পিএসএল খেলতে বিসিবির অনুমতি পেলেন মিরাজ
Published: 19th, May 2025 GMT
সাকিব আল হাসানের পর পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলবেন আরেক বাংলাদেশি অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। আসরের শেষ ধাপে খেলার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। আজ বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, ২২ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত পিএসএলে অংশ নিতে মিরাজকে এনওসি দেওয়া হয়েছে। তিনি লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলবেন এলিমিনেটর রাউন্ডে।
জানা গেছে, লাহোরের হয়ে খেলা সিকান্দার রাজার রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে মিরাজকে চেয়েছে দলটি। গতকাল পেশাওয়ার জালমিকে ২৬ রানে হারিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে লাহোর। ১০ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ পর্ব শেষ করে তারা নিশ্চিত করেছে প্লে-অফ। ২২ মে এলিমিনেটর ম্যাচে খেলবে লাহোর।
জাতীয় দলের বর্তমান টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে না থাকায় মিরাজের পিএসএল খেলা নিয়ে কোনো বাধা দেয়নি বিসিবি। বরং বোর্ড বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে। চলতি আসরের শুরুতে পিএসএল ড্রাফট থেকে দল পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার—লিটন দাস, নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন। তবে ইনজুরির কারণে এক ম্যাচও না খেলেই দেশে ফেরেন লিটন।
রিশাদ লাহোরের হয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেললেও নাহিদ মাঠে নামার সুযোগ পাননি। ৯ মে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে সাময়িকভাবে পিএসএল বন্ধ হয়ে গেলে দেশে ফিরে আসেন তারা। বর্তমানে এই দুই ক্রিকেটার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে থাকা জাতীয় দলে রয়েছেন। ফলে তাদের আর দেখা যাবে না এবারের আসরে।
এই অনুপস্থিতির সুযোগেই দলে ডাক পান সাকিব আল হাসান। শনিবার রাতে পেশোয়ারের বিপক্ষে লাহোরের হয়ে অভিষেকও হয়ে গেছে তার। এবার সেই একই দলে যাচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজও।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোধুলি বেলায় আলোর দেখা
মুখে সেই চেনা হাসি। প্রিয় কালো রঙের জ্যাকেট। মাথায় একই রঙের ক্যাপ। টি-শার্টটা ছাই রঙা। তার হাস্যোজ্জ্বল মুখটাই বলে দিচ্ছিল, প্রিয় ভুবনে ফেরার আনন্দ কতটা।
মাসখানেক আগেও যে সফর ছিল অনিশ্চিত, সময়ের ব্যবধানে সেখানেই ফিরে আসা। তাই তো মুখে চওড়া হাসি নিয়ে সাকিব আল হাসানকে বলতে শোনা গেল,“খুবই উচ্ছ্বসিত।”
পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) এখন সাকিবের ঠিকানা লাহোর কালান্দার্স। স্থগিত হওয়া পিএসএলে বাকি ম্যাচগুলোতে অংশ নিতে সাকিব গেছেন পাকিস্তানে। অন্তত চার ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলেছে তার। সাড়ে পাঁচ মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরছেন ৩৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। সর্বশেষ তাকে দেখা গেছে আবুধাবি টি-টেন ক্রিকেটে। সেখানে বাংলা টাইগার্সের হয়ে শেষ ম্যাচটি খেলেছেন ৩০ নভেম্বর। এর পর নানা ঘটনায় আটকে গেছে তার ২২ গজে ফেরা।
দেশের ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি। জাতীয় দলে উপেক্ষিত। খেলার সুযোগ পাননি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও। সঙ্গে যোগ হয়েছিল বোলিং অ্যাকশনের উটকো ঝামেলা। সব পথ পেরিয়ে, সব ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা এখন মাঠে নামার অপেক্ষায়।
সাকিবের ভাগ্য খুলেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধর কারণে। পিএসএল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক বিদেশি ক্রিকেটার পাকিস্তান ছেড়েছিলেন। তাদের ফেরার সম্ভাবনা না থাকায় পিএসএল কর্তৃপক্ষ তাকাচ্ছে নতুন মুখের দিকে। সাকিব অ্যাভেইলেভেল থাকায় তাকে লুফে নিয়েছে লাহোর কালান্দার্স।
আট বছর পর সাকিবের অপেক্ষায় পিএসএল। এর আগে দুইবার খেলেছেন করাচি কিংস এবং পেশোয়ার জালমির হয়ে। করাচির হয়ে ৮ ম্যাচ ও পেশোয়ারের হয়ে ৫ ম্যাচ খেলেছেন। এবার তার ঠিকানা লাহোর।
সুযোগ আসবে কি না, সাকিব মাসখানেক আগেও নিশ্চিত ছিলেন না। তবে, ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ব্যাট-বলের জং ছাড়াতে ও শরীরের জড়তা দূর করতে সাকিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে গিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে। যেখানে ৮-১০ দিন অনুশীলন করেছেন।
জাতীয় দলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু, বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় সাকিবকে পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না আইপিএল, পিএসএল কিংবা অনান্য লিগ। বোলিং অ্যাকশন শুধরে ছাড়পত্র পাওয়ার পর সাকিবকে নিয়ে নতুন লড়াই শুরু করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তার এজেন্ট সেকেন্ড ইনিংস স্পোর্টস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট (এসআইএসই)। ২০১৪ সাল থেকে সাকিবের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দেখভাল করছে প্রতিষ্ঠানটি।
পিএসএল নতুন করে শুরু হওয়ায় আশার দুয়ার খুলে যায়। সাকিবকে লাহোরের সঙ্গে যোগাযোগের সব ব্যবস্থা করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর সাকিবের এখন লাহোরের জার্সিতে মাঠে নামার পালা।
বয়স বাড়ছে প্রতিনিয়ত। মাঠে থাকার সময়ও ফুরিয়ে আসছে সাকিবের। গোধুলির এই সময়টা হুট করে আসা সুযোগটি সাকিবের কাছে নিশ্চিতভাবে বিরাট পাওয়া। আলোর দেখা পেয়ে সাকিবও জ্বলে ওঠার অপেক্ষায়। ব্যাট-বলের দারুণ রসায়নে ২২ গজে চেনা দ্যুতি ছড়িয়ে ধ্রুপদী হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের তারকা, এমন চাওয়া তো কোটি ক্রিকেটভক্তের।
ঢাকা/ইয়াসিন/রফিক