রীতিমতো পেট্রো ডলারের বন্যায় ভেসে চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের শেষ দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ২০০ বিলিয়ন ডলারের একাধিক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রয়টার্স জানিয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছেন, এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আবুধাবিভিত্তিক আমিরাতের বিমান সংস্থা ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজ ১৪.

৫ বিলিয়ন ডলার খরচে ২৮টি বোয়িং ৭৮৭ এবং ৭৭৭এক্স বিমানের ক্রয়াদেশ নিশ্চিত করেছে। বোয়িংয়ের এসব বিমানে জিই এরোস্পেসের তৈরি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আমিরাতের এই বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান উৎপাদন ও রপ্তানিতে গতি আনবে।

আবুধাবিতে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবুধাবির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আগামী এক দশকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করবে আমিরাত। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-আমিরাত এআই অ্যাকসেলারেশন পার্টনারশিপ নামে একটি কাঠামো গঠনে একমত হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকের পর ট্রাম্প ও আল নাহিয়ান পাঁচ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন এআই ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এআই স্থাপনা।

এ চুক্তির বিষয়ে এআই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এআই চিপে অধিকতর অ্যাকসেস পাবে আমিরাত। সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে এই প্রযুক্তি চীনের হাতে চলে যেতে পারে– এ আশঙ্কায় এতদিন এই বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইরান বিষয়ে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘ইরানের কাছে পারমাণবিক চুক্তির একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং এখন তাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তারা জানে, দ্রুত না এগোলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।’ ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য আলোচনা করছেন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, যুদ্ধ ছাড়াই আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র ত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’ স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’ স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এজন্যে তিনি ‘মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি’ আইন করার কথা বলেছেন।

আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নতুন ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই ব্যাংক প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর মতো হবে না। ব্যাংক চলবে বিশ্বাস ও আস্থার ওপর ভিত্তি করে। যেখানে ঋণ নিতে জামানত লাগবে না। এর পাশাপাশি এই ব্যাংকের বড় উদ্দেশ্য হবে সামাজিক ব্যবসাকে ছড়িয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। আমরা ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়ার সরঞ্জাম তার হাতে তুলে দেব। বিনিয়োগের টাকা পেলে মানুষ বিশেষ করে তরুণরা নিজের বুদ্ধি দিয়ে ব্যবসা চালু করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারীরা কেউ টাকা মেরে চলে যায়নি। অথচ প্রচলিত ধারার অনেক ব্যাংক হাওয়া হয়ে গেছে। ব্যাংকের টাকা নিয়ে অনেকে উধাও হয়েছে। তাই আমাদের এখন প্রকৃত ব্যাংকের দিকে নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, সেটাই প্রকৃত ব্যাংক যার ওপর মানুষ বিশ্বাস, আস্থা রাখে যেমন- ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’। এ সময় অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি গঠনের ইতিহাস তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এমআরএ কেবল বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণের জন্য নয়, বরং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের জন্যও ভালো কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অর্থউপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ