সেশনজট নিরসনের দাবিতে চবির শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন
Published: 24th, May 2025 GMT
সেশনজট নিরসনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা বিজ্ঞান বিভাগের ১২ শিক্ষার্থী।
শনিবার (২৪ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ আমরণ অনশন শুরু করেন তারা।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিভাগটির ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী আবু রাজিন মন্ডল, হাফসা কাউসার মিশু, তারেক মাহমুদ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ জাভেদ ও বখতিয়ারুল ইসলাম, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মিফতাহ জাহান মীম, পাবত্রী রানী ও শ্রুতি রাজ চৌধুরী, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্বাধীন বসু মিয়া, ক্যাএসিং মারমা, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মোহাইমিন আনাম ও ওয়ালিউল্লাহ।
আরো পড়ুন:
আসনের দাবিতে চবির হলগেটে শিক্ষার্থীদের তালা
নটরডেমের শিক্ষার্থী ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
অনশনে শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি হলো- সেশনজট নিরসন ও সর্বোচ্চ চার মাসের ভেতরে ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করার মাধ্যমে সেমিস্টার শেষ করা; কমপক্ষে আগামী ১২ মাস বা ৩ সেমিস্টারের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের মাধ্যমে ক্লাস শুরু, ফর্ম ফিলআপ, পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ ও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি লিখিত আকারে প্রদান করা।
অনশনরত শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন বলেন, “আমাদের সমস্যা নিরসনের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। বিগত প্রশাসন শুধু আশ্বাসই দিলেও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এজন্যই অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায় না হলে আমরা অনশন ভাঙব না।”
অনশনকারী শিক্ষার্থী মিফতাহ জাহান মীম বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরেই সিনিয়রদের দুই-তিনটা আন্দোলন দেখেছি। বিগত প্রশাসনের আমলেও আন্দোলন করতে হয়েছিল, এখনো করতে হচ্ছে। সেশনজট দূর করার ব্যপারে বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। অথচ অনেক সিনিয়রদের চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে, কারো পরিবারের সমস্যা। এগুলো কে দেখবে? আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অনশন শ ক ষ বর ষ র স শনজট ন রসন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্তনসহ তিন দাবিতে অনশনে শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্তনসহ তিন দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অনশনে বসেছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে বিভাগের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
তিন দফা দাবি হলো ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্তন বা সংস্কার করতে হবে, যাতে বিষয়ের স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে; পিএসসি ও ইউজিসিতে ফোকলোর বিষয়ের নাম সংযুক্ত করে কোড প্রদান নিশ্চিত করতে বিভাগীয় উদ্যোগ নিতে হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল এক মাসের মধ্যে ও নির্ধারিত সময়ে ক্লাস রুটিন প্রকাশ করতে হবে।
অনশনে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘এই মুহূর্তে দরকার, ফোকলোর বিভাগের সংস্কার’, ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে’, ‘সিন্ডিকেট না মুক্তি, মুক্তি মুক্তি’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফোকলোর বিভাগের যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে তাঁরা তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন। শিক্ষকেরা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়ন করার বদলে বিভিন্ন ছলচাতুরী করছেন। এ জন্য তাঁরা আজ অনশনে বসেছেন। দাবি মানা না পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।
বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার শুভ বলেন, ফোকলোর একটি বহুমাত্রিক বিষয়ভিত্তিক বিভাগ। যেখানে তাঁরা শুধু লোককাহিনি বা গান-নৃত্য নয়; বরং সমাজ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সমন্বিত পাঠ নিয়ে থাকেন। তাঁদের পাঠ্যক্রম আধুনিক, প্রাসঙ্গিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে অনেকেই বিভাগের পরিধি ও গুরুত্ব বুঝতে পারে না। অনেকেই মনে করেন এটি শুধু পুরোনো গান, নাচ বা লোকগল্পের পড়াশোনা, যা বাস্তবজীবনে কাজে লাগবে না। চাকরির ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীরা হীনম্মন্যতায় ভোগেন। শুধু এই নামের কারণে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিলয় দে সরকার বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কবে তাঁরা আন্দোলনের ফলাফল পাবেন, তা নিশ্চিত নন। তাঁরা কালক্ষেপণ নয়, দ্রুত দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত চান। সেই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলবে।
এ বিষয়ে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবিগুলো উত্থাপন করেছিলেন। তাঁরা সেগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ মে একটি উপকমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাব পেশ করবে। ইতিমধ্যে কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছে। তাঁদের দাবিগুলোর সঙ্গে শিক্ষকেরাও একমত। তবুও তাঁরা কেন আন্দোলন করছেন, তা বুঝতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছেন, দাবিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিতে হবে, কিন্তু সেটি তো সম্ভব নয়।