গাইবান্ধার সাঘাটায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ না করে গোডাউনে মজুদ রেখে বিক্রির সময় ডিলার আফজাল হোসেনকে এক টন চালসহ জনগণ হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বোনারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বোনারপাড়া খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার আফজাল হোসেন দীর্ঘদিন থেকে বোনারপাড়া কলেজের সামনে গোডাউনে রেখে চাল বিতরণ করতেন কার্ডধারীদের মধ্যে । কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে ওই ডিলার উপকারভোগীদের মধ্যে চাল কম বিতরণ করে গোডাউনে মজুত করছিলেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিলার আফজাল হোসেন এক টন ( ১ হাজার কেজি) চাল বিক্রির জন্য ভ্যানে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চালসহ আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা এসে চাল উদ্ধার ও ডিলার আফজাল হোসেনকে আটক করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাঘাটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফাহাদ ইবনে সালাম বলেন, ‘‘আজকে তার গুদাম বন্ধ ছিল। অথচ গুদাম থেকে এক হাজার কেজি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির সময় জনগণ হাতেনাতে আটক করে পুলিশ এবং আমাদের খবর দেয়। এরপর সেখানে গিয়ে চাল জব্দ করা হয় এবং ডিলারকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় খাদ্য বিভাগ থেকে মামলা করা হবে।’’
আরো পড়ুন:
নাশকতা মামলায় সাংবাদিক ও আ.
এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহতের ঘটনায় বাসচালক গ্রেপ্তার
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি আটক রয়েছেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ড ল র আফজ ল হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপন–কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেটসহ যাবতীয় কাজ শেষ করার আহ্বান
জরুরি ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপন, সচিবালয়ের কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেট প্রজ্ঞাপনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
আজ সোমবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে খসড়া অনুমোদনের পর গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হলে অধস্তন আদালত ও প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত সব প্রশাসনিক ও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে এই সচিবালয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে বলেছে, জারি করা অধ্যাদেশের ধারা ১ (২)–এ উল্লেখ রয়েছে, ‘(২) সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপন সম্পন্ন ও ইহার কার্যক্রম পূর্ণরূপে চালু হওয়া সাপেক্ষে সরকার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে, ধারা ৭–এর বিধানাবলি সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কার্যকর করিবে।’ অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার আইন হলেও তা বাস্তবায়ন হওয়ার আগপর্যন্ত বিচারকদের বদলি, পদায়ন, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান–সংক্রান্ত বিষয় সরকারের অধীনই রয়ে গেছে। তাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে তার মেয়াদের মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে পৃথক সচিবালয় স্থাপন ও এর কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেট প্রজ্ঞাপনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের জনগণের বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অন্যতম বন্দোবস্ত এবং ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ঐতিহাসিকভাবে আলোচিত হলেও তা বিভিন্ন কারণে এ দেশে বাস্তবায়ন করা হয়নি। ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত মাসদার হোসেন মামলার রায়ে স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হলেও কার্যত তা নির্বাহী বিভাগের অধীন থেকে যায়। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আপামর জনগণ স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আশাবাদী হয়। অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো তরুণ বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইয়ং জাজেস ফর জুডিশিয়াল রিফর্ম’ তাদের ১২ দফা দাবি ঘোষণা করে। এর ১ নম্বর দফা ছিল সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের প্রধান বিচারপতি সারা দেশের বিচারকদের সম্মুখে অভিভাষণের সময় স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, যা বিচারকদের মনে অকৃত্রিম আশার সঞ্চার করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েশন ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর অফিশিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গত ১ বছরে স্বাধীন বিচার বিভাগ ও পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সব বিচারক এবং বিচার বিভাগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ও সেমিনারের আয়োজন করে।
‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হয়ে থাকবে’
বিবৃতিতে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ৩০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেছে, যা এ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য অ্যাসোসিয়েশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সর্বোপরি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।