যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (পেন্টাগন) শুক্রবার সাংবাদিকদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে ভবনের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় আনুষ্ঠানিক অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ ও তথ্য সংগ্রহের সুযোগ অনেকটাই সীমিত হয়ে গেল।

পেন্টাগনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সাংবাদিকরা এখন শুধুমাত্র ভবনের নির্দিষ্ট কিছু করিডরে ঘোরাফেরা করতে পারবেন, যা মূলত প্রবেশদ্বার ও খাবার কোর্টের আশপাশে সীমাবদ্ধ। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ও জয়েন্ট স্টাফের অফিস স্পেসগুলোতে প্রবেশ করতে হলে এখন থেকে পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অনুমতি ও দাপ্তরিক সহচর থাকা বাধ্যতামূলক। সাংবাদিকদের পেন্টাগন অ্যাথলেটিক সেন্টারে (ভবনের জিম) প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে হেগসেথ লিখেছেন, ‘যদিও প্রতিরক্ষা বিভাগ স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবুও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবেদনশীল ও শ্রেণিবদ্ধ তথ্য রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব- যেগুলোর অননুমোদিত প্রকাশ মার্কিন সেনাসদস্যদের জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে। সরাসরি সাক্ষাতে অনিচ্ছাকৃত বা অননুমোদিত তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি কমাতেই এই নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

প্রেসের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে হেগসেথের অধীনে পেন্টাগন একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই এমন আটটি সংবাদমাধ্যমকে তাদের নির্ধারিত কাজের স্থান থেকে উচ্ছেদ করা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনবিসি নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস, এনপিআর ও পলিটিকোকে তাদের ডেস্ক ছেড়ে দিতে বলা হয়। সেগুলোতে জায়গা করে দেওয়া হয় ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ ওয়ান আমেরিকা নিউজ নেটওয়ার্ক, নিউইয়র্ক পোস্ট, ব্রেইটবার্ট নিউজ এবং হাফপোস্টকে।

এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে পেন্টাগন আরও চারটি সংবাদমাধ্যম- সিএনএন, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য হিল ও ওয়ার জোন’কেও তাদের ডেস্ক ছাড়তে বলে। তাদের জায়গায় স্থান পায় নিউজম্যাক্স, ওয়াশিংটন এক্সামিনার, ডেইলি কলার ও দ্য ফ্রি প্রেস। পেন্টাগন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন এই সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
এর কয়েক সপ্তাহ পর, ২১ ফেব্রুয়ারি, পেন্টাগন ঘোষণা দেয়- কোনো প্রেস ব্রিফিং না থাকলে সাংবাদিকরা আর প্রেস ব্রিফিং রুমে প্রবেশ করতে পারবেন না। সাংবাদিকদের জন্য এ কক্ষটি ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে কাজ করার জন্য ওয়াইফাই সুবিধা ছিল।

সাংবাদিকরা সাধারণত পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের মতো ভবনে কাজের সুবিধার জন্য জায়গা রাখেন, যাতে দ্রুত তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেন। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, পেন্টাগনের রিপোর্টারদের এখন একটি নতুন জাতীয় নিরাপত্তা ব্রিফিং ফর্ম পূরণ করতে হবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিকদের নতুন ধরনের পরিচয়পত্রও ইস্যু করা হবে, যাতে ‘প্রেস’ চিহ্ন আরও স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র জন য নত ন ন প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস-২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে তিন দিনের ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব নিউজ মিডিয়া-২০২৫। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ইনমা) আয়োজিত সংবাদমাধ্যমের এই বিশ্ব সম্মেলন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশের ৬০০-এর বেশি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম নির্বাহীরা অংশগ্রহণ করছেন।

‘ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম কীভাবে এগোবে—বিশ্বরাজনীতি, সার্চ ইঞ্জিনের পতন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের প্রভাব, অর্থনৈতিক সংকট—এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গের জবাব খুঁজবে এই কংগ্রেস।’আর্ল জে উইলকিনসন, নির্বাহী পরিচালক, ইনমা

২১ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত চলা এই বিশ্ব সম্মেলনে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা ও বিশেষজ্ঞদের পরিচালিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের থিম ‘হাউ টু টার্ন ইকোসিস্টেম কেওস ইনটু মিডিয়া অপরচ্যুনিটি’ বা ইকোসিস্টেমের বিশৃঙ্খলাকে কীভাবে গণমাধ্যমের সুযোগে রূপান্তর করা যায়।
ইনমার নির্বাহী পরিচালক আর্ল জে উইলকিনসন সম্মেলন প্রসঙ্গ বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম কীভাবে এগোবে—বিশ্বরাজনীতি, সার্চ ইঞ্জিনের পতন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের প্রভাব, অর্থনৈতিক সংকট—এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গের জবাব খুঁজবে এই কংগ্রেস।’
এবারের ওয়ার্ল্ড কংগ্রসের প্রধান ইভেন্টগুলোর মধ্যে শুরুতেই ছিল শিক্ষাসফর বা স্টাডি ট্যুর। এর অংশ হিসেবে গত সোম ও মঙ্গলবার নিউইয়র্কের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম, যেমন নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, বিবিসি, গার্ডিয়ান ও রয়টার্স কার্যালয় পরিদর্শন করেন ৮৩ জন মিডিয়া প্রতিনিধি। এরপরই রয়েছে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন। নিউইয়র্কের টাইমস সেন্টারে ২১ ও ২২ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মূল সম্মেলন।

মূল সম্মেলনের শেষ দিন রাতে দেওয়া হবে বিশ্ব মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫। এ জন্য নিউইয়র্কের এডিসন হোটেলের বলরুমে আয়োজিত হবে গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ডিনার। এ বছর ৪৯টি দেশের ২৮৬টি মিডিয়া ব্র্যান্ড থেকে ৮৩৯টি অংশগ্রহণপত্র জমা পড়ে।

কাল ২৩ মে লিঙ্কন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে গভীর কৌশলভিত্তিক অধিবেশন। এ ছাড়া সম্মেলনে থাকবে নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট, আস্ক মি এনিথিং সেশন এবং গ্লোবাল মিডিয়া নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিদের জন্য এই সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ, যেখানে গ্লোবাল ট্রেন্ডস, উদ্ভাবনী ধারণা ও সফল রূপান্তরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ থেকে এবারের এই বিশ্ব সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দক্ষিণ এশিয়ার সেরা প্রথম আলো
  • নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস-২০২৫