ঢাকার সাভারে ইজিবাইকের এক চালককে শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার হেমায়েতপুরের মধুরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিন ঘণ্টা ধরে ওই চালককে নির্যাতনের পর এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত গ্যারেজ মালিক রফিক আহমেদ গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলাম জামালপুর সদরের বাসিন্দা। তিনি হেমায়েতপুরের মধুরচর এলাকার ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। আজিজুল জানিয়েছেন, গত রমজানে তিনি পাশের যাদুরচরের গ্যারেজ মালিক রফিক আহমেদ ওরফে রংপুরের রফিকের একটি ইজিবাইক ভাড়ায় চালাতে শুরু করেন। ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগেই ছিনতাইকারীরা সেটি ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশ বৈঠক করেন। সেখানে আজিজুলকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাঁকে জানানো হয়, প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে কিস্তিতে ওই টাকা শোধ করতে হবে। এভাবে কিস্তি দিতে দিতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।
তাঁর স্বজনরা জানায়, মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় শনিবার আজিজুল ইজিবাইক নিয়ে বাইরে যেতে পারেননি। এ কারণে এদিন কিস্তির ৫০০ টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্যারেজ মালিক রফিক রোববার সকালে আজিজুলের বাসায় আসেন। সকাল ৮টার দিকে তাঁর কোমরে তালা দিয়ে শেকলে বেঁধে মারধর করেন রফিক। বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রতিবেশী কেউ আজিজুলকে সহায়তা করতে আসেননি। এ সময় বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকজন এলাকাবাসী দুপুর ১২টার দিকে তালা ভেঙে তাঁকে মুক্ত করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইজিবাইক ব্যবসায়ী রফিক আহমেদের খোঁজ করে এলাকায় পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন। কয়েক দফায় ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি। মেসেজ দিলেও রাত পর্যন্ত উত্তর মেলেনি।
সাভার থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল মিঞার ভাষ্য, এ ঘটনায় রাত পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত
ব্যবস্থা নেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আজ জ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা, সতর্কতায় মাইকিং
গত বছরের শেষ দিকে শেরপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষত এখনো শুকায়নি। এর মধ্যে আবারও বন্যার আগাম বার্তায় আতঙ্কে জেলার তিন উপজেলার লাখো মানুষ।
গত দু’দিনের বৃষ্টি ও উজানে ভারতের মেঘালয়ে টানা বৃষ্টির কারণে শেরপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীতে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সব কটি নদ-নদীর পানি এখন পর্যন্ত বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, আগামী ২০ মে পর্যন্ত ময়মনসিংহ, সিলেট ও রংপুর বিভাগের নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। এতে জনজীবনের পাশাপাশি কৃষি খাতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বন্যা মোকাবিলায় শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ের কৃষকদের দ্রুত আধা পাকা ধান কেটে নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় যেসব ধান ৮০ শতাংশের বেশি পেকে গেছে, তা দ্রুত কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত শনিবার (১৭ মে) রাতে ও গতকাল রোববার সকালে কয়েক দফা মাঝারি বর্ষণের কারণে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের বাগেরভিটা এলাকায় সোমেশ্বরী নদীতে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজে ময়লা-আবর্জনা আটকে পানির তোড়ে পাশের সড়কের কিছু অংশ এবং একটি দোকান আংশিক ভেঙে গেছে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত কোনো এলাকা বা বাড়িঘর প্লাবিত হয়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা প্রতিটি উপজেলায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করছি। পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হচ্ছে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও বন্যা মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।