জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মধ্যে বিষাক্ত পোকা (চ্যালাপোকা) পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১২ মে) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ আহমেদ ও তার বন্ধুরা ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খেতে গিয়ে সিঙ্গারার মধ্যে বড় আকারের পোকা (চ্যালাপোকা) দেখতে পান।  

সোহাগ আহমেদ বলেন, “বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাফেটেরিয়ার উপ-পরিচালক মোঃ সারোয়ার হোসেনকে অবহিত করা হলে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে মাত্র ২/১টি সাধারণ কথা বলেই বিষয়টি শেষ করে দেন। ক্যাফেটেরিয়ায় অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বেগজনক।”

আরো পড়ুন:

৪০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিল জাবি শাখা ছাত্রশিবির

জাবিতে বিনামূল্যে ছাত্রদলের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম  

এ বিষয়ে ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে থাকা মো.

সরোয়ার আলম বলেন, “আজ ক্যাফেটেরিয়ায় সিঙ্গারার ভেতরে চ্যালাপোকা পাওয়ায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে যারা রান্না করেছে, তাদের জিজ্ঞেস করেছি। সিঙ্গারার ভেতরে কিভাবে পোকা এল, এর সঠিক ব্যাখ্যা তারা দিতে পারেননি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে আমি তাদের নির্দেশ দিয়েছি।”

ক্যাফেটেরিয়ার কিচেন অপরিচ্ছন্নতার বিষয়ে তিনি বলেন, “কিচেনে টাইলস ব্যবহার করার জন্য একাধিকবার আমি বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কত শত বাজেট আসে, কিন্তু কিচেনের পরিচ্ছন্নতার বৃদ্ধির জন্য টাইলসের বাজেট আসে না।”

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খাবারে পোকা পাওয়ার ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করলে ক্যান্টিনের খাবারের দাম ও মান এবং রান্নাঘরের অপরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগের ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমেদ রেজার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ