রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি, ২০২২ সালের এইচএসসি পাসেও আবেদন
Published: 11th, May 2025 GMT
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং ও কৃষি কলেজ/ইনস্টিটিউটগুলোর বিভিন্ন বিভাগে ১ম বর্ষ স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি আবেদনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদনকারীকে অধিভুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটে যোগাযোগপূর্বক কিছু নিয়ম মেনে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। গত ১ মে দুপুর ১২টা থেকে আবেদন শুরু হয়েছে।
আবেদনপ্রক্রিয়া/পদ্ধতি—রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুসরণে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার/প্রচারণা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে আইসিটি সেন্টার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে ভর্তির আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
আবেদন ফি জমা প্রক্রিয়া: ভর্তির আবেদন ফি বাবদ মোট ৩৩০/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ) অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। ফি বাবদ আদায়কৃত অর্থ থেকে আইসিটি সেন্টার, রা.
*২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে অধিভুক্ত কলেজসমূহের জন্য ২০২২ ও তৎপরবর্তী বছরের এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
*পরীক্ষার্থীকে পদার্থ, রসায়ন ও গণিত/জীববিজ্ঞান বিষয়সহ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে হবে।
*এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ৪র্থ বিষয়সহ কমপক্ষে জিপিএ ৩.০০ সহ সর্বমোট জিপিএ ৬.৫০ থাকতে হবে।
*ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং/কৃষি/ফিশারিজ/ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স/হেলথ (আইএইচটি ম্যাটস)/নার্সিং হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ স্কেলকে ৫ স্কেলে রূপান্তর করে উপরোক্ত যোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে। ডিপ্লোমা পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ স্কেলে ২.৫ এর কম হলে আবেদন করতে পারবে না।
*২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি/সমমান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবে।
অতিরিক্ত প্রার্থীর ক্ষেত্রে—আবেদনকারীর সংখ্যা নির্ধারিত আসনের অধিক হলে, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধিকর্তার তত্ত্বাবধানে কলেজ/ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদিত আসনে শিক্ষার্থী মনোনয়ন করবেন।
আবেদনের সময়সীমা—আগামী ৩০ জুন ২০২৫ রাত ১২.০০টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী প্রার্থীরা।
আরও পড়ুনকম খরচ এবং সহজে ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় বেছে নিতে পারেন এই ৫ দেশ০৮ মে ২০২৫আরও পড়ুনজাপানের স্টাডি সাপোর্ট স্কলারশিপ, ইংরেজি ও জাপানিজ দুই ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন০৮ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ য ভর ত র ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন শাহরিয়ার অন্নব রিউশা (১৭)। পরিবার ও স্বজনদের কাছে, মেধাবী, বিনয়ী ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত রাউশা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডের এ প্লাস পান। সবশেষ তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর আগে অংশ নেন আরো তিনিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়।
রবিবার (১১ মে) সকাল ৬টার দিকে রাউশার আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে। পরিবার ও স্বজনদের দাবি, চারটি বিশ্বিবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন রাউশা। ভর্তির কোথাও সুযোগ পাননি তিনি। যে কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তাদের ধারণা, এ কারণে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিতে পারেন রাউশা। তবে, এ ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই।
রাউশার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সিংদাহ গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সোহেল রানার ছেলে।
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে সাপের কামড়ে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
বাঁকখালী নদীতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাউশার স্বজন ও পরিবার জানান, রাউশা খুবই মেধাবী ছিল। কুষ্টিয়া এডুকেয়ার স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এরপর তিনি ঢাকার রামপুরা এলাকায় খালার বাড়িতে যান। ঢাকা কলেজ থেকে ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। দুই পরীক্ষায় তিনি গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলেন। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য তিনি প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে পরীক্ষা দেন। এরপর ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ২৭ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন রাউশা।
তারা জানান, গত শুক্রবার (৯ মে) ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন রিউশা। শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাউশার মা মুক্তা খাতুন তার বাবার বাড়িতে ছেলের কাপড় আনতে যান। রাত সোয়া ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে তিনি রিউশাকে দেখতে পাননি। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। আজ সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরের একটি পুকুরে পোড়া ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাউশার মরদেহ পান স্বজনরা।
রিউশার আইনজীবী খালা রত্না খাতুন বলেন, “রিউশা খুব মেধাবী, বিনয়ী ও ভদ্র ছেলে ছিল। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েও ভর্তি হতে পারেনি। এরপর সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আমরা ওকে সাহস দিতাম। তবুও শেষ রক্ষা হলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেয়েই হয়তো শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।”
রিউশার মা মুক্তা খাতুন ছেলের শোকে বিলাপ করছিলেন। তিনি বলছিলেন, “আমার বাবা কোনে থাকবিনি রে। ক্যাম্বা থাকবিনি। আমার বাবার থুয়ে ক্যাম্বা শোবনগো।”
তিনি বলেন, “রাতে বাবার বাড়িতে রিউশার জামাকাপড় আনতে যাই। রাত সোয়া ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখি ছেলে নেই। সারা রাত সব জায়গায় খুঁজেও ওকে পাইনি। সকালে দেখি, পুকুরে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছে। সারা শরীর পুড়া। রাজশাহীতেও চান্স না পেয়ে খুবই ভেঙে পড়েছিল ও। কিভাবে কি হল তা জানি না।”
রাউশার চাচা ইকবাল বিশ্বাস বলেন, “বাগানে থাকা পরিত্যাক্ত টিনশেড ঘর ও পুকুরপাড়ে আগুনের ছাই এবং প্যান্টের পোড়া অংশবিশেষ পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।”
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান হোসেন বলেন, “আগুনে পোড়া এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ