বাসের সিট ধরাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগ ও আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে গত শনিবার মধ্যরাতে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের থামাতে গিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও উত্তেজনা থামেনি। 
জানা গেছে, ঘটনার জেরে দুই পক্ষই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ও কথার লড়াই চালাচ্ছে। তিন শিক্ষার্থীকে হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগ তুলে করা হয়েছে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। সংঘর্ষের পরদিন থেকে শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়াসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব রয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় সরব শিক্ষার্থীরা
দু’পক্ষের মারামারিতে শিক্ষকদের আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে দায়ীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তারা। একই দাবিতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার মানববন্ধন করেছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে প্রক্টরের ওপর হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান তারা। এ দাবিতে উপ-উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দেন। এসব কর্মসূচির বাইরেও শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জড়িতদের শাস্তি চেয়েছেন।
পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
মারামারির পরদিন রোববার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দাবি করেছেন, শনিবার রাতের ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে আল-ফিকহ্‌ বিভাগ ও অন্য অনুষদের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা করেন। ঘটনার বিষয়ে আল ফিকহ্ বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, শুরু থেকেই আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আক্রমণাত্মক ছিলেন। তারা পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছেন। প্রক্টরকে ধাক্কা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই হাতাহাতি শুরু হয় বলে দাবি তাদের।
যদিও প্রক্টরকে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে অস্বীকার করেছেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রাতের হামলায় বঙ্গবন্ধু হলের যাকারিয়া, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আমিরুল ও লালন শাহ হলের হাসানুল বান্না সরাসরি সম্পৃক্ত এবং ইন্ধনদাতা ছিলেন বলে দাবি তাদের। তবে সরাসরি হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে তাদের কাছে প্রমাণ নেই বলে জানান। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন বলে সে সময় দাবি করা হয়।
গত সোমবার বিকেলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন এ তিন শিক্ষার্থী। এতে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগকে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও মানহানিকর বক্তব্য বলে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি তারা শিক্ষকদের ওপর হামলাসহ পুরো ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি
সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এতে ঘটনার কারণ ও তথ্য উদ্ঘাটন করে দোষীদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড.

আবদুল কাদেরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ‘চিঠি পেয়েছি। কমিটির সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন মনঃপূত না হয়, প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য উপাচার্যের কাছে আবেদন জানানো হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন ব ভ গ স ঘর ষ র র ঘটন য় কর ছ ন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুর মহানগরে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদ, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা ও পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর মহানগরের নাওজোর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

কয়েকজন বিক্ষোভকারী বলেন, নাওজোর এলাকায় ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে একটি পদচারী–সেতু খুবই দরকার। এই মহাসড়কের দুই পাশে ছোটবড় ২০টি পোশাক কারখানা আছে। স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি শিল্পকারখানার হাজার হাজার শ্রমিক এখানে বসবাস করেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি স্কুল–কলেজে শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। প্রতিনিয়ত এখানে নানা দুর্ঘটনা ঘটে।

আজ প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা অংশ নেন। পরে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে পদচারী–সেতুর জন্য এলাকাবাসী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছে।

বডি ফ্যাশন ও আইসিএল কারখানার সিওও সাব্বির আহমেদ বলেন, নাওজোর এলাকায় নিরাপদভাবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পারাপারের কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ও প্রাণ বাঁচাতে নাওজোর ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে একটি পদচারী–সেতু খুবই জরুরি। এটি নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, এলাকাবাসী নাওজোর এলাকায় একটি পদচারী–সেতুর দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা নিজেরাই মহাসড়ক থেকে সরে যান। এ সময় প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে বালু তোলা বন্ধের দাবিতে সীতাকুণ্ডে মানববন্ধন
  • পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ