এইচএমপিভি’র সতর্কতা নেই নাকুগাঁও স্থলবন্দরে
Published: 13th, January 2025 GMT
ভারতসহ কয়েকটি দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি ছড়িয়ে পড়লেও প্রতিরোধে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশনে সতর্ র্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই এই বন্দর দিয়ে যাত্রীরা ভারত ও ভুটানে যাতায়াত করছেন। বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে ট্রাকচালক ও হেলপাররা দুই দেশে বেশি আসা-যাওয়া করছেন। তবে, বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সরকারি নির্দেশনা না থাকলেও, মৌখিকভাবে তাদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থলবন্দরের গেইটে দুজন দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় বন্দরের ভেতরে কর্মকর্তাদের বসে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু কোথাও এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো রকম যন্ত্রপাতি কিংবা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। কাগজপত্র সঠিক থাকলেই যাত্রীরা ভারতে প্রবেশ করতে পারছেন বা আসতে পারছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, তারা এ ভাইরাস সম্পর্কে অবগত নন। তবে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এই ভাইরাস যেহেতু ভারতে শনাক্ত হয়েছে, সেহেতু বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বসানো উচিত।
হালুয়াঘাটের বাসিন্দা ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রী আকরাম হোসেন বলেন, ‘‘আমার এক ভাইয়ের কাছ থেকে শুনেছি এই ভাইরাসের নাম। যদি করোনার মতো এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তাহলে মুশকিল হয়ে যাবে। এ জন্য আগে থেকেই সতর্কতার সঙ্গে অবশ্যই কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমি মনে করি।’’
আরেক যাত্রী সাব্বির আহম্মেদ বিস্মিত কণ্ঠে বলেন, ‘‘ভাই কি যে ভাইরাসের কথা আপনারা বলেন! আমি মাস্ক সবসময় ব্যবহার করি এবং পরিস্কার থাকার চেষ্টা করি। এসব ভাইরাস-টাইরাস আমাদের শরীরে আসবে না। কারণ আমাদের শরীর ফিট।’’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বলেন, ‘‘করোনার সময় বন্দর বন্ধ আছিল। যদি, নতুন করে এই ভাইরাস আসে, তাহলে তো আগে থেকেই ঠিকঠাক থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে বন্দরের ভেতরে কিংবা বাইরে পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি বসানো উচিত।’’
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এখনো ওইভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এই বন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে পরীক্ষা ছাড়াই যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। তবে মৌখিকভাবে সচেতন করে যাচ্ছি আমরা।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনারা জানেন যে, এই বন্দর দিয়ে মূলত ভারত ও ভুটান থেকে যাত্রী পারাপার বেশি হয়। গত মাসে এই বন্দর দিয়ে প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী পারাপার করেছেন। তবে, এ মাসে এখন পর্যন্ত তেমন যাত্রী পারাপার হয়নি। তারপরও যারা পারাপার হচ্ছেন তাদের মৌখিকভাবে সচেতন করছি এবং পরামর্শ দিচ্ছি।’’
জেলা সিভিল সার্জন ডা.
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এই ভাইরাসে কেউ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে সাধারণত জ্বর, সর্দি ও কাশি হয়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, শরীরে ব্যথা অনুভব হয়। এটি অন্য জ্বরের মতো। তবে, শিশু, বয়স্ক ও বয়স্ক যেসব ব্যক্তি ক্যানসার বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে।’’
তবে ভয়ের কিছু নেই বলেও জানান এই সিভিল সার্জন।
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে জমি নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এক প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকালে সদর উপজেলার কালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহবুব হোসেন (৪০) কালা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চার মাস আগে কম্বোডিয়া থেকে বাড়ি ফেরেন।
মাহবুব হোসেনের চাচাতো ভাই জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এক চাচার জমি নিয়ে প্রতিবেশী হুমায়ন মোল্লা গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল। আগামীকাল জমির বিষয়টি নিয়ে কয়েক গ্রামের মাতব্বর মিলে সালিশ হওয়ার কথা। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে হুমায়ন মোল্লার বাড়ির সামনে দিয়ে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন মাহবুব। এ সময় তাঁর লোকজন পেছন থেকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে মাহবুবকে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।’
এ বিষয়ে জানতে হুমায়ন মোল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারিয়া তাহসিন বলেন, নিহতের মাথায় ধারালো অস্ত্রের গভীর আঘাত আছে। এ ছাড়া ঘাড়, পিঠ ও কোমরের পেছনে আঘাতের চিহ্ন আছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাঁকে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, একটি জমি লিজের ঘটনা নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তী সহিংসতা ঠেকাতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।