বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বা সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে কলকাতাসহ বাকি অংশের বিকল্প সংযোগের চিন্তা করছে ভারত। এ জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয়ের শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত এই মহাসড়ক (হাইওয়ে) হলো মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি মডেল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। 

বর্তমানে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে ভারতের বাকি অংশের জন্য একমাত্র প্রবেশপথ হলো শিলিগুড়ি করিডোর, যা ‘চিকেনস নেক’ নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশপথ হলো– বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে যাওয়া যায়। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করায় বিকল্প পথের কথা ভাবছে ভারত। এ জন্য মিয়ানমারের যৌথভাবে কালাদান প্রকল্পকে চিহ্নিত করেছে দিল্লির সরকার। শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই এই কালাদান প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে পূর্বাঞ্চলে ভারতের ভূরাজনৈতিক অবস্থানও অনেক মজবুত হবে। 

গত ৩০ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শিলং-শিলচর মহাসড়ক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ১৪৪.

৮ কিলোমিটার মেঘালয়ে ও ২২ কিলোমিটার আসামে অবস্থিত। এই মহাসড়কটি চালু হলে সেভেন সিস্টার্সে ভ্রমণ সাড়ে ৮ ঘণ্টা থেকে কমে ৫ ঘণ্টায় নেমে আসবে। 

ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই বিকল্প সংযোগ রক্ষাকারী প্রকল্পটিকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

গত মার্চ মাসে বেইজিং সফরকালে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স স্থলবেষ্টিত। তাদের সমুদ্রে কোনো অ্যাকসেস নেই। আমরাই এই গোটা অঞ্চলে সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।’ ইউনূসের ওই বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ভারত। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প কল প স ব কল প

এছাড়াও পড়ুন:

‘শান্তির জন্য ভূখণ্ড ছাড় নয়’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে শান্তিচুক্তি করার জন্য রাশিয়াকে কোনো ভূখণ্ড ছাড় দেবে না তারা। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ ধরনের চুক্তি করার কোনো সুযোগ নেই। তারা হোয়াইট হাউসে একটি সংশোধিত শান্তি পরিকল্পনা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লন্ডনে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গত সোমবার তিনি এ কথা বলেন।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে কয়েক দিন ধরে টানা আলোচনা হয়। তবে যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এএফপির খবরে বলা হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি নতুন প্রস্তাব পাঠাতে পারেন তাঁরা। ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে আমাদের ওপর চাপ দিচ্ছে রাশিয়া, কিন্তু আমরা কোনো ভূখণ্ড ছাড় দেব না। ইউক্রেনের আইন, সংবিধান এমনকি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই। নৈতিকভাবেও আমরা এটা করতে পারি না।’

রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ বলেছেন, ইউক্রেনের সম্মুখসারির বিভিন্ন অংশে রুশ বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্কের কাছে অবস্থিত মিরনোহরাদকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। রাশিয়ার দাবি, তারা পোকরোভস্ক দখল করেছে। এর ফলে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—এই দুই প্রতিবেশী অঞ্চল নিয়ে গঠিত ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ক্ষেত্রে পুতিন আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ