জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: গবাদি প্রাণীর জন্য কী অপেক্ষা করছে
Published: 11th, January 2025 GMT
জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। ‘জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি মানবতার জন্য একটি অস্তিত্ব সংকট’—এই সত্যটা কি আমরা উপলব্ধি করছি? পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে এমন একটি স্তরে পৌঁছেছে, যা পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং গবাদি প্রাণীর জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনছে।
জলবায়ু পরিবর্তন গবাদি প্রাণীর জীবনযাত্রার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে, যা খাদ্যনিরাপত্তা এবং কৃষি অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং পরিবেশগত পরিবর্তন গবাদিপশুর স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা এবং প্রজননক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য বিরূপ প্রভাব ফেলে। দুগ্ধজাত গবাদি প্রাণীর ওপর জলবায়ুগত প্রভাবের ফলে যেসব সাধারণ লক্ষণ দেখা দিচ্ছে তা হলো—খাদ্য গ্রহণ হ্রাস, দুধ উৎপাদন ও দুধের চর্বি হ্রাস, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং প্রজননক্ষমতা হ্রাস।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রাণীদের দেহে হিট স্ট্রেস হয়, যা তাদের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। খাদ্য গ্রহণ কম হওয়ার কারণে প্রাণীরা পর্যাপ্ত শক্তি পায় না, ফলে কাজ করার ক্ষমতা বা উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়। এ ছাড়া গর্ভধারণের হার কমে যায় এবং জন্মানো বাছুরের শরীরের ওজন কম হয়। পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে প্রাণীদের দুধ বা মাংসের পুষ্টিমান কমে যায়। শারীরিক স্ট্রেসের কারণে প্রাণীরা কম পরিমাণে দুধ উৎপাদন করে বা মাংসের গুণগত মান কমে যায়। অতিরিক্ত তাপের সরাসরি প্রভাবে ৬৫ শতাংশ দুধ উৎপাদন কমে যায়। এ ছাড়া দুধে প্রোটিনের পরিমাণ কমতে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার পরিবর্তন রোগজীবাণু ও প্যারাসাইটের বিস্তার বাড়ায়। উদ্ভূত পরিবেশে নতুন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রাণীদের ওপর আক্রমণ করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ায় প্রাণীরা সহজেই সংক্রমণের শিকার হয়। এমনকি কলোস্ট্রামে ইমিউনোগ্লোবুলিনের ঘনত্বও কমে যায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের পরোক্ষ প্রভাব প্রাণিসম্পদ এবং কৃষিব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। প্রভাবের ফলে যেসব সাধারণ লক্ষণ দেখা দিচ্ছে তা হলো: (১) মাটির উর্বরতায় পরিবর্তন: বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তন এবং খরার কারণে মাটির আর্দ্রতা হ্রাস পায়। পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মাটির উর্বরতাকে প্রভাবিত করে, যা প্রাণিখাদ্যের উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে। (২) পরিবেশব্যবস্থার রূপান্তর: তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলীয় পরিবর্তনের ফলে চারণভূমি, বনভূমি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র পরিবর্তিত হয়। পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়ে প্রাণিপালন ব্যবস্থায় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। (৩) সম্পদের জন্য প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি: খাদ্য, পানি, এবং চারণভূমির জন্য মানুষের ও প্রাণীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ে। সীমিত সম্পদে জীবিকার জন্য এই প্রতিযোগিতা বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় সংকট তৈরি করে। (৪) খাদ্যশস্যের উৎপাদন, গুণগত মান এবং প্রকারে পরিবর্তন: শস্যের বৃদ্ধি ও ফলন জলবায়ুর ওপর নির্ভরশীল। খরা বা বন্যার কারণে শস্য উৎপাদন হ্রাস পায়। খাদ্যশস্যের গুণগত মান হ্রাস পাওয়ায় পশুর জন্য উপযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব হয়। (৫) চারণভূমির উৎপাদনশীলতায় পরিবর্তন: তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিবর্তনের ফলে চারণভূমি সংকুচিত হয়। ঘাস বা প্রাণিখাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় গবাদিপশুর পুষ্টির ঘাটতি হয়। (৬) রোগতত্ত্বের পরিবর্তনের কারণে নতুন রোগের উদ্ভব: পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে রোগবাহী পোকামাকড়ের বিস্তার বৃদ্ধি পায়। নতুন জীবাণু ও রোগের উদ্ভব হয়, যা প্রাণীদের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গবাদি প্রাণীর যত্নে যা যা করণীয় তা হলো: (১) তাপ এবং শক্তিশালী সূর্যালোক থেকে প্রাণীদের রক্ষা করা। (২) গবাদি প্রাণীর জন্য ঘন ছায়াযুক্ত গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করা। (৩) খোলা এবং বায়ু চলাচল শেড তৈরি করা, যা প্রাণীদের আর্দ্রতা এবং সরাসরি সূর্যালোক থেকে রক্ষা করে। (৪) শেডের ছাদ পরিষ্কার এবং সাদা রঙের ব্যবস্থা করা (৫) গরমের দিনে প্রাণীদের শরীর ঠান্ডা রাখতে তাদের দিনে ১ থেকে ২ বার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করানো, বিশেষ করে মহিষকে গোসল করানো এবং ধারায় ঝরনার পানি ছিটিয়ে দেওয়া। (৬) প্রাণীর জন্য সর্বদা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা ও দিনে বারবার পানি পরিবর্তন করা। (৭) পাখা, কুলার, ফোয়ারা ইত্যাদির মতো শেড কুলিং ডিভাইসের ব্যবস্থা করা। (৮) হালকা, সহজপাচ্য এবং তাজা খাবার সরবরাহ করা। সকালে ও সন্ধ্যায় খাবার দেওয়া যখন তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে (গ্রীষ্মকালে ১০টার আগে এবং বিকেল ৪-৫টার পরে খাবার সরবরাহ করা) (৯) শীত না হলে ঠান্ডা আবহাওয়ায় সকালে বা সন্ধ্যায় মাঠে চরাতে হবে। (১০) গরমে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি বেশি থাকে, তাই নিয়মিত ভ্যাকসিন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং যদি প্রাণী অসুস্থ হয়ে পড়ে, দ্রুত প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। (১১) গোয়ালঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং গরমে দুর্গন্ধ রোধের ব্যবস্থা করা। (১২) গবাদি প্রাণীদের জন্য তাপ–সহনশীল (শাহিওয়াল, ব্রাহমা, জেবু জাতের গরু তাপ-সহনশীল গবাদিপশুর জাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়) জাত নির্বাচন করা ।
পরিশেষে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব গবাদি প্রাণীদের জীবনে নতুন নতুন সংকট তৈরি করছে। তবে সচেতনতা, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি এবং সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করার মনোভাব আমাদের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সরকার, খামারি এবং গবেষকদের সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার। আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই এবং নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলি, যা মানুষের পাশাপাশি গবাদি প্রাণীদের জীবনও সুরক্ষিত করবে।
ড.
এ কে এম হুমায়ুন কবির অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (ডেইরি অ্যান্ড পোলট্রি সায়েন্স), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম। [email protected]
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভোল পাল্টে’ সক্রিয় কিশোর গ্যাং, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এলাকায় নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন, মারামারি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। তবে এখন ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিড়েছে তারা।
সম্প্রতি এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলম (৫২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। মসজিদের পাশে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩ এপ্রিল তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এরপর গত শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন স্থানীয় তরুণ। ওই তরুণেরা রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মিছিল-সমাবেশে কিশোরদের ব্যবহার করে আসছেন। ফলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও এসব কিশোরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল চর আবাবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দারের হাতে। তাঁরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই কিশোরেরা ভোল পাল্টে বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হচ্ছে। আবদুর রহিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এসব তরুণকে নতুন করে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রহিম ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও তাঁর পদপদবি নেই।
জাহাঙ্গীর আলম খুনের ঘটনায় আবদুর রহিমকেও আসামি করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আমি প্রশ্রয় দিচ্ছি—এমন অভিযোগ প্রায় করা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংকে আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি। তারা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা) আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় কোনো নেতা-কর্মী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রশ্রয় দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায় দল নেবে না।
জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মসজিদের আশপাশে জুয়ার আসর ও মাদক সেবন করত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাব্বির হোসেন, জুবায়ের হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৮–১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।
জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, কিশোর-তরুণদের খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ফেরাতে না পারলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। কেউ যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।