পদত্যাগের ঘোষণা প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা সংস্কার কমিটির সদস্যের
Published: 7th, February 2025 GMT
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা ২০২২-এর পুনঃসংকলন ও সংস্কার কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিদেশি সংবাদমাধ্যমে কর্মরত দেশের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশি জার্নালিস্টস ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া’র (বিজেআইএম) প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক স্যাম জাহান।
বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পোস্টে স্যাম জাহান বলেন, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা-২০২২ এর যে পুনঃসংকলন ও সংস্কারের জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল, সেখানে অন্যান্য সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমারও অবস্থান হয়েছিল মূলত আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতিনিধি হিসেবে।
তিনি বলেন, তিন সভার মাধ্যমে যে চূড়ান্ত খসড়া তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে আমি মোটেই একমত নই। আমার প্রতিনিধিত্বের অধীনে অন্তত ৮৫ জন সাংবাদিকের মূল্যবান মতামত নিয়ে আমি আমার প্রস্তাব লিখিত আকারে পেশ করেছিলাম। যার একটিও গ্রহণ করা হয়নি। খুবই স্বল্প সময়ের সর্বশেষ মিটিংয়ে যথেষ্ট সময় নিয়ে এসব বিষয়ে আলোচনার সুযোগ না দিয়েই নীতিমালা ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে।
খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে রয়টার্স টিভির সাংবাদিক স্যাম জাহান ফেসবুকে লেখেন, সেটা মোটেই সাংবাদিকবান্ধব হয়নি বরং সরকারবান্ধব হয়েছে। সেখানে সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের ডেকে নিয়ে তাদের একটি তাড়াহুড়োর মধ্যে রেখে পুরো ব্যাপারটায় ন্যায্যতা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে যা দুর্ভাগ্যজনক। আমি এই নীতিমালার প্রতি তীব্র আপত্তি রেখে উক্ত কমিটি হতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।
স্যাম জাহান আরও বলেন, নীতিমালায় কী কী আছে, আমি এ মুহূর্তে বলতে অপারগ, যেহেতু তা এখনো প্রকাশ হয়নি। তবে শিগগির যৌক্তিক, ব্যবহারিক এবং সময়োপযোগী করে পুনঃলিখন না করলে তা চরমভাবে ব্যাকফায়ার করবে বলে আশঙ্কা করছি।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য সচিব তথ্য অধিদফতরের উপপ্রধান তথ্য অফিসার (প্রোটকল) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ভূঁঞার বক্তব্য নিতে ফোন করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে
ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।
এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’
যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।
এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২