পেট্রো ডলারের বন্যায় শেষ হলো ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর
Published: 17th, May 2025 GMT
রীতিমতো পেট্রো ডলারের বন্যায় ভেসে চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের শেষ দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ২০০ বিলিয়ন ডলারের একাধিক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রয়টার্স জানিয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছেন, এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আবুধাবিভিত্তিক আমিরাতের বিমান সংস্থা ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজ ১৪.
আবুধাবিতে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবুধাবির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আগামী এক দশকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করবে আমিরাত। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-আমিরাত এআই অ্যাকসেলারেশন পার্টনারশিপ নামে একটি কাঠামো গঠনে একমত হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকের পর ট্রাম্প ও আল নাহিয়ান পাঁচ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন এআই ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এআই স্থাপনা।
এ চুক্তির বিষয়ে এআই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এআই চিপে অধিকতর অ্যাকসেস পাবে আমিরাত। সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে এই প্রযুক্তি চীনের হাতে চলে যেতে পারে– এ আশঙ্কায় এতদিন এই বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইরান বিষয়ে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘ইরানের কাছে পারমাণবিক চুক্তির একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং এখন তাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তারা জানে, দ্রুত না এগোলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।’ ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য আলোচনা করছেন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, যুদ্ধ ছাড়াই আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র ত র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহে জাপানে ৯০০ ভূমিকম্প
গত দুই সপ্তাহে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের দূরবর্তী তোকারা দ্বীপপুঞ্জে ৯০০টিরও বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। এতে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় নির্ঘুম রাত পার করছেন দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা। তোকারা দ্বীপপুঞ্জের ১২টি দ্বীপের মধ্যে সাতটিতে প্রায় ৭০০ মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে দূরবর্তী কয়েকটি দ্বীপে কোনো হাসপাতাল নেই।
বিবিসি জানায়, গত বুধবার ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২১ জুন থেকে দ্বীপপুঞ্জটিতে ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে পরিস্থিতির অবনতি হলে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, তোকারা এলাকায় এর আগেও ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এবার কম্পনের মাত্রা অন্য সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিক।
স্থানীয় গণমাধ্যম এমবিসিকে এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঘুমাতেও ভয় লাগে। মনে হয়, সব সময়ই মাটি কাঁপছে।’
ভূমিকম্পের কারণে দ্বীপপুঞ্জটির কিছু গেস্ট হাউস পর্যটক আসা বন্ধ করেছে। এসব গেস্ট হাউস স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। তোশিমা গ্রামের ওয়েবসাইটে স্থানীয়দের সাক্ষাৎকার ও প্রশ্ন না করতে অনুরোধ জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তোশিমা গ্রামের কিছু বাসিন্দা ঘুমের অভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অতিরিক্ত প্রশ্ন করে ও সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের আর বিরক্ত না করতে কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আকুসেকিজিমা দ্বীপের বাসিন্দা চিজুকো আরিকাওয়া (৫৪) দেশটির দৈনিক আসাহি শিম্বুনকে বলেন, ভূমিকম্প হওয়ার আগে মহাসাগর থেকে অদ্ভুত একটি গর্জন শোনা যায়, বিশেষ করে রাতে। এটা ভীতিকর। সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমরা সবাই চাই, এটা বন্ধ হোক।
আকুসেকিজিমার বাসিন্দাদের সমিতির সভাপতি ইসামু সাকামোতো (৬০) বলেন, অনেক ভূমিকম্প হওয়ার পর মাটি না কাঁপলেও খালি মনে হয় কাঁপছে। নিচে থেকে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ভূমিকম্প শুরু হয়। তার পর বাড়িগুলো দুলতে থাকে। এটি বিরক্তিকর।
কয়েক দশক ধরে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছে জাপান। ১০০ বছর পর একবার এমন ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে এ রকম ভূমিকম্পে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন।