ভুটান প্রিমিয়ার লিগ মাত্রই শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই ঢাকায় ফিরে এসেছেন পাঁচ নারী ফুটবলার। আজ সকালে ঢাকায় পৌঁছে তাঁরা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন—ঋতুপর্ণা চাকমা, রুপণা চাকমা, শামসুন্নাহার (সিনিয়র), মনিকা চাকমা ও মারিয়া মান্দা।

বাফুফের আমন্ত্রণে তাঁরা ভুটানের ক্লাবগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। আগামীকাল থেকে পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন শুরু করবেন তাঁরা।

ঋতুপর্ণা চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকায় ফিরে ভালো লাগছে। দেশের হয়ে অনেক দিন খেলিনি। জাতীয় দলে আবার সুযোগ পেলে খেলব। মনের ভেতর একটা ভালোলাগা কাজ করছে, উৎফুল্ল লাগছে। যদি মূল স্কোয়াডে রাখা হয়, তাহলে ম্যাচ খেলে আমি আর মনিকা ৭ তারিখে আবার ভুটানে ফিরে যাব।’

বর্তমানে ভুটানের নারী লিগে খেলছেন বাংলাদেশের ১০ ফুটবলার। তাঁদের মধ্যে ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন এই পাঁচজন। বাকি পাঁচজন—সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, সানজিদা আক্তার, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও কৃষ্ণা রানী সরকারকে ডাকা হয়নি।
আগামী জুনে মিয়ানমারে অনুষ্ঠেয় নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব সামনে রেখে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নারী দল ২৭ মে জর্ডানে যাবে একটি ত্রিদেশীয় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে। জর্ডান সফরের জন্য দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

বাফুফের চিঠি পাওয়ার পর ভুটানের তিনটি ক্লাব—ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড, পারো এফসি ও থিম্পু এফসি—তাঁদের সঙ্গে চুক্তিতে থাকা পাঁচ ফুটবলারকে ছাড়পত্র দিয়েছে। রুপণা খেলেছেন ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডে, ঋতুপর্ণা ও মনিকা পারোতে, মারিয়া ও শামসুন্নাহার থিম্পু ক্লাবের হয়ে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি নারী দলের ১৮ ফুটবলার সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় দলের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং অনুশীলন বর্জন করেন। কোচের বিরুদ্ধে হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বাফুফে সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দেন। ওই ঘটনায় সামনের সারিতে ছিলেন দুইবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার ও সুমাইয়া।

বিদ্রোহের কারণে তাঁরা মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের দলেও ছিলেন না। সেই সফরে সিনিয়রহীন বাংলাদেশ দল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হেরেছিল। পরবর্তী সময়ে বাফুফে কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় খেলোয়াড় ও কোচের মধ্যে একাধিক দফা বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতা হয়। উভয় পক্ষ অতীত ভুলে সামনে এগোনোর কথা বলে। তবে বাটলার এবার দল গঠনের প্রক্রিয়ায় কিছু সিনিয়র ফুটবলারকে বিবেচনার বাইরে রেখেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের বিক্ষোভ, বিএনপি কার্যালয়ে আগুন

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন দেয় বলে অভিযোগ কমিটির একাংশের। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,  কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা কান্দিরপাড়ে মিছিল বের করে। পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ‘অবৈধ কমিটি মানি না, মানবো না; জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো; অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রনেতারা। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, বিগত ১৭ বছরে যারা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাহিদ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক ওই দুটি কমিটি করা হয়। ওই রাতেই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এবং নগরীর কান্দিরপাড়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা পূবালী চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। তারা সদ্যঘোষিত কমিটির বিলুপ্তির দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করে। 

কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এরই মাঝে পদপ্রাপ্ত এবং পদবঞ্চিতদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে বিএনপি কার্যালয়ে কারা আগুন দিয়েছে তা আমার জানা নেই। 

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সম্প্রতি আমরা এ অফিস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ভেতরে কারা আগুন দিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারিনি।
 
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারপরও বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে- তা জানা যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ