ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা ২০২২-এর পুনঃসংকলন ও সংস্কার কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিদেশি সংবাদমাধ্যমে কর্মরত দেশের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশি জার্নালিস্টস ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া’র (বিজেআইএম) প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক স্যাম জাহান।

বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পোস্টে স্যাম জাহান বলেন, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা-২০২২ এর যে পুনঃসংকলন ও সংস্কারের জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল, সেখানে অন্যান্য সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমারও অবস্থান হয়েছিল মূলত আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতিনিধি হিসেবে।

তিনি বলেন, তিন সভার মাধ্যমে যে চূড়ান্ত খসড়া তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে আমি মোটেই একমত নই। আমার প্রতিনিধিত্বের অধীনে অন্তত ৮৫ জন সাংবাদিকের মূল্যবান মতামত নিয়ে আমি আমার প্রস্তাব লিখিত আকারে পেশ করেছিলাম। যার একটিও গ্রহণ করা হয়নি। খুবই স্বল্প সময়ের সর্বশেষ মিটিংয়ে যথেষ্ট সময় নিয়ে এসব বিষয়ে আলোচনার সুযোগ না দিয়েই নীতিমালা ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে।

খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে রয়টার্স টিভির সাংবাদিক স্যাম জাহান ফেসবুকে লেখেন, সেটা মোটেই সাংবাদিকবান্ধব হয়নি বরং সরকারবান্ধব হয়েছে। সেখানে সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের ডেকে নিয়ে তাদের একটি তাড়াহুড়োর মধ্যে রেখে পুরো ব্যাপারটায় ন্যায্যতা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে যা দুর্ভাগ্যজনক। আমি এই নীতিমালার প্রতি তীব্র আপত্তি রেখে উক্ত কমিটি হতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।

স্যাম জাহান আরও বলেন, নীতিমালায় কী কী আছে, আমি এ মুহূর্তে বলতে অপারগ, যেহেতু তা এখনো প্রকাশ হয়নি। তবে শিগগির যৌক্তিক, ব্যবহারিক এবং সময়োপযোগী করে পুনঃলিখন না করলে তা চরমভাবে ব্যাকফায়ার করবে বলে আশঙ্কা করছি।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য সচিব তথ্য অধিদফতরের উপপ্রধান তথ্য অফিসার (প্রোটকল) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ভূঁঞার বক্তব্য নিতে ফোন করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে দারিদ্র্যের হার কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা

দেশে দারিদ্র্যের হার এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত এক ধারণা জরিপ বা পারসেপশন সার্ভেতে এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার বিআইডিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে এ হার হয়েছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। যদিও বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ দেশব্যাপী অনেক বড় নমুনার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আর বিআইডিএস পাঁচটি জেলার ওপর ধারণা জরিপ করেছে। বিআইডিএস বলেছে, তাদের জরিপটি খানা আয় ও ব্যয় জরিপের সঙ্গে তুলনা করার জন্য নয়। তবে ধারণা জরিপে এটি ফুটে উঠেছে যে, দুই বছর আগের চেয়ে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। 

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় জরিপটি পরিচালিত হয়। ঢাকা, বান্দরবান, খুলনা, রংপুর ও সিলেট জেলা জরিপের জন্য নির্ধারণ করা হয়। মোট ৩ হাজার ১৫০টি খানা বা পরিবারের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে শহরের খানা ১ হাজার ৯৯০টি এবং গ্রামীণ খানা ১ হাজার ১১৬টি। সবচেয়ে বেশি ৭৫০টি খানা ঢাকার। 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডব্লিউএফপির অফিসার ইনচার্জ সিসেমানি পারসেসমেন্ট। জরিপের ফল তুলে ধরেন সংস্থার গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনূস। বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূস যৌথভাবে জরিপ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমানে মানুষের অবস্থা যে আরও খারাপ হয়েছে, তা জরিপে উঠে এসেছে এবং বাস্তবতার সঙ্গে যার মিল রয়েছে। 
বিবিএসের জরিপে ২০২২ সালে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিবিএসের জরিপে শহরে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে এসেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। 

বিবিএসের জরিপে ঢাকা জেলায় ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে ২০২৪ সালে যা বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খুলনা জেলায় দারিদ্র্যের হার ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৪ সালে বিআইডিএসের জরিপে যা দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে সিলেট শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৬ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে যা ২০২৪ সালে হয়েছে ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। রংপুর জেলায় বিবিএসের ২০২২ সালের জরিপে দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ শতাংশ। ২০২৪ সালে বিআইডিএসের জরিপে যা হয়েছে ২৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বান্দরবান জেলায় ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে যা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ২০২২ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত ৩৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ড. এ কে এনামুল হক বলেন, বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বুঝতে বিআইডিএসের জরিপটি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নীতিনির্ধারণে এসব তথ্য ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন– রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, দেশে বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক কারণ ইত্যাদি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিসেমানি পারসেসমেন্ট বলেন, এটি বিবিএসের সঙ্গে তুলনা না করলেও বর্তমান পরিস্থিতি বোঝাতে বেশ কাজে দেবে। এর ফলে সরকারের যে কোনো নীতিনির্ধারণ অনেক বেশি সঠিক হবে। 

জানতে চাইলে এ ধারণা প্রতিবেদনের লেখক এবং বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূস সমকালকে বলেন, তাদের জরিপটা খানা আয় ও ব্যয়ের মতো নয়। তারা পাঁচটি জেলায় একটি ধারণা জরিপ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, সার্বিকভাবে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মূলত ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য কতটা বাড়ল কিংবা কমলো, তা পর্যালোচনা করেছেন তারা। এতে দেখা গেছে, আগের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যের হার বেশি। বিশেষ করে রাজধানীতে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। এ জন্য তিনি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওপর চাপের অভিঘাতকে দায়ী করেন। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দুইবার বিশ্বকাপ জিতলেই জাতীয় দল থেকে অবসর নেব’
  • ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর ও দুর্নীতির মামলায় জি কে শামীমের সাড়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড
  • ছুটি ছাড়াই বিদেশে অবস্থান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে অব্যাহতি
  • বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার চেয়ে বেশি টাকা পাবে ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন
  • জি কে শামীমের দুর্নীতি মামলায় রায় আজ
  • চবির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি 
  • মায়ের আক্ষেপ ‘সবার বাবা আছে, ওদের নেই’
  • আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউটে নার্সিং কোর্স, বিনা মূল্যে থাকা-খাবার
  • বেড়েছে দারিদ্র্যের হার কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা