হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপায় চোখ রেখে গতকাল রাতে আর্সেনালের মুখোমুখি হয়েছিল বার্সেলোনার মেয়েরা। টানা দুবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সাকে এই ম্যাচেও ধরা হচ্ছিল ফেবারিট। কিন্তু ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের স্তব্ধ করে দিয়েছে আর্সেনাল।

লিসবনের ফাইনালে আর্সেনালের মেয়েদের জয় ১–০ গোলে। এই জয়ে ১৮ বছর পর প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান ট্রফি জিতল আর্সেনাল। ৭৪ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন বদলি নামা স্টিনা ব্লাকস্টেনিয়ুস।

ম্যাচের শুরু থেকেই আর্সেনালের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে বার্সা। ম্যাচজুড়ে আক্রমণ ও বল দখল, দুদিক থেকেই আর্সেনালের চেয়ে বেশ এগিয়ে ছিল কাতালান ক্লাবটি। ৬৮ শতাংশ বলের দখল রেখে বার্সা শট নেয় ২০টি, যার ৫টি লক্ষ্যে থাকলেও কোনোটিই গোল রূপান্তরিত হয়নি। এদিন ফাইনাল থার্ডে বার্সার তেমন কোনো আগ্রাসনই দেখা যায়নি। আইতানা বোনমাতি, ইউয়া পাজর এবং অ্যালেক্সিয়া পুতেয়াসদের এই ব্যর্থতাই মূলত ভুগিয়েছে বার্সাকে।

আরও পড়ুনমেসির জাদুকরি গোল, ঘুরে দাঁড়িয়ে হার এড়াল মায়ামি২ ঘণ্টা আগে

অন্যদিকে আর্সেনাল ৩২ শতাংশ বলের দখল রেখে ৮ শটের ৩টি লক্ষ্যে রাখে এবং ১টি গোলও আদায় করে নেয়। ব্লাকস্টেনিয়ুসের করা গোলটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ৭৪ মিনিটে স্রোতের বিপরীতে আক্রমণে গিয়ে বক্সের ভেতর বল বাড়ান বেথ মিড। সেই বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন সুইডিশ ফরোয়ার্ড ব্লাকস্টেনিয়ুস। পিছিয়ে পড়েও বার্সা অবশ্য চেষ্টা করেছিল ম্যাচে ফেরার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারেনি। শিরোপা হারানোর হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

আর্সেনালের শিরোপা উদ্‌যাপন চলেছে ড্রেসিংরুমেও.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর স ন ল র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বোর্ডে মানবিকে ছেলেদের ভরাডুবি, জিপিএ-৫ পাওয়ায় মেয়েরা এগিয়ে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় গতবারের চেয়ে পাসের হার কমেছে ২১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে ভরাডুবি হয়েছে মানবিক বিভাগের ছেলেদের। এবার বোর্ডে পাসের হার যেখানে ৫৯ দশমিক ৪০, সেখানে মানবিক বিভাগে ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ ছেলে পাস করেছেন।

পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছেন মেয়েরা। বোর্ডে এবার ৬৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ মেয়ে পাস করেছেন। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী, এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৮২ জন।

শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন, বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা গত বছর বেশি বইবিমুখ ছিল। যে কারণে শুধু রাজশাহীতে নয়, সারা দেশের ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার কমে গেছে।

২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছু

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ৭৭ হাজার ৭৪২ জন। গতবার পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৩ জন। পাস করেছিলেন ১ লাখ ১১ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৯০২ জন। এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও এবার বেড়েছে। এবার এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন ৩২ হাজার ৬৩৮ জন, যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ৩০৭ জন বেশি। এবার ১৭টি কলেজ থেকে কেউ পাস করেনি। গত বছর এমন কলেজের সংখ্যা ছিল ১।

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর হক বলেন, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়টি বোঝা কঠিন। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে তত কঠিন নয়। সাধারণভাবে ইংরেজিতে দুর্বলতা তো আছেই। এই দুটি কারণেই মানবিক বিভাগের ফলাফল খারাপ হতে পারে। একই কারণে ব্যবসায় শাখার পাসের হারও কম।

এইচএসসিতে গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৯ শতাংশ

ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের পাসের হার ও জিপিএ-৫ বেশি পাওয়ার কারণ হিসেবে রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কালাচাঁদ শীল মনে করেন, মেয়েরা ক্লাসে বেশি উপস্থিত থাকেন। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী। এ কারণে ছেলেরা পরীক্ষার ফলাফলে পিছিয়ে পড়ছেন।

রাজশাহী সরকারি মডেল কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার মাহমুদ জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তাঁর কলেজের ৯৩ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছেন। তাঁর ধারণা, গ্রামের কলেজের শিক্ষার্থীদের কম পাসের হার বোর্ডে ছেলেদের পাসের হারের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই গড় পাসের হার কমে গেছে।

গ্রামের কলেজে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। পুঠিয়া উপজেলার পঁচামাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের পাসের হার এবার ২৫ দশমিক ১৫। অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সাহা বলেন, তাঁর জীবদ্দশায় এমন ফলাফল দেখেননি।

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে এগিয়ে ঢাকা, পিছিয়ে কুমিল্লা

চারঘাটের ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুর রউফ বলেন, গ্রামের শিক্ষার্থীরা যাঁরা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন, তাঁদের প্রায় সবাই শহরের কলেজে চলে যান। দরিদ্র ও জিপিএ-৫ না পাওয়া শিক্ষার্থীরাই বেশি গ্রামের কলেজে ভর্তি থাকেন। এই শিক্ষার্থীদের নিয়ে এইচএসসিতে ভালো ফল করা চ্যালেঞ্জিং। তারপরও তাঁদের কলেজ থেকে ৫৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। তার মধ্যে বিজ্ঞান থেকে একজন ও মানবিক বিভাগ থেকে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা বাইরে সময় কাটান বেশি। মেয়েরা তাঁদের চেয়ে বেশি সময় পড়ার টেবিলে থাকেন। যে কারণে মেয়েরা পরীক্ষায় ভালো করেছেন। আর ফলাফল বিপর্যয়ের যে ঘটনা, সেটা সারা দেশেই হয়েছে। বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা গত বছর বেশি বইবিমুখ ছিলেন। যে কারণে শুধু রাজশাহীতে নয়, সারা দেশের ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার কমে গেছে।

সর্বোচ্চ পাসের হার কোন বোর্ডে, দেখুন ফলাফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ