নগর ভবনের সামনে আজও ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভ
Published: 18th, May 2025 GMT
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে টানা পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তার সমর্থকরা।
রবিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে লোকজন নগর ভবনের সামনে আসতে থাকেন। মানুষের চাপ বাড়ায় নগর ভবনের সামনের সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে গত ১৪ মে নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে কয়েকশ মানুষ। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
গতকালও একই দাবিতে বেলা ১১টার দিকে নগর ভবন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে লোকজন গোলাপশাহ মাজার, জিপিও হয়ে পল্টনের দিকে এগোতে থাকে। জিপিও মোড় থেকে সচিবালয়ের দিকে প্রবেশের পথে পুলিশ ব্যারিকেড দেওয়ায় বিক্ষোভকারীরা পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর বিক্ষোভকারীরা আবার নগরে ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ চেয়ে নানা স্লোগান দেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.
ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পেয়ে ২২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চায় নির্বাচন কমিশন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
কিন্তু অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাকের শপথের আয়োজন এখনো হয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আন্দোলনকারীরা।
ঢাকা/রায়হান/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আটঘরিয়ার কোনো মসজিদে জামায়াতের ইমাম-মুয়াজ্জিন নামাজ পড়াতে পারবেন না
পাবনার আটঘরিয়ায় কোনো মসজিদে জামায়াতের কোনো ইমাম-মুয়াজ্জিন নামাজ পড়াতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বিএনপির নেতা-কর্মীদের দেখতে গিয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ১১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দল যেটা সিদ্ধান্ত দেবে, সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি ১০০ পারসেন্ট একমত। সেটা আমি যদি পছন্দ না করি, আমার মতের সঙ্গে না-ও মেলে। কিন্তু আমি আজকে বলব, ভবিষ্যৎ তো পরে, আর কোথাও না হলেও এখন থেকে আটঘরিয়ায় কোনো মসজিদে জামায়াতের কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবেন না, জামায়াতের কোনো ইমাম ইমামতি করতে পারবেন না। এটা পরিষ্কার ঘোষণা, যেখানে যাবেন আগামী জুমায় প্রতিবাদ করবেন।’
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর কোনো লোক, তারা মিথ্যা কথা বলে। তাদের পেছনে নামাজ হয় না। তারা কত মুনাফেক যে দেবোত্তর বাজার মসজিদে তালা মেরে চলে গেছে। ওরা যে অন্যায়কারী, মসজিদের ইমাম এবং মুয়াজ্জিন দুজনই তালা মেরে চলে গেছে। কালকে জুমার নামাজ পড়তে পারেনি মানুষ। মসজিদে পড়তে না পেরে মাঠে পড়েছে। পরে মনে হয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মসজিদ খোলা হয়েছে।’
আটঘরিয়ার দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্যপদ নিয়ে বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও দুই দলের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ শুরু করে। শুক্রবার সকালে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিকেলে জামায়াতের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির নেতারা। এরপর গতকাল বিকেলে আহত নেতা-কর্মীদের দেখতে গিয়ে কথা বলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা যেভাবে একতরফা মারত, তারাও (জামায়াত) সেভাবে মেরেছে। আবার জঘন্য ভাষায় বক্তব্য দিয়েছে।’ এর প্রতিবাদে তিনি সাধারণ মানুষকে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জামায়াত-শিবির স্বাধীনতাবিরোধী। এরা রগ কাটা গ্রুপ, এরা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, বায়ান্নর সালের ভাষা আন্দোলনে বিশ্বাস করে না। এরা শহীদ মিনারে যায় না, জাতীয় স্মৃতিসৌধে যায় না। এরা স্বাধীনতাবিরোধী, মৌলবাদী, এরা মিথ্যাচার করে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘কত বড় নৃশংস হায়েনা হলে এবং ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা থাকলে নিজেরা কোরআন পুড়িয়ে সেই কোরআন নিয়ে কালকে মিছিল করে। সারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চেয়েছে যে, এখানে বিএনপির লোকেরা কোরআন পুড়িয়েছে।’
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের লোকেরা কোরআন পোড়াতে পারে না। কোরআন পোড়ায়নি। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীর যদি প্রচণ্ড রাগ হয়ে যায়, তাঁর বাবার সঙ্গে যদি ঝগড়া লাগে, সেই বাবাকে ছুরি দিয়ে কোপাতে পারে রাগের বশবর্তী হয়ে। তাঁর ভাইবোন যদি অন্যায় করে তবে কেটে টুকরা টুকরা করতে পারে। তবে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী কোরআন পোড়াতে পারে না, এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’ যাঁরা মিথ্যাচার করছে তাঁদের বিচার হতে হবে।