পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি
Published: 26th, May 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে একটি সাধারণ ক্যানসার হলো ডিম্বাশয় বা ওভারিয়ান ক্যানসার। যার প্রধান কারণ হিসেবে বর্তমান জীবনযাত্রাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৮৭ জন নারীর মধ্যে একজনের ডিম্বাশয় বা ওভারিয়ান ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে। ধারণা করা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে এর হার ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে এই ক্যানসারে বেঁচে থাকার হার ৮৮ শতাংশ।
সবার মধ্যে ক্যানসারবিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে এসকেএফ অনকোলোজি আয়োজন করে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা। সেখানে এসব কথা উঠে আসে। এটি গত মঙ্গলবার (২০ মে) প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
নাসিহা তাহসিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন আহছানিয়া মিশন ক্যানসার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) ডা.
ডিম্বাশয় ক্যানসার আসলে কী? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, ‘সাধারণত নারীদের তলপেটের দুই পাশে যে ওভারি বা ডিম্বাশয় থাকে, সেখানে যখন কোনো ক্যানসার হয়, তখন সেটাকে বলে ডিম্বাশয় বা ওভারিয়ান ক্যানসার।’
ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি সম্পর্কে ডা. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, ‘পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদেরই মূলত এই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া যেসব নারীর তাড়াতাড়ি মাসিক হয় বা স্থায়ীভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, যাঁদের পরিবারে মা, খালা, ফুফু অর্থাৎ নিকটাত্মীয়দের কারও যদি এ ধরনের রোগ থাকে তাহলে তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। পাশাপাশি জরায়ু ও কোলন ক্যানসারের সঙ্গেও এর সম্পর্ক থাকতে পারে।’
ওভারিয়ান ক্যানসারের উপসর্গগুলো কী কী? এ প্রসঙ্গে ডা. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, তলপেট বা পেট ফুলে যাওয়া, পেটে অস্বস্তি লাগা, মাসিকের সমস্যা হওয়া বা একধরনের ক্লান্তি বোধ করা, কোমর বা পিঠে ব্যথা করা, অরুচি, রুচিমন্দা, গ্যাস হওয়া ইত্যাদি বিষয় মূলত এই ক্যানসারের উপসর্গ।
জরায়ুমুখে ক্যানসার আর ডিম্বাশয় ক্যানসারকে অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। তাঁদের উদ্দেশে ডা. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, গর্ভধারণ করার পরে যেখানে সন্তান থাকে, সেটাকে বলা হয় জরায়ু। আর জরায়ুর ফান্ডাস, বডি ও মুখ আছে। এই মুখে যখন কোনো ফান্ডাস হয়, সেটা জরায়ুমুখের ক্যানসার। আর ডিম্বাশয় কিন্তু জরায়ুর দুই পাশে থাকে দুইটা হাতের মতো, যাকে বলে ‘ফ্যালোপিয়ান টিউব’। এর শেষ প্রান্তে তলপেটে পেলভিক রিজিয়নে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। যাকে আমরা ওভারি বলি। কাজেই জরায়ুমুখের ক্যানসার আর ডিম্বাশয়ের ক্যানসার সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বাংলাদেশে ডিম্বাশয় ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, ডায়াগনোসিস, আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা, সচেতনতা ও প্রতিরোধব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. কুদরত-ই-ইলাহীউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
আপনি কি পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করছেন
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য ঠিক কতটা প্রোটিন প্রয়োজন, তা তাঁর ওজনের ওপর নির্ভর করে। ধরা যাক, একজনের ওজন ৫০ কেজি। তাহলে তাঁর জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম প্রোটিন দরকার। সহজে, সাধারণভাবে হিসাব করা যায় এভাবে—আপনার ওজন যত কেজি, প্রতিদিন তত গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে বলছিলেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান।
কোন খাবারে পাবেন প্রোটিনযাঁর ৫০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন, তিনি ৫০ গ্রাম মাংস খেলেই যে তাঁর দেহের চাহিদা মিটে যাবে না, সে তো বুঝতেই পারছেন। কারণ, কোনো খাবারই কেবল একটি পুষ্টি উপাদান দিয়ে তৈরি নয়। প্রতিটি খাবার থেকেই নানা পুষ্টি উপাদান পাই আমরা। আবার সব প্রাণীর মাংস থেকে যে একই পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, তেমনটাও নয়। তেমনিভাবে বিভিন্ন ধরনের মাছ, ডিম ও দুধের প্রোটিনের পরিমাণও আলাদা হয়। এসবের বাইরেও উদ্ভিজ্জ উৎস, যেমন ডাল, সয়া, তোফু, বাদাম ও অন্যান্য বীজ থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়।
প্রাণিজ প্রোটিন সবচেয়ে বেশি জরুরি বাড়ন্ত বয়সে এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী ও স্তন্যদানকারী মায়ের জন্য। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে অধিকাংশ প্রোটিন গ্রহণ করলে ক্ষতি নেই। তবে কোন খাবার থেকে ঠিক কতটা প্রোটিন পাবেন, তা কড়ায়–গন্ডায় হিসাব করা সবার জন্য জরুরি নয়; বরং সুষম খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার প্রতি জোর দেওয়া প্রয়োজন। তবে নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অবশ্য এই হিসাব-নিকাশটাই জরুরি হয়ে দাঁড়ায়, সেই হিসাব করে তৈরি করা খাদ্যতালিকাই তাঁদের মেনে চলতে হয়।
আরও পড়ুনকোন প্রোটিন খাব, কতটা খাব১১ জুলাই ২০১৭পর্যাপ্ত প্রোটিন না পেলেপ্রোটিন আমাদের দেহের রোজকার ক্ষয়পূরণ করে। শক্তিও জোগায়। সার্বিক সুস্থতার জন্যই প্রোটিন আবশ্যক। পর্যাপ্ত প্রোটিন না পেলে দেহে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন—
প্রায়ই জীবাণু সংক্রমণ হওয়া, সহজে ক্ষত নিরাময় না হওয়া।
অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বল অনুভব করা, পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার পরও ক্ষুধা অনুভব করা।
চুল ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, চুলের গঠন পাতলা হয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া।
নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, নখের ওপর খাঁজ সৃষ্টি হওয়া।
পায়ে পানি আসা।
পেশিক্ষয়, ওজন কমে যাওয়া।
আরও পড়ুনকম খরচে পুরো পরিবারের প্রোটিন বা আমিষের চাহিদা মেটাবেন যেভাবে০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যা করবেনএ ধরনের উপসর্গ অনেক কারণেই দেখা দিতে পারে। পায়ে পানি আসা, পেশিক্ষয় বা ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমে সুষম খাদ্যাভ্যাসের প্রতি গুরুত্ব দিন। প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় অন্য সব উপাদান গ্রহণ করতে চেষ্টা করুন খাবার থেকে। তাতে উপকার না মিললে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণটি খুঁজে বের করবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেবেন।
আরও পড়ুনডিমের চেয়ে বেশি প্রোটিন মিলবে চেনা–পরিচিত যে ১৩ খাবারে১২ মার্চ ২০২৫