আত্মগোপনে থাকা সিরাজগঞ্জ জেলা আ.লীগ নেতার মৃত্যু
Published: 5th, May 2025 GMT
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দানিউল হক মোল্লা দানী (৬০) মারা গেছেন। সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
দানিউল হক মোল্লার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা.
মারা যাওয়া দানিউল হক মোল্লা সিরাজগঞ্জ পৌরসভার দিয়ারধানগড়া মহল্লার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
আরো পড়ুন:
রূপগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণ: দগ্ধ ২ নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু
কচি ঘাস খেয়ে ৩ গাভির মৃত্যু, নমুনা সংগ্রহ
স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন ঢাকার একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন দানিউল হক মোল্লা। আজ সকালে রক্তে সুগার জিরো হয়ে গেলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। এশার নামাজের পরে দিয়ারধানগড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে মালসাপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় ‘ট্রাম্প স্টাইল’ প্রত্যাখ্যান
ধন্যবাদ ডোনাল্ড ট্রাম্প। অস্ট্রেলিয়ানরা বড় বড় কথা বলার চেয়ে বরং তাদের পরিচয় ঠিকভাবে তুলে ধরতেই সিদ্ধহস্ত। কাজটি তারা করছেন তারা কী নন, তা তুলে ধরার মাধ্যমে। অস্ট্রেলিয়ানরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলে দিয়েছেন, তারা ক্রুদ্ধ খুদে আমেরিকান নন। সাংস্কৃতিক যোদ্ধা বা স্বার্থপর স্বাধীনতাবাদীও নন।
আমরা সবসময় জানতাম, এই জাতির মধ্যে মজ্জাগতভাবে এক ধরনের শালীনতা রয়েছে। কিন্তু তা তখনই ফুটে উঠল যখন তাদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্ত্যক্ত করছেন। তিনি লোক দেখানো বীরত্ব প্রদর্শন করছেন। প্রথমে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ বাতিল করেন। তারপর তা আরও নিশ্চিত হয় যখন লাখ লাখ ভোটকেন্দ্রে কার্ডবোর্ডের ঘেরাটোপে গোপনীয়তার মধ্যে তারা তাদের রায় দেন।
এমনকি যে প্রধানমন্ত্রীকে ২০২২ সালে তাঁর প্রথম বিজয়ী ভাষণে অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ দেশের মতো’ ক্লিশে বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসতে সংগ্রাম করতে হয়েছিল, সেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের রাতে এ দেশ কী কী কারণে অনন্য ও সম্ভাবনায় পূর্ণ– সহজেই তুলে ধরেছেন। অনুশীলন ও আত্মবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি আরও শক্তিশালী হবেন। এমনকি তা রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের মধ্যে ফুটে উঠতে পারে; স্রেফ ফাঁপা বুলি হয়ে থাকবে না।
সংস্কৃতি প্রায় সবসময় রাজনীতির আগে থাকে। এর লক্ষণগুলো বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে। ২০০৫ সালে স্যাম কেকোভিচ নিরামিষভোজী, হিপ্পি বা অপ্রচলিত ধারায় জীবন যাপনকারীসহ সব ধরনের ভিন্নমতাবলম্বীদের নিন্দা করার পর নন-অস্ট্রেলীয় হওয়ার ধারণাটি আলোচনায় ঝড় তুলেছিল। প্রায় দুই দশক পর তা প্রত্যাখ্যাত হয়। ২০২৩ সালে বৈচিত্র্য আলিঙ্গন করে আইকনিক অস্ট্রেলিয়া দিবসে ভেড়ার মাংসের বিজ্ঞাপনটি উল্টে যায়। ‘অনুমান করুন আমরা সবাই কিছুটা নন-অস্ট্রেলীয়, এটাই আমাদের অস্ট্রেলীয় করে তোলে।’
ওটা ছিল শুরু। যখন অস্ট্রেলিয়ান নেতারা বুঝতে পারেন, উদ্ভাবনকে ভয় না পেয়ে সাহস ও সমবেদনার সঙ্গে হাতে যা আছে তার মধ্যে সর্বোৎকৃষ্টটি গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করলেই অসাধারণ কিছু ঘটতে পারে। এটি আগেও ঘটেছে। এটি ঠিক যে, সাধারণত দুই ধাপ এগিয়ে এক ধাপ পিছিয়ে যাওয়ার নৃত্যেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই ধাপ একই সঙ্গে এগিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করে। এটা আশ্চর্যজনক ছিল, কোষাধ্যক্ষ জিম চালমার্স তাঁর দলের বিজয়কে ফেডারেশনের পর সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। ফেডারেশন সম্পর্কে আর কে কথা বলেন? কিন্তু এটি ছিল অসাধারণ। প্রতিটি উপনিবেশে এক দশক বিতর্ক এবং দু’বার ভোটের দরকার হওয়া এবং তারপর লন্ডনে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। এরই মধ্য দিয়ে এমন এক জাতি গঠিত হয়েছিল, যা পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য গণতান্ত্রিক ও সামাজিক উদ্ভাবনের একটি বিশ্বব্যাপী মডেল ছিল।
আমরা ঠিকই মনোযোগ দিই। আর তা খুব অস্ট্রেলিয়ান পন্থায়। সেটা হতে পারে নেতিবাচক দিকগুলোর ওপর; শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়া নীতির কঠোরতার ওপর; দক্ষিণ সমুদ্র দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক নির্বাসনের ওপর; প্রথম জনগণের বর্জন ও নির্মূলের চেষ্টার ওপর। কিন্তু বাকি বিশ্ব উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক সাফল্য এবং একটি সহানুভূতিশীল মনের মিশ্রণে অস্ট্রেলিয়ান মডেলের জন্ম দেখেছিল। অস্ট্রেলিয়ানরা শিক্ষিত, ইতিবাচক ছিল এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ জীবনযাত্রার মান উপভোগ করেছিল। তাদের ছিল অজস্র সম্ভাবনা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা এবং মহামন্দার সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকার কারণে এ আত্মবিশ্বাস কমে গিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই পুনর্গঠন পরিকল্পনা তৈরি করা হয় এবং পূর্ববর্তী দশকগুলোর শিক্ষা বাস্তবায়ন করা হয়।
আশির দশকে যখন পুরাতন আমদানিবিরোধী বা সুরক্ষাবাদী অর্থনৈতিক মডেল ভেতর থেকে ভেঙে পড়ে; অস্ট্রেলিয়া আবারও মানবিক মুখসমৃদ্ধ নিউ লিবারালিজম মডেল নিয়ে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়। এটি নিখুঁত ছিল না, তবে বিশ্বজুড়ে তা অনুকরণ করা হয়েছিল এবং তৎকালে ‘তৃতীয় উপায়’ হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। বাজারের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হস্তগত করে সবকিছু বেসরকারীকরণের চেয়ে এটি অনেক ভালো ছিল। তারপর বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটে অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকরা সাড়া দিতে প্রস্তুত ছিলেন। তারা অন্য বহু দেশে ঘটে যাওয়া বিপর্যয় রোধে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। এসব মডেল আত্মবিশ্বাস জোগায়– এ ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান উপায় আছে, যা অস্তিত্বগত সংকটের মুখেও উদ্ভাবনকে সম্ভব করে তোলে। বৃহৎ পরাশক্তিগুলো কী করছে, তার ওপর অযথা নির্ভরশীল হওয়ার দরকার হবে না।
আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে। তার ভিত্তি
স্থাপন ও ভবিষ্যৎ আমাদেরই নির্মাণ করতে হবে। নতুন জাতি সম্পর্কে ফেডারেশনের বিতর্কে অংশগ্রহণকারী রোজ স্কট বিচক্ষণতার সঙ্গে বলেছিলেন: ‘সাহসী হও, সাহসী হও, সাহসী হও। সংস্কার কঠিন, কিন্তু তা মূল্যহীন নয়।’
জুলিয়ান শুলজ: ‘দি আইডিয়া অব
অস্ট্রেলিয়া’ বইয়ের লেখক; দ্য
গার্ডিয়ান থেকে ভাষান্তরিত