপাশি সেগুলো এনক্যাশও করতে পারছেন এখান থেকে। এ ছাড়া এ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকেরা পিন জেনারেট কিংবা রিসেট করা, কার্ড সাময়িকভাবে ব্লক করা, এমনকি নমিনির তথ্যও হালনাগাদ করতে পারছেন খুব সহজেই। যাঁরা দ্রুততা এবং পরিকল্পিত আর্থিক সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেন, এই সেবাগুলো তাঁদের জীবনকে করেছে আরও সহজ ও নিশ্চিন্ত।
আস্থা অ্যাপের ‘ক্যাশ আউট বাই কোড’ ফিচারের মাধ্যমে এটিএম থেকে কার্ড ব্যবহার ছাড়াই খুব সহজে টাকা উত্তোলন করা যায়, যা গ্রাহকদের জন্য উন্মোচন করেছে প্রচলিত এটিএম ট্রানজেকশনের এক আধুনিক বিকল্প ব্যবস্থা। বিকাশ, রকেট ও ইনস্যুরেন্স পেমেন্টের মতো পৌনঃপুনিক লেনদেনগুলোকে স্ট্যান্ডিং ইনস্ট্রাকশন ফিচারের আওতায় নিয়ে আসা যায়। ফলে গ্রাহক ভুলে গেলেও বিল পেমেন্ট হয় সময়মতো। বিকাশের ‘পুল মানি’ ফিচারটির মাধ্যমে যোগ হয়েছে আরও বিশেষ সুবিধা। আস্থা অ্যাপের এ সুবিধার ফলে গ্রাহকেরা বিকাশ থেকে তাঁদের ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কিংবা ক্রেডিট কার্ডে সরাসরি টাকা ট্রান্সফার করতে পারছেন।
আস্থা অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সহজ ও সুবিন্যস্ত। গ্রাহকেরা অ্যাকাউন্ট নম্বর, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নম্বর, কিংবা ডিপিএস নম্বরের মাধ্যমেই এখানে সাইন-আপ করতে পারেন। এ কারণে প্রক্রিয়াটি সবার কাছেই সহজবোধ্য। এ অ্যাপের মাধ্যমে ইকেওয়াইসিভিত্তিক অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। কার্ড ও ঋণের আবেদনও এখান থেকে সহজেই করা সম্ভব। এ ছাড়া আস্থা অ্যাপে ব্র্যাক ব্যাংকের সব এটিএম বুথ, ব্রাঞ্চ ও মার্চেন্ট লোকেশন বের করা যায়, যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ব্যাংকিং ও লাইফস্টাইলের দারুণ সংমিশ্রণ সবার কাছে আস্থা অ্যাপকে করে তুলেছে অনন্য। এখানে গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুকে একসঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছে। ‘আস্থা লাইফস্টাইলের’ মাধ্যমে গ্রাহকেরা বাসের টিকিট কাটতে পারেন, বিনা মূল্যে প্রথম আলোর ই-পেপার পড়তে পারেন, ‘আস্থা প্লে’র মাধ্যমে গান শুনতে পারেন, এমনকি ‘আস্থা লার্নিং’–এর মাধ্যমে বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়ন কোর্সও করতে পারেন। ‘আস্থা ইসলামিক’-এ রয়েছে এমন সব কনটেন্ট, যেখানে একজন গ্রাহক খুঁজে পাবেন আত্মিক সন্তুষ্টি। এখনকার গ্রাহকদের দরকার ব্যাংকিংয়ের চেয়েও বেশি কিছু। বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েই ব্র্যাক ব্যাংক আস্থা অ্যাপে যুক্ত করেছে দারুণ সব ফিচার।
গ্রাহকদের আর্থিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনায়ও আস্থা অ্যাপ ভূমিকা রাখছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, ট্যাক্স সার্টিফিকেট, চেকবুক কনফারমেশন মুহূর্তেই পাওয়া যায়। এতে আছে ‘পজিটিভ পে’, যা এসএমই গ্রাহক, স্যালারি অ্যাকাউন্টহোল্ডার ও স্বনির্ভর পেশাজীবীদের জন্য জরুরি এক ফিচার। আস্থা অ্যাপের বিল পেমেন্টের ঝামেলাহীন প্রক্রিয়ায় সহজেই ইউটিলিটি বিল এবং সরকারি বিভিন্ন পেমেন্টসহ ভূমি করের মতো পেমেন্টও করা যায়। এসব সুবিধা দেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গ্রাহকদের দেয় বাড়তি সুবিধা।
এই প্ল্যাটফর্ম যত বড় হচ্ছে, ততই এর প্রভাবও বাড়ছে। ৯ লক্ষাধিক ব্যবহারকারীর এ প্ল্যাটফর্ম শুধু বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যাংকিংকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িতই করছে না; বরং একই সঙ্গে দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসার, মানুষের জীবনযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য এবং ব্যাংকিংয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের বিকাশ ঘটাচ্ছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা অ্যাপ সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আস্থা শুধু একটি অ্যাপই নয়, এটি বাংলাদেশের কোটি মানুষের স্মার্ট ভবিষ্যতের এক নতুন দুয়ার। এ অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এটি উদ্ভাবন, গ্রাহককেন্দ্রিকতা এবং সহজ ব্যাংকিংয়ের প্রসারে আমাদের ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, স্বাচ্ছন্দ্যময়, নিরাপদ, সহজ ও স্মার্ট ব্যাংকিং সুবিধার মাধ্যমে আস্থা বাংলাদেশের মানুষের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে বদলে দেবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র হকদ র দ প ল য টফর ম অ য ক উন ট গ র হক র ব যবহ র ল নদ ন র জন য আর থ ক সহজ ই
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই
শুরুতে উদাহরণ হিসেবে যেসব লক্ষণের কথা জানলেন, ব্রেন ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের শুরুতে একই রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সমস্যা হলো, এসব লক্ষণ আর সাধারণ মাথাব্যথা বা ক্লান্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা সত্যিই কঠিন।
দীর্ঘদিন ব্রেন ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের লরা স্ট্যান্ডেন। এই রোগে আক্রান্ত অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে—রোগীরা নিজেরা প্রথম দিকে এসব উপসর্গকে গুরুত্ব দেননি।
এমনকি চিকিৎসকেরাও অনেক সময় ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছেন। ফলে রোগ শনাক্ত হতে দেরি হয়ে গেছে।
আর এই দেরি কিন্তু মারাত্মক। কারণ, ক্যানসার যত দেরিতে ধরা পড়ে, চিকিৎসাও তত জটিল ও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
আসল সমস্যা হলো মস্তিষ্কের ক্যানসারের উপসর্গ অনেকটা আমাদের দৈনন্দিন সমস্যার মতোই। ক্লান্তি, মানসিক চাপ, মাইগ্রেন, এমনকি মেনোপজের সময়ের সমস্যার সঙ্গেও এর মিল আছে।
আবার অনেক সাধারণ রোগের লক্ষণও প্রায় একই রকম। যেমন দুশ্চিন্তা, সাইনাসের সমস্যা বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা।
যখন লক্ষণগুলো অস্পষ্ট আর হালকা থাকে, তখন সেসব উপেক্ষা করা সহজ হয়ে যায়। নিজের মনেই নানা যুক্তি খুঁজে নিই আমরা। তাই অনেকে অপেক্ষা করেন আর ভাবেন, দেখা যাক, সমস্যাটা কত দূর গড়ায়।
অনেকে ব্রেন ক্যানসার হওয়ার দুই-তিন মাস আগে থেকেই লক্ষণ টের পান। কিন্তু সাধারণ সমস্যা ভেবে তা উড়িয়ে দেন। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়।
এবার জেনে নিই সেই ৭টি সমস্যা সম্পর্কে, যেসব আমরা সাধারণ সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণের মধ্যে একটা বা দুটো থাকলেই যে কারও ব্রেন ক্যানসার হয়েছে, তা কিন্তু নয়। তবে কোনো সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে কিংবা একদম অস্বাভাবিক মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনরাতের এই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্ক যেভাবে দ্রুত বুড়িয়ে যায়১১ নভেম্বর ২০২৪১. কথা খুঁজে না পাওয়াঅনেকে হঠাৎ করে নির্দিষ্ট শব্দ মনে করতে পারেন না। পুরো বাক্য বলতে গেলে আটকে যান। কথোপকথনে অংশ নিতে গেলে একটু দেরি হয়।
শব্দ খুঁজে না পাওয়ার সমস্যা অবশ্য ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণেও হতে পারে। কিন্তু যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকে, কিংবা হঠাৎ করে শুরু হয়, তাহলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার।
২. মানসিক ধোঁয়াশাঅনেকের মনে হয়, যেন মাথার ভেতর কুয়াশা জমে আছে। মনোযোগ দিতে পারছেন না, পরিষ্কার করে ভাবতে পারছেন না, কিছু মনে থাকছে না। ফলে রোগ ধরা পড়তে আরও দেরি হয়ে যায়।
এই মাথার ঘোলাটে ভাব অবশ্য অনেক কারণেই হতে পারে। মেনোপজ, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া কিংবা মানসিক চাপ। কিন্তু যদি এই ঘোলাটে ভাবের সঙ্গে আরও কিছু স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন কথা বলতে বা দেখতে সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তনও ব্রেন ক্যানসারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে