নির্বাচন ৩০ জুনের ওই পারে যাবে না। এতে বিভিন্ন দলের নেতারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রবিবার (২৫ মে) রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শেষে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, “পার্টির লিডাররা প্রফেসর ইউনূসকে সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা যে সংস্কার করছি, আমরা যে বিচার কাজ শুরু করেছি, নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেছি, সেটাতে তারা সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।”

আরো পড়ুন:

বৈঠক শেষে মান্না: সরকারের মেয়াদ ‘স্পষ্ট’ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

শফিকুল আলম বলেন, “আরো অনেকগুলো বিষয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আবারও জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করবেন। ৩০ জুনের ওই পারে যাবে না। এতে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।”

প্রেস সচিব আরো বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি যতদিন আছি দেশের কোনো অনিষ্ট হবে এমন কোনো কাজ হবে না, নিশ্চিত থাকেন।”

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “আমরা বড় যুদ্ধাবস্থায় ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে ডিস্টাবিলাইজ (অস্থিতিশীল) করার জন্য যত রকমভাবে পারে চেষ্টা চলছে। এটা থেকে আমাদের রক্ষা পেতে হবে। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। ঐকমত্য থাকতে হবে, আত্মমর্যাদা পূর্ণ জাতি হিসেবে আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, এটা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যায়। সবাই একসঙ্গে বসাতে সাহস পেলাম। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি অপরাধী অনুভব করব।”

তিনি আরো বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন অভ্যুত্থানের কারণে মহাসুযোগ পেয়েছি। ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশকে টেনে আনা। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের ভেতরে ও বাইরে। যাতে আমরা এগোতে না পারি। যাতে সব কিছু কলাপস হয়ে যায়, যাতে গোলামিতে ফেরত যাই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমি যতদিন আছি দেশের কোনো অনিষ্ট হবে এমন কোনো কাজ হবে না, নিশ্চিত থাকেন।'

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মুখে হঠাৎ অবসরের কথা

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবসর গ্রহণের পর বেদ, উপনিষদ অধ্যয়ন ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সময় কাটাবেন। গতকাল বুধবার তিনি নিজেই এ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।

অমিত শাহর বয়স মাত্র ৬০। তা ছাড়া এ দেশের রাজনীতিবিদেরা সচরাচর অবসর গ্রহণ করেন না। তার ওপর তাঁর মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী যদি কেউ হন, দিনে ১৮ ঘণ্টা যাঁর রাজনীতিতেই কেটে যায়, এমন অমিত শক্তিধর অমিত শাহ হুট করে অবসরের কথা কেন বলতে গেলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। নানান প্রশ্ন ঘুরছে।

বিজেপিতে যেদিন থেকে ‘মোদি যুগ’ শুরু, সেদিন থেকেই মোদি–শাহ নাম এক নিশ্বাসে উচ্চারিত হয়ে আসছে। গুজরাটি রাজনীতিতে যা শুরু, জাতীয় রাজনীতিতেও সেই যুগলবন্দী অব্যাহত। নরেন্দ্র মোদির সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে বিশ্বস্ত দোসর বলে পরিচিত অমিত শাহ। এমন ধারণাও আছে যে শাহ–ই হবেন মোদির উত্তরসূরি।

হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিতে এই জুটির পরেই যে নামটি প্রভূত আলোচিত, তিনি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এ দুজনের রাজনৈতিক টানাপোড়েন নিয়েও অনেক আলোচনা রয়েছে। অমিত শাহর মুখে হঠাৎ অবসরের কথা তাই নতুন জল্পনা উসকে দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ৬০ বছর বয়সেই বিজেপির ‘নাম্বার টু’ পিছু হটছেন? তিনি কি ভাবছেন, মোদির ছেড়ে যাওয়া আসন দখল করা তাঁর পক্ষে কঠিন? মোদিহীন বিজেপিতে থেকে তাই রাজনীতিই না করার সিদ্ধান্ত?

ক্ষমতা লাভের পর নরেন্দ্র মোদি নিজেই দলীয় নেতাদের অবসর গ্রহণের সীমা একরকম নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। ৭৫ বছর বয়স ছিল সেই সীমা। সেই যুক্তিতে তিনি একে একে অবসরে পাঠিয়েছেন অটল বিহারি বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, যশোবন্ত সিং, যশবন্ত সিনহাদের মতো প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিকদের।

তাঁদের ভূমিকা হয় ‘মার্গদর্শকের’। মার্গদর্শক হলেন বিজেপির পথপ্রদর্শক কমিটির সদস্য। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর প্রবীণ নেতাদের সমন্বয়ে এ কমিটি করা হয়। নিজের তৈরি নিয়ম মানলে নরেন্দ্র মোদিরও অবসর নেওয়া উচিত আগামী বছর। চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনিও পঁচাত্তরে পদার্পণ করবেন। সেই নিয়ম যাতে এ ক্ষেত্রে পালিত না হয়, সে জন্য মোদির ভক্তকুল ইতিমধ্যে বলতে শুরু করেছে, লোকসভার পরবর্তী নির্বাচনও বিজেপি মোদিকে সামনে রেখে লড়বে। তাহলে কেন মোদির ‘ম্যান ফ্রাইডে’ অমিত শাহর মুখে অবসর যাপনের কথা? তা কি স্রেফ কথার কথা, নাকি অর্থবহ? তাহলে কি ধরে নিতে হবে মোদি অবসর নিলে বিজেপিতে শাহর রাজনীতি করা কঠিন হবে? মোদির আশীর্বাদের হাত তাঁর মাথায় না থাকলে তিনি কি একঘরে হয়ে পড়বেন? রাজনৈতিক মহল এ নিয়েই আলোড়িত।

অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের পাশাপাশি সমবায় মন্ত্রণালয়ও চালান। গত বুধবার গুজরাট, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের সমবায় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নারীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। গুজরাটের আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত সেই সভায় নারীদের সঙ্গে কথাবার্তার সময় হুট করে তিনি নিজের অবসর জীবনের পরিকল্পনা ফাঁস করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক করেছি, অবসর গ্রহণের পর আমি বাকি জীবন বেদ ও উপনিষদ পড়ে কাটাব এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য খরচ করব।’

কেন শুধু বেদ ও উপনিষদ পড়বেন, সে ব্যাখ্যা না দিলেও অমিত শাহ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। বলেন, নিজের কৃষিজমিতে তিনি প্রাকৃতিক চাষ (অর্গানিক ফার্মিং) করেন। কোনো রাসায়নিক সার দেন না। তাতে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে। ফসল উৎপাদিত হয় দেড় গুণের বেশি। রোগও কম হয়।

অমিত শাহ গমের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘রাসায়নিক সার দিয়ে যে গম উৎপাদিত হয়, তা খেলে অনেক রকমের অসুখ হয়। ক্যানসার হয়, রক্তচাপ বেড়ে যায়, থাইরয়েডের সমস্যাও দেখা দেয়। এসব কথা আগে আমরা জানতাম না। এখন জানা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত ফসল খেলে কাউকে ওষুধ খেতে হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জমির উর্বরতা শক্তিও বাড়িয়ে দেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ