Prothomalo:
2025-05-19@08:05:46 GMT

ভিনি জুনিয়র: অতি অল্প হইল…

Published: 19th, May 2025 GMT

দরিদ্র এক পরিবারের ছেলে প্রতিভাবান ফুটবলার। বল পায়ে দৌড়াতে দৌড়াতে জিতেছে ইউরোপ। একাধিকবার। হয়েছেন ফিফার ‘বেস্ট’। কিন্তু গায়ের রং কালো বলে শুনতে হয় গালমন্দও। মাঠের মতো গ্যালারি সঙ্গে সেই লড়াইয়েও একবিন্দু ছাড় দেয় না ছেলেটি।

পর্দায় মানুষের শূন্য থেকে সুবিশাল হয়ে ওঠার এমন গল্প সবার বরাবরই পছন্দের। কারণ, মানুষ বাঁচে আশায়, প্রেরণায়। নেটফ্লিক্সের ‘ভিনি জুনিয়র’ অথবা ‘বাইলা ভিনি’ (নাচো ভিনি) তথ্যচিত্রে এই প্রেরণাটুকুই নেই। তা ছাড়া সব আছে। সাও গনসালোয় রাস্তার দেয়ালে বল মেরে ফিরতি বলে ড্রিবলিং শেখা থেকে ফ্লামেঙ্গো, রিয়াল মাদ্রিদ, ব্রাজিল জাতীয় দল, চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ…শুধু প্রাণটুকুই যেন নেই!

কিছু ভিডিও, ভিনিসিয়ুসের পরিবার ও বন্ধুবর্গ, রিয়াল সতীর্থ, কোচ—বিভিন্ন সময়ে ভিনিকে নিয়ে তাঁদের কথামালা এবং সিংহভাগ সময়ে বর্ণবাদ ইস্যুই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। আর ভিনির নিজের আত্মকথন তো আছেই। দেখে মনে হয়, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ভিডিও নিয়ে তা সম্পাদনার কাজটি ভালোভাবে করতে পারলে বুঝি এমন তথ্যচিত্র বানানো সম্ভব!

খেলাধুলার তারকাদের জীবন নিয়ে বানানো তথ্যচিত্রে খেলোয়াড়ই কেন্দ্রবিন্দু, ভিনির তথ্যচিত্রে তা খুব ভালোভাবে মানা হলেও সবকিছুই যেন ভাসা ভাসা। নেই গভীর কোনো ডুব। এখন পর্যন্ত তাঁর গোটা ক্যারিয়ারই ভাসা ভাসা কথামালা ও ভিডিওতে সাজানো, কিন্তু নেই সাও গনসালোর ‘স্ট্রিট ফুটবল’কে বার্নাব্যু পর্যন্ত নিয়ে আসার শিকড়ের সুলুকসন্ধান।

আরও পড়ুনচাক দে! ইন্ডিয়া: শাহরুখের সেরা সিনেমা, মসলার বাইরে সাহসী বলিউড১২ মে ২০২৫

তবে একেবারে যে কিছু নেই, তা–ও নয়। ক্লাবের সাপ্তাহিক নির্দেশনা মেনে ভিনির বাড়ির শেফ তলেতলে খাবারে কী মেশান, সেটার বিবরণ আছে। ভিনির বিলাসবহুল বাড়ির ভেতরে সুইমিংপুল, সেলুন, ডাইনিং থেকে বাড়ির বাইরের ‘লুক’—এসব ঘুরেফিরে এসেছে অনেকবার।

ভিডিও ক্লিপের ফাঁকে ফাঁকে সবার কথা শুনে নতুন কিছু জানার সুযোগ খুব কম। মেস্তায়ায় ‘বানর, বানর’ বলে গ্যালারির চিৎকার, ব্রিজের মাঝে ভিনির জার্সি পরানো একটি কুশপুত্তলিকার ফাঁসির ছবি ছাড়া বাকি সব শুনে ও দেখে প্রশ্ন জাগতে পারে, নতুন কী জানলাম?

ভিনিকে নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র দেখা যাবে নেটফ্লিক্সে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কীভাবে ভারত–পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক সীমান্ত হয়ে উঠল

ভারত ও পাকিস্তানকে বিভাজনকারী নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বসবাস করার অর্থ যেন এক অনিশ্চিত জীবন কাটানো। সব সময়ই সংঘাতের আশঙ্কা তাঁদের ঘিরে থাকে। সেখানে শান্তি যেন এই আছে, এ নেই।

সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশ আবারও যুদ্ধের প্রান্তে এনে দাঁড়িয়েছিল। নিয়ন্ত্রণরেখার দুপাশেই গোলাবর্ষণ হয়েছে—ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় ভারতের অংশে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর পাকিস্তান দাবি করেছে, সেখানে ৪০ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে সরাসরি গোলাবর্ষণের কারণে প্রাণহানির সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কানাডায় বসবাসরত পাকিস্তানি লেখক আনাম জাকারিয়া বিবিসিকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখায় বসবাসরত পরিবারগুলোকে ভারত ও পাকিস্তানের খেয়ালখুশি এবং দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনার শিকার হতে হচ্ছে।’

পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর নিয়ে একটা বই লিখেছেন আনাম জাকারিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রতিবার গুলি চলা শুরু হলে অনেকে বাংকারে ঢুকে পড়েন, গবাদিপশু ও জীবিকা নষ্ট হয়। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল—সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের দৈনন্দিন জীবনে এই নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতার গভীর ছাপ পড়ে।’

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মোট ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখার দৈর্ঘ্য ৭৪০ কিলোমিটার। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার বিস্তৃত আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখার নাম শুরুতে ‘যুদ্ধবিরতি রেখা’ ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম যুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে এটি এ নামে পরিচিত হয়। ১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির আওতায় এটিকে ‘নিয়ন্ত্রণরেখা’ নামে পুনঃ নামকরণ হয়।

কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চলে গেছে নিয়ন্ত্রণরেখা। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। তবে দুই দেশই এর কিছু কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম সামরিকীকৃত সীমান্ত। সেখানে সব সময়ই যেন সংঘাতের আশঙ্কা বিরাজ করে। যুদ্ধবিরতিগুলো ততক্ষণই স্থায়ী হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না পরবর্তী উসকানি আসে।

কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চলে গেছে নিয়ন্ত্রণরেখা। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। তবে দুই দেশই এর আলাদা আলাদা অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম সামরিকীকৃত সীমান্ত। সেখানে সব সময়ই যেন সংঘাতের আশঙ্কা বিরাজ করে। যুদ্ধবিরতিগুলো ততক্ষণই স্থায়ী হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না পরবর্তী উসকানি আসে।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হ্যাপিমন জ্যাকবের মতে, এই এলাকায় হালকা মাত্রার গোলাগুলি থেকে শুরু করে বড় পর্যায়ে ভূমি দখল বা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পর্যন্ত—বিভিন্নভাবে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন হতে পারে। (ভূমি দখলের অর্থ হতে পারে পাহাড়ের চূড়া, সেনাচৌকি বা বাফার জোনের মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো জোরপূর্বক দখল করে নেওয়া)।

বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, নিয়ন্ত্রণরেখা হলো ‘রক্তে আঁকা ও সংঘাতে গড়া’ একটি সীমান্তের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

আনাম জাকারিয়া বলেন, ‘এটি এমন একটি রেখা, যেটিকে ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরিদের মতামত বিবেচনায় না নিয়ে নিজেদের মতো করে টেনেছে। তারা এর সামরিকীকরণ করেছে, অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে।’

ভারত–পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় এক পাকিস্তানি সেনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ